''প্রতারণা করেছিল ইংল্যান্ড!''
ফ্লিনটফের সাক্ষাৎকারটা দেখে থাকলে নিশ্চিতভাবেই পুরোনো রাগ নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে রিকি পন্টিংয়ের! দশ বছর আগে ইংলিশদের দুই দশকের অ্যাশেজ-আক্ষেপ ঘোচানোর সিরিজে এক টেস্টে বদলি ফিল্ডারের সরাসরি থ্রোতে ভেঙেছিল অজি কাপ্তানের স্ট্যাম্প। সাজঘরে ফেরার পথেই রাগ-ক্ষোভ-বিরক্তি সব যেন একাকার হয়ে ফুটছিল পন্টিংয়ের চেহারায়। এতদিন পর যদি খোদ ইংল্যান্ড দলেরই কারও মুখ থেকে শোনেন যে ওই সিরিজে ঘনঘন বদলি ফিল্ডার বদলিয়ে বিধিবহির্ভূত আচরণ করেছিল ইংলিশরা, পন্টিংয়ের নতুন করে রাগ হওয়াটা স্বাভাবিক বৈকি!
অস্ট্রেলিয়ার চ্যানেল টেনের ‘দ্য প্রোজেক্ট’ অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে এসেছিলেন ফ্লিনটফ। আলাপচারিতার এক পর্যায়ে উপস্থাপক তাঁকে প্রশ্ন করেন যে, ওই অ্যাশেজে বারবার বদলি ফিল্ডার মাঠে নামিয়ে ইংল্যান্ড কোনো ‘প্রতারণা’র আশ্রয় নিয়েছিল কিনা। এ সময় ফ্লিনটফ হাসতে হাসতেই জবাব দেন যে ‘হ্যাঁ, হ্যাঁ অবশ্যই!” এ সময় স্টুডিওতে উপস্থিত দর্শকদের মধ্যেও হাসির রোল পড়ে যায়। সাবেক ইংলিশ অলরাউন্ডার সাথে এ-ও স্বীকার করেন যে ওটা ছিল বিধি এবং ক্রিকেটীয় শিষ্টাচার বহির্ভূত।
আরও পড়ুনঃ আইপিএল টানে নি ফ্লিনটফকে
ফ্লিনটফের এই সরল স্বীকারোক্তি ফের সামনে নিয়ে এসেছে ট্রেন্ট ব্রিজে অনুষ্ঠিত চতুর্থ টেস্টের এক ঘটনাকে। ওই ম্যাচে কাভারে ফিল্ডিংরত বদলি ফিল্ডার গ্যারি প্র্যাট সরাসরি থ্রোতে স্ট্যাম্প ভেঙ্গে রান আউট করেন পন্টিংকে। আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরার পথে উষ্মাটুকু গোপন করেন নি পন্টিং। অজিরা অবশ্য তখনই দাবী তুলেছিল যে, নিয়মিত পেসারদের ‘অন্যায়ভাবে’ বিশ্রাম দিতেই এভাবে বদলি ফিল্ডার নামাচ্ছে স্বাগতিক শিবির।
তবে বাস্তবতা হচ্ছে প্র্যাটকে মাঠে নামানো হয়েছিল ‘সত্যি সত্যি’-ই চোট পেয়ে মাঠ ছাড়া পেসার সাইমন জোন্সের শূন্যস্থান পূরণে। আউট হয়ে ‘অসদাচরণ’ করার জন্য অবশ্য পন্টিংকেও পরবর্তীতে মুখোমুখি হতে হয়েছিল শৃঙ্খলা কমিটির। সে সময় ওভাবে মেজাজ হারানোর ব্যাখ্যাও দিয়েছিলেন অজি অধিনায়ক, “আমার হতাশা কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছিল এই চিন্তা করে যে একজন বদলি ফিল্ডারের হাতে আমাকে আউট হতে হলো...যেটা নিয়ে কিনা আমরা সিরিজের শুরু থেকেই কথা বলে আসছিলাম।”
এদিকে মজা করে দেয়া ‘স্বীকারোক্তি’ যে ক্রিকেট দুনিয়ায় রীতিমতো ঝড় তুলে ফেলবে, সেটা বোধহয় ভাবতে পারেন নি ফ্লিনটফ। জল বেশি দূর গড়ানোর আগেই তাই টুইটারে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করছেন সাবেক ইংলিশ অলরাউন্ডার, “আমি প্রতারণা করেছিলাম বেশী জোরে বল করে, সজোরে ব্যাট চালিয়ে। সামান্য ব্যাপার নিয়ে হৈচৈ শুরু হওয়ার আগেই বলে নিচ্ছি, আমি আসলে মজা করছিলাম!”