• ভারত-নিউজিল্যান্ড সিরিজ
  • " />

     

    রুদ্ধশ্বাস জয়ে ভারতকে অন্যরকম ইতিহাসের স্বাদ দিল নিউজিল্যান্ড

    রুদ্ধশ্বাস জয়ে ভারতকে অন্যরকম ইতিহাসের স্বাদ দিল নিউজিল্যান্ড    

    নিউজিল্যান্ড ২০ ওভারে ২১২/৪ (মানরো ৭২, সেইফের্ট ৪৩, গ্র্যান্ডোম ৩০; কুলদীপ ২/২৬)

    ভারত ২০ ওভারে ২০৮/৬ (বিজয়শঙ্কর ৪৩, রোহিত ৩৮, কার্তিক ৩৩*; মিচেল ২/২৭, স্যান্টনার ২/৩২)

    ফলঃ নিউজিল্যান্ড ৪ রানে জয়ী


    ওই সিঙ্গেল না নেওয়াটাই কি কাল হলো দীনেশ কার্তিকের?

    শেষ ওভারে জয়ের জন্য ভারতের দরকার ১৬ রান। আগের দুই ওভার থেকে এসেছিল ৩২ রান, কার্তিক আর ক্রুনাল পান্ডিয়া যেভাবে খেলছিলেন, কাজটা মনে হচ্ছিল খুবই সম্ভব। টিম সাউদির প্রথম বলে ডাবল নিলেন কার্তিক, পরের বলে কোনো রান হলো না। ৪ বলে দরকার ১৪, কিন্তু পরের বলটা লং অনে ঠেলে দিয়েও কোনো রান নিলেন না কার্তিক। জুয়াটা কাজে আসল না, পরের বলেও হলো না রান। ম্যাচটা আসলে শেষ হয়ে গেল ওখানেই, শেষ বলে ছয় মেরে শুধু ব্যবধানটাই কমাতে পারলেন কার্তিক। ৪ রানে জিতে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতল নিউজিল্যান্ড। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, এই প্রথম বার কোনো তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারল ভারত।

    অথচ ২১৩ রানের লক্ষ্য একদমই কঠিন মনে হচ্ছিল না। হ্যামিল্টনের মাঠ তো একে অনেক ছোট, তার ওপর বল ব্যাটে আসছিল দারুণভাবে। ভারতের শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি, প্রথম ওভারেই ধাওয়ানকে ফিরিয়ে দেন মিচেল স্যান্টনার। কিছুটা স্লথ শুরুর পর ভারতের হয়ে রান রেট বাড়ানোর দায়িত্ব নিলেন বিজয় শঙ্কর। সোধির বলে পর পর দুই ছয় ৮ ওভারে ভারতকে নিয়ে গেলেন সত্তরে। ফিফটিটা যখন সময়ের ব্যাপার মনে হচ্ছিল, ২৮ বলে ৪৩ রান করে স্যান্টনারের বলে ক্যাচ দিলেন শঙ্কর। ঋশভ পান্ট এলেন, মুখোমুখি প্রথম দুই বলেই চার ছয় মেরে পৌঁছে গেলেন দুই অঙ্কে।

    সোধির পরের ওভারে আরও দুই ছয় পান্টের, ১০ ওভারে ভারত পৌঁছে গেল ১০৮ রানে। পরের দুই ওভারে কোনো বাউন্ডারি হলো না। চাপটাই কাল হলো, টিকনারের বলটা মারতে গিয়ে পান্ট আউট ১২ বলে ২৮ রান করে। তবে হার্দিক পান্ডিয়াও এসেই হাত খুলে খেলতে শুরু করলেন, দেখতে দেখতে পৌঁছে গেলেন দুই অঙ্কে। অধিনায়ক রোহিত অনেকটাই দর্শক,  মিচেলের অফ স্টাম্পের বাইরের বল তাড়া করতে গিয়ে কিপারকে ক্যাচ দিয়ে শেষ হলো ৩২ বলে ৩৮ রানের হতাশাজনক ইনিংস।

    পান্ডিয়াও ২৩ রান করে আউট, ধোনি ফিরলেন ২ রানে। ম্যাচ যখন কিউইদের মুঠোয় আসতে যাচ্ছে, ভারতকে আবার জাগিয়ে তুললেন দীনেশ আর ক্রুনাল। শেষ ৪ ওভারে ৫৯ থেকে সমীকরণটা নামিয়ে এলেন শেষ ওভারে ১৬ তে। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। কার্তিকের ১৬ বলে ৩৩, আর ক্রুনালের ১৩ বলে ২৩ রানের দুইটি ইনিংসই গেল বিফলে।

    তার আগে নিউজিল্যান্ডের হয়ে বড় স্কোরের ভিত এনে দিয়েছেন দুই ওপেনার টিম সেইফের্ট আর কলিন মানরো। সেইফের্ট আজ আরও একবার দেখিয়েছেন, কেন তাঁকে ম্যাককালামের যোগ্য উত্তরসূরি মনে করা হচ্ছে। ৬ ওভারে নিউজিল্যান্ড যখন ৬৬ তুলে ফেলেছে সেইফের্টের রান ২০ বলে ৩৬ আর মানরোর ১৬ বলে ২৯। তবে ফিফটিটা হলো না, ২৫ বলে ৪৩ রান করে সেইফের্ট স্টাম্পড কুলদীপ যাদবের বলে।

    মানরো অবশ্য তাঁর মতোই বিধ্বংসী ছিলেন, পান্ডিয়াকে ছয় মেরে ২৮ বলে পেলেন ফিফটি। ভারতের ফিল্ডাররাও এরপর সাহায্য করেছেন তাকে, ৬০ রানে মানরোর সহজ ক্যাচ ফেলে দিলেন খলিল।  ওই ওভারেই ছয়-চার মেরে মানরো পৌঁছলেন সত্তরে। তবে পরের ওভারে সেই পান্ডিয়াকেই ক্যাচ দিলেন কুলদীপের বলে, ৪০ বলে ৭২ রানে থামলেন।

    উইলিয়ামসন ২১ বলে ২৭ রান করে আউট হলেন। তবে নিউজিল্যাণ্ডকে ২০০ পার করার মূল কৃতিত্ব মূলত ডি গ্র্যান্ডোমের। ১৬ বলে ৩০ রান করেছেন ডি গ্র্যান্ডোম। শেষ দিকে মিচেলের ১১ বলে ১৯ ও টেলরের ৭ বলে ১৪ রানের ইনিংসে সেই রান হয়েছে ২১২। দিন শেষে সেটিই যথেষ্ট হয়ে গেছে জয়ের জন্য।