আমার কারণেই বিবিসি একসাথে খেলতে পেরেছিল: বেনজেমা
রিয়াল মাদ্রিদের বর্তমান স্কোয়াডে অভিজ্ঞতার দিক দিয়ে তার চেয়ে এগিয়ে আছেন কেবল অধিনায়ক সার্জিও রামোস এবং মার্সেলো। ২০০৯ সালে অলিম্পিক লিঁও ছেড়ে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে পাড়ি জমিয়েছিলেন করিম বেনজেমা। মেঘে মেঘে কেটে গেছে এক দশক; ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, মেসুত ওজিলরা রিয়াল ছাড়লেও এখনও 'লস ব্লাঙ্কোস'দের হয়েই খেলছেন বেনজেমা। গত দশ বছরে অনেক ফরোয়ার্ডের সাথে খেলেছেন বেনজেমা, কিন্তু খুব সম্ভবত রিয়ালে তার সবচেয়ে দুর্ধর্ষ ফরোয়ার্ড লাইন ছিল গ্যারেথ বেল এবং ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর সাথে। 'বিবিসি'-এর নিউক্লিয়াস রোনালদো থাকলেও বেনজেমা মনে করেন, তার কারণেই এতদিন একসাথে ভাল খেলতে পেরেছিলেন তিনজন।
বার্নাব্যুতে এক দশক পূর্তিতে ফ্রেঞ্চ সংবাদপত্র আরএমসি স্পোর্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে 'বিবিসি' নিয়ে বেনজেমা বলেছেন, 'বিবিসিতে আমাদের একজন রকেট ছিল (বেল)। একজন গোলদাতা ছিল (রোনালদো)। আর বাকি ছিলাম আমি, দুজনের মাঝখানে। আমার কারণেই বিবিসি একসাথে খেলতে পেরেছিল।' লিঁওতে মূলত দুর্ধর্ষ এক গোলদাতা হিসেবেই ইউরোপের বড় ক্লাবগুলোর নজর কেড়েছিলেন বেনজেমা। কিন্তু ফ্রেঞ্চ স্ট্রাইকার স্বীকার করেছেন; রোনালদো থাকায় রিয়ালের তার ভূমিকা কিছুটা ভিন্নই ছিল, 'লিঁওতে আমিই মূল গোলদাতা ছিলাম। কিন্তু রিয়ালের এই ভূমিকায় ছিল ক্রিশ্চিয়ানো। আমার কাজ মূলত ছিল আক্রমণ গড়া, দুই উইংয়ে পাস ছাড়া এবং ফরোয়ার্ডদের মাঝে জায়গা তৈরি করা। সেজন্য (জায়গা তৈরি করা) অনেক সময় আমি উইংয়ে বা নিচে নেমেও খেলেছি।'
শুধু বিবিসি নয়, রিয়ালের জার্সিতে নিজের সেরা মুহূর্তগুলো নিয়েও কথা বলেছেন বেনজেমা। ২০১৮-১৯ মৌসুমের চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে লিভারপুলের বিপক্ষে করা গোলের কথা বলতে গিয়ে কিছুটা আবেগাপ্লুতই হয়ে পড়েন ফ্রেঞ্চ স্ট্রাইকার, 'ঐ গোলটা আমার ভীষণ দরকার ছিল। সেই ছোটবেলা থেকেই চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে গোল করার স্বপ্ন দেখতাম আমি। অবশেষে ঐ ম্যাচে স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছিলাম।'
২০১৬-১৭ মৌসুমের সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের কাছে ২-১ গোলে হেরেও ফাইনালে গিয়েছিল রিয়াল। 'লস রোহিব্লাঙ্কোস'দের সাবেক হোম ভিসেন্তে ক্যালদেরনের শেষ চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচে রিয়ালের গোলটি এসেছিল বেনজেমার অবিশ্বাস্য এক দৌঁড়ে। আরএমসি স্পোর্টকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বছর দুয়েকের আগের ম্যাচটিতেই যেন ফিরে গেলেন বেনজেমা, 'ফুটবলের সংজ্ঞা আমার কাছে এমনই। একজন সমর্থক হিসেবে মাঠে খেলা দেখতে গেলে আমি গোলের চেয়ে এরকম কিছুই দেখতে চাইব। কারণ গোল প্রায় সব ম্যাচেই হয়, কিন্তু এরকম মুহূর্ত সব ম্যাচে আসে না। আর সর্বোপরি ম্যাচটি ছিল অ্যাটলেটিকোর মত এক চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বিপক্ষে, যা ব্যাপারটিকে আরও অর্থবহ করে তুলেছে। এটিই চ্যাম্পিয়নস লিগে আমার সেরা মুহূর্ত।'