• চ্যাম্পিয়নস লিগ
  • " />

     

    'ডাবল' জিতেই রোবেন-রিবেরিকে বিদায় জানাল বায়ার্ন

    'ডাবল' জিতেই রোবেন-রিবেরিকে বিদায় জানাল বায়ার্ন    

    গত সপ্তাহে বুন্দেসলিগায় নিজেদের শেষ ম্যাচে গোল পেয়েছিলেন দুজনই। টানা ৭ম জার্মান লিগ ঘরে তুলে আলিয়াঞ্জ অ্যারেনা এবং বুন্দেসলিগাকে বিদায় জানিয়েছিলেন আরিয়েন রোবেন এবং ফ্রাঙ্ক রিবেরি। আজ শেষবারের মত বায়ার্নের জার্সিতে মাঠে নেমেছিলেন ‘রোবারি’, বদলি হয়েই নেমেছিলেন তারা। ম্যাচের একদম শেষদিকে রিবেরির পাসে গোলরক্ষককে একা পেয়েও শট নেননি রোবেন, ফুটবলবিশ্ব তাই শেষবারের মত দেখতে পারল না ‘রোবারি’ জুটির নৈপুণ্য। কিন্তু তাতে অবশ্য জার্মান কাপ ঘরে তুলতে সমস্যা হয়নি বায়ার্ন মিউনিখের, আগেই কাজটা সেরে রেখেছিলেন রবার্ট লেভানডফস্কি। পোলিশ স্ট্রাইকারের জোড়া গোলে আরবি লাইপজিগকে ৩-০ গোলে হারিয়ে ৪ বছর পর জার্মান কাপ জিতল বায়ার্ন। শেষ দুই ম্যাচে শিরোপা জিতে ‘ডাবল’ নিয়েই বিদায় নিলেন রোবেন-রিবেরি।

    ২০১৮-১৯ বুন্দেসলিগায় লাইপজিগের বিপক্ষে খেলা দুই ম্যাচে বেশ ঘাম ঝড়াতেই হয়েছিল বায়ার্নকে। আগামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগের সরাসরি টিকেটও পেয়েছে লাইপজিগ। আজ অলিম্পিকস্তাদিওনে লাইপজিগ আজ প্রমাণ করল, কেন এই মৌসুমে তাদের অর্জন ‘ফ্লুক’ নয় কোনওভাবেই। ম্যাচের শুরু থেকেই বাভারিয়ানদের চেপে ধরেছিল তারা, লিডটাও পেয়ে যেতে পারত হাতেনাতেই। কিন্তু ইনজুরি কাটিয়ে বায়ার্নের গোলবারের নিচে ফেরা ম্যানুয়েল নয়্যার পুরো ম্যাচে ছিল দুর্দান্ত।

     

     

    ১১ মিনিটে ‘পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক’ রেঞ্জ থেকে ক্রিশ্চিয়ান পলসনের হেড ফিরিয়ে দিয়েছেন অবিশ্বাস্যভাবে। প্রথমার্ধে নয়্যারের মতই দুর্দান্ত খেলেছেন রাইটব্যাক জশুয়া কিমিচ। প্রথমার্ধে দুবার ‘লাস্ট ম্যান ট্যাকল’-এ টিমো ভার্নার এবং এমিল ফর্সবার্গকে নিশ্চিত গোলবঞ্চিত করেছেন তিনি। গোলের সুযোগ কাজে লাগাতে না পারার মাশুলটাও অবশ্য দিতে হয়েছে লাইপজিগকে। পুরো প্রথমার্ধে আক্রমণে বিবর্ণ বায়ার্ন প্রথম সুযোগেই নিয়ে নেয় লিড।

     

     

    ২৯ মিনিটে বাঁ-প্রান্ত থেকে ডেভিড আলাবার ক্রসে দুর্দান্ত এক হেডে গোল করেন লেভানডফস্কি। জার্মান কাপ ফাইনালের ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোল এখান পোলিশ স্ট্রাইকারেরই। গোলের পর অবশ্য ছন্দে ফেরে বায়ার্ন। প্রথমার্ধের শেষদিকে ব্যবধানে দ্বিগুণেরও দারুণ সুযোগ পেয়েছিল বাভারিয়ানরা। কিন্তু নয়্যারের মত অন্যপ্রান্তে দারুণ ফর্মে ছিলেন লাইপজিগ গোলরক্ষক গুলাশি। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে ম্যাটস হামেলসকে দু’বার লাইন থেকে ফিরিয়ে দিয়েছেন তিনি।

     

     

    লিড নিতে না পারায় প্রথমার্ধে মাশুল দিতে হয়েছিল লাইপজিগকে। প্রথমার্ধে ব্যবধান দ্বিগুণ করতে না পারার চড়া মূল্যই আরেকটু হলে দ্বিতীয়ার্ধে দিতে হত বায়ার্নকে। ৪৮ মিনিটে নয়্যারকে একা পেয়ে গিয়েছিলেন ফর্সবার্গ, কিন্তু লাইন থেকে এগিয়ে এসে সুইডিশ ফরোয়ার্ডকে গোলবঞ্চিত করেছেন নয়্যার। দুর্দান্ত নয়্যারে এতবার পরাস্ত হয়েও হাল ছাড়েনি লাইপজিগ। কিন্তু ভাগ্যও যেন লাইপজিগের দিকে ফিরে তাকায়নি। ৫৭ মিনিটে ভার্নারের শট নয়্যারকে পরাস্ত করলেও লাইন থেকে ফিরিয়ে দেন নিকোলাস সুলে। প্রথমার্ধের মত দ্বিতীয়ার্ধেও সুযোগ হাতছাড়া করার চড়া মাশুলই দিতে হয়েছে লাইজিগকে।

    ৭৫ মিনিটে বায়ার্নের জার্সিতে শেষবারের মত মাঠে নেমেছিলেন আরিয়েন রোবেন, মিনিট তিনেক পরই দলের জয় নিশ্চিত করতে সাহায্য করেন তিনি। রোবেনের পাস থেকে কিমিচের ক্রস নিয়ন্ত্রণে এনে লাইপজিগের দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বল জালে পাঠান কোমান। অবশ্য তখনও লাইপজিগের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেওয়া হয়নি বায়ার্নের, সে কাজটা করে ফেলেন লেভানডফস্কিই। ৮৫ মিনিটে কিমিচের থ্রু পাস থেকে গুলাশিকে চিপ করে গোল করেন তিনি। গত মৌসুমে ফ্রাঙ্কফুর্টের হয়ে এই বায়ার্নকে হারিয়েই জার্মান কাপ জিতেছিলেন কোভাচ, এবার জিতলেন বায়ার্নের হয়েই। শেষবারের মত ‘রোবারি’ জাদুর দেখা না মিললেও শিরোপা জেতার হাসি হেসেই প্রিয় বায়ার্নকে বিদায় জানালেন 'রোবারি'।