সেইফার্ট-সাউদিতে বিধ্বস্ত ভারত
প্রথম টি-টোয়েন্টি, ওয়েলিংটন
নিউজিল্যান্ড ২১৯/৬, ২০ ওভার
ভারত ১৩৯ অল-আউট, ১৯.২ ওভার
নিউজিল্যান্ড ৮০ রানে জয়ী
টিম সেইফার্টের ৪৩ বলে ৮৪ রানের ঝড়ের পর টিম সাউদির দারুণ বোলিং, সঙ্গে দুই স্পিনারের জোড়া আঘাতের দুই ওভারে ওয়েলিংটনে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ভারতকে রেকর্ড ৮০ রানের ব্যবধানে হারিয়েছে নিউজিল্যান্ড। ২২০ রানের লক্ষ্যে ভারত আটকে ১৩৯ রানেই, দুই দলের মধ্যে টি-টোয়েন্টিতে রানের হিসেবে এতো বড় জয় এটাই প্রথম।
ওয়ানডে সিরিজ জেতা ভারত ছিল উজ্জীবিত। কুলদীপ যাদবের বদলে নামানো হয়েছিল অলরাউন্ডার ক্রুনাল পান্ডিয়াকে। সব মিলিয়ে ভারত দলে ছিলেন স্বীকৃত তিন অলরাউন্ডার, সঙ্গে তিন উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান। তবে ব্যাটিং লাইন-আপ দীর্ঘ করেও লাভ হয়নি তাদের। সাউদি-স্যান্টনারে ভেঙে পড়েছে সে ব্যাটিং, তার আগে সেইফার্টের ঝড় আটকাতে পারেনি ভারতের বোলিং।
টসে জিতে বোলিং নিয়েছিল ভারত, শীঘ্রই রোহিত শর্মার সে সিদ্ধান্তকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন নিউজিল্যান্ডের দুই ওপেনার- কলিন মানরো ও সেইফার্ট। এর আগে ৭ ইনিংসে সেইফার্টের রান ছিল ৪২, সর্বোচ্চ অপরাজিত ১৪। প্রমোশন দিয়ে তাকে আজ পাঠানো হলো ওপেনিংয়ে। প্রথম ওভারটা ঠিকঠাকই ছিল ভুবনেশ্বরের, দ্বিতীয় ওভারের খলিল আহমেদকে দুই চার মেরে ঝড়ের শুরুটা করেছেন মানরো।
পাওয়ারপ্লের ছয় ওভারেই উঠেছে ৬৬ রান, ৯ম ওভারে ভারত পেয়েছে প্রথম ব্রেকথ্রু। ক্রুনালের বলে লং-অনে ধরা পড়েছেন মানরো, ২০ বলে দুইটি করে চার ও ছয়ে ৩৭ রান করে। সেইফার্ট ঠিক আগের বলেই পূর্ণ করেছেন ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি, ৩০ বলে। ক্রুনালকে পরপর দুই ছয়ের পর চাহালকে চার-ছয় মেরে সেঞ্চুরিটাকে দৃষ্টিসীমায় এনেছিলেন, তবে খলিলের ব্লকহোলের বলে হয়েছেন বোল্ড। ইনিংসে ৭ চারের সঙ্গে সেইফার্ট মেরেছেন ৬ ছয়। সুইচ হিটে চার মেরেছেন, খেলেছেন রিভার্স-স্কুপ, ব্যতিব্যস্ত রেখেছিলেন ভারতীয় বোলারদের। তার ইনিংসে অবশ্য অবদান আছে ভারতের পিচ্ছিল ফিল্ডিংয়েরও, ১৭ রানে তার ক্যাচটা রাখতে পারেননি ধোনি, কঠিন সুযোগ হলেও ধোনির তুলনায় সেটা মিসই ছিল। ৭৩ রানে তিনি আরেকবার জীবন পেয়েছেন কার্তিকের হাতে।
উইলিয়ামসনের সঙ্গে সেইফার্ট-এর জুটি ছিল ৪৮ রানের, এরপর ড্যারিল মিচেলের সঙ্গে উইলিয়ামসনের জুটিতে এসেছে ৩০ রান। হারদিক পান্ডিয়াকে পরপর দুই ছয়ে নিউজিল্যান্ডের উড়ানটা ধরে রেখেছিলেন উইলিয়ামসন। পরপর দুই বলে পান্ডিয়া ও চাহালের বলে যথাক্রমে ফিরেছেন মিচেল ও উইলিয়ামসন। এর মাঝে মিচেলের ক্যাচটি দারুণভাবে লং-অনের সীমানায় নিয়েছেন কার্তিক, মোমেন্টাম সামলে।
১৪ বলে ২৩ রান করে টেইলর, ৪ বলে ৩ রান করে ফিরেছিলেন কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম। তবে শেষদিকে স্কট কুগিলাইনের ৭ বলে ২০ রানের ক্যামিওতে ২১৯ পর্যন্ত গিয়েছিল নিউজিল্যান্ড।
ভারতের দরকার ছিল ঝড়ো শুরুর, তবে সাউদির প্রথম দুই ভারত তুলতে পেরেছিল মাত্র ২ রান। কুগিলাইনের ওভারে ছয়-ছয়-চারে উঠেছিল ১৮ রান। তবে রোহিতকে ফিরিয়ে চাপটা বাড়িয়েছিলেন এরপর সাউদি। ধাওয়ান-বিজয় শঙ্করের জুটি চেষ্টা করেছে, বিপত্তি ঘটেছে ধাওয়ানের উইকেটে, ফার্গুসনের বলে তিনি হয়েছেন বোল্ড।
এরপর এসেছেন দুই স্পিনার। প্রথমে স্যান্টনার করেছেন জোড়া আঘাত- ঋশাভ পান্টের পর ফিরেছেন শঙ্কর। ইশ সোধির এক ওভারে ফিরেছেন হারদিক পান্ডিয়া ও দীনেশ কার্তিক। ১১ ওভারে ৭৭ রান ৬ উইকেট- ভারত ম্যাচ থেকে ছিটকে গেছে তখনোই।
এমএস ধোনির ৩১ বলে ৩৯ বা ক্রুনালের ১৮ বলে ২০ রানের ইনিংস ব্যাবধানটাও রেকর্ডের নিচে কমাতে পারেনি। ব্যাটিংয়ে দারুণ দিন কাটানো সেইফার্ট কিপিংয়েও নিয়েছেন দারুণ দুইটি ক্যাচ। আর ৪ ওভারে ১৭ রানে ৩ উইকেট নিয়ে বোলিং শেষ করেছেন সাউদি। সঙ্গে শেষ হয়েছে ভারতও।