• পাকিস্তান-নিউজিল্যান্ড সিরিজ
  • " />

     

    পেস ছেড়ে স্পিন, সেই স্পিনেই সেরা

    পেস ছেড়ে স্পিন, সেই স্পিনেই সেরা    

    প্রেজেন্টেশনে রমিজ রাজার প্রথম প্রশ্ন, “ইংলিশ অর হিন্দি?” 

    অভিষেকেই আজাজ প্যাটেল ম্যাচসেরা, ভারতে জন্ম নেওয়া পঞ্চম ক্রিকেটার হিসেবে নিউজিল্যান্ডের হয়ে টেস্ট খেললেন তিনি। আট বছর বয়সে বাবা-মায়ের সঙ্গে ভারতের মুম্বাই (তখনকার বোম্বে) ছেড়ে নিউজিল্যান্ড গিয়েছিলেন আজাজ, ইংরেজিতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। হিন্দি হয়তো বুঝতে পারেন, বলতেও পারেন। আজাজ ইংরেজিকেই বাছলেন। যেমন ২১ বছর বয়সে এক ম্যাচের মাঝপথে পেস ছেড়ে স্পিনকে বেছেছিলেন। এই ত্রিশ বছর বয়সে এসে টেস্ট অভিষেকের পেছনে তো অবদান ওই স্পিন বোলিংয়েরই! 

    বাঁহাতে পেসটা মন্দ করতেন না, অকল্যান্ড অনূর্ধ্ব-১৯ ও নিউ লিন ক্লাবের হয়ে খেলতেন তখন। তবে বুঝে গেলেন, এ উচ্চতা নিয়ে বেশিদূর যেতে পারবেন না পেস বোলিংয়ে, “৫ ফুট ৬ ইঞ্চি পেস বোলিংয়ে পরের ধাপে যাওয়ার জন্য ঠিক সুবিধার না”, টেস্ট দলে ডাক পেয়ে স্টাফডটকোডটএনজে-কে বলেছিলেন আজাজ। এক ম্যাচের মাঝখানেই তাই পেস থেকে সরে গেলেন স্পিনে। শুরু হলো নতুন সংগ্রাম। 

    সুযোগের খোঁজে অকল্যান্ড ছেড়ে গেলেন নেপিয়ার, সেন্ট্রাল স্ট্যাগসের হয়ে খেলতে। টানা তিন মৌসুম নিউজিল্যান্ডের ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির টুর্নামেন্ট প্লাঙ্কেট শিল্ডে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি ছিলেন, আরব আমিরাত সফরে স্কোয়াডে সুযোগ পেয়ে গেলেন মিচেল স্যান্টনারের চোটে। 

     

     

    নিজের ওপর বিশ্বাসটা সবসময়ই ছিল আজাজের। বিশ্বাস ছিল আবুধাবির এই ম্যাচেও, যেখানে প্রায় হেরেই বসেছিল নিউজিল্যান্ড। ৪০ রানে প্রথম ব্রেকথ্রুটা এনেছিলেন তিনিই, ইমাম-উল-হক টার্ন করে ঢোকা বলে হয়েছেন এলবিডব্লিউ। 

    “আমার পরিকল্পনা সহজই ছিল, তবে স্কোরবোর্ড তো দেখাচ্ছিল ভিন্ন কিছু। তবে আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি ছিল না আমাদের, একটা দল হিসেবে আমাদের বিশ্বাস ছিল আমরা স্পেশাল কিছু করতে পারবো। আমরা এটা সহজ করেই রেখেছি, কাজ করেছি সেভাবে, সবকিছু হয়েছে আমাদের মতো করেই”, ম্যাচসেরা হওয়ার পর বলেছেন আজাজ। 

    প্রথম ইনিংসে নিয়েছিলেন দুই উইকেট। এদিন সকালেও ডাক পড়েছিল তার, পাকিস্তানের প্রথম ৩ উইকেটের দুইটি নিয়ে সে ডাকে ভালভাবে সাড়াও দিলেন। তবে আজহার-শফিকের জুটিতে ছিটকে যাচ্ছিল নিউজিল্যান্ড। শফিককে ফিরিয়ে কাজটা এগিয়ে রাখলেন নেইল ওয়াগনার। আরেকদিক থেকে নিখুঁত লাইন-লেংথে চাপটা আরও বেশি করে দিতে থাকলেন আজাজ। 

    “আমি শুধু ঠিক জায়গাটা খুঁজছিলাম। উইকেট থেকে সুবিধাটা আদায় করতে চাইছিলাম। সবসময় আপনি এমন উইকেট পাবেন না, শেষ ইনিংসে সুযোগটা দারুণ ছিল দেশের হয়ে টেস্ট জেতার জন্য। এটা অনেক বড় একটা স্বপ্নপূরণ।” 

    ত্রিশ-পেরুনো বয়সে স্বপ্নটা পূরণ হলো আজাজের। এখন বলাই যায়, সেদিন পেস ছেড়ে স্পিন ধরার পর আর পিছু ফিরে তাকাননি আজাজ!