• চ্যাম্পিয়নস লিগ
  • " />

     

    অ্যানফিল্ডে সাত গোলের ম্যাচে জিতল লিভারপুল

    অ্যানফিল্ডে সাত গোলের ম্যাচে জিতল লিভারপুল    

    বার্সেলোনার বিপক্ষে গত মৌসুমের সেই বিখ্যাত সেমিফাইনালের পর অ্যানফিল্ডে প্রথমবারের মতো ফিরেছিল চ্যাম্পিয়নস লিগ। লিভারপুল এবার মাঠে নেমেছিল চ্যাম্পিয়ন হয়ে। অ্যানফিল্ডে ছিল ইউরোপিয়ানকাপ/চ্যাম্পিয়নস লিগের শততম ম্যাচ। সব আয়োজন ও উৎসবমুখর পরিবেশ ক্লপদের জন্য আরও আনন্দদায়ক হয়ে উঠেছিল ৩৬ মিনিটে লিভারপুল ৩-০ গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর।

    আবার সব কিছু পন্ডও হতে বসেছিল। অ্যানফিল্ডে তিন গোলে পিছিয়ে থেকেও আবার সমতায় ফিরেছিল অস্ট্রিয়ান চ্যাম্পিয়ন রেডবুল সালজবার্গ। তবে গল্পটা শেষ পর্যন্ত আর জমাতে পারেনি তারা, ৬৮ মিনিটে মোহামেদ সালাহ আরও এক গোল করে বসেন। শেষ পর্যন্ত ওই গোলে ৪-৩ ব্যবধানের জয় নিশ্চিত হয় লিভারপুলের।

    অ্যানফিল্ডে ম্যাচের শুরুতেই পরিস্কার হয়ে গিয়েছিল আক্রমণে ধারালো হয়ে খেলবে ইউর্গেন ক্লপের দল। ৯ মিনিটে এগিয়ে গিয়েছিল লিভারপুল। সাদিও মানে বামদিক থেকে শুরু করা আক্রমণের পর দ্রুত গতিতে বক্সে ঢুকে সালজবার্গ গোলরক্ষক চিচান স্টাঙ্কোভিচ দুই পায়ের ফাঁক দিয়ে শট করে গোল করেন। গোলের পর অবশ্য উদযাপনে লাগাম টেনেছিলেন মানে। এই ক্লাবের হয়ে ৮৭ ম্যাচে ৪৫ গোল আছে তার।


    সাবেক ক্লাবের বিপক্ষে মানে উদযাপন খাটো করলেও ২৫ মিনিটে অ্যান্ড্রু রবার্টসনের উদযাপন চলেছে লম্বা সময় ধরে। চলারই কথা ছিল অবশ্য। লিভারপুলের জার্সিতে মাত্র দ্বিতীয় গোল করেছেন তিনি। এর কিছুক্ষণ পর রবার্তো ফিরমিনোর হেড স্টাঙ্কোভিচ ঠেকিয়ে দেওয়ার পর গোলের সামনে বল পেয়ে যান সালাহ। লিভারপুলের তৃতীয় গোলটিও করেছিলেন তিনি।  তখন লিভারপুল ইঙ্গিত দিচ্ছিল বড় জয়ের।

    তিন মিনিট পর এক গোল শোধ করে দুই গোলে পিছিয়ে থেকে বিরতিতে যায় সালজবার্গ। লিগের শেষ ১২ ম্যাচে ৫৫ গোল দিয়েছে তারা। লিভারপুল সেই ধারাটা চলতে দিত না অ্যানফিল্ডে। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে সালজবার্গ দেখালো চাইলে এখানে রূপকথার গল্প লেখা সম্ভব তাদের জন্যও। হি চান হোয়াং  করেছিলেন প্রথম গোল। সালজবার্গের দ্বিতীয় গোল করলেন আরেক এশিয়ান, তাকুমি মিনামিনো। দক্ষিণ কোরিয়ান ক্রস করেছিলেন, জাপানিজ বক্সের ভেতর থেকে ভলিতে করেছেন দারুণ ফিনিশ।  ৫৬ মিনিট, অ্যানফিল্ডে স্কোরলাইন ৩-২। 

    সালজবার্গের টিনএজ স্ট্রাইকার এরিক ব্রুট হালান্ড একাদশে ছিলেন না অসুস্থতার কারণে। দ্বিতীয় গোলের পর তিনিও নামলেন। আগের ম্যাচে করেছিলেন হ্যাটট্রিক। মাঠে নামার চার মিনিটের মাথায় ফারপোস্ট থেকে টোকা মেরে বল গোলে ঢুকিয়ে হালান্ড চুপ করিয়ে দিয়েছিলেন অ্যানফিল্ডকে। দুই হাত কানের পাশে তুলে ধরে রসিকতাও করেছেন হালান্ড। অ্যানফিল্ডে গোলের পর এমন করাই যায়!

    তখন ভীতি চড়ে গিয়েছিল অ্যানফিল্ডে। সালাহ প্রথম গোলের পর বড় উদযাপনের প্রয়োজন মনে করেননি, ৬৯ মিনিটে দ্বিতীয় গোল করেও সেটা করেননি। তবে স্বস্তির হাসিটা ভালোভাবেই ফুটে উঠে তার মুখে। ফিরমিনোর হেডের পর স্টাঙ্কোভিচের মাথার ওপর দিয়ে বল তুলে দিয়ে চতুর্থ গোলটি করেছিলেন সালাহ। লিভারপুলের আক্রমণভাগে শুধুমাত্র ফিরমিনো গোল পাননি এদিন, তবে তিনটি অ্যাসিস্ট দিয়ে নিজের গুরুত্ব আরেকবার বুঝিয়ে দিয়েছেন ব্রাজিলিয়ান।

    ম্যাচ শেষে লিভারপুল তাই স্বস্তির সঙ্গে পেয়েছে চ্যাম্পিয়নস লিগে এবারের প্রথম জয়। আগের নাপোলির কাছে হেরে এসেছিল লিভারপুল। এবার তারা গেঙ্কের মাঠে ফিরেছে গোলশুন্য ড্র নিয়ে। ২ ম্যাচে শেষে ৪ পয়েন্ট নিয়ে নাপোলি সবার ওপরে। গ্রুপ 'ই'-তে লিভারপুল ও সালজবার্গ দুই ক্লাবের পয়েন্ট ৩ করে। 

    লিভারপুলের মতো চেলসিও নিজেদের প্রথম জয় পেয়েছে একই সময়ে। ফ্রান্সে লিলের বিপক্ষে তারা জিতেছে ২-১ ব্যবধানে। ট্যামি আব্রাহাম এগিয়ে দিয়েছিলেন চেলসিকে। ভিক্টর ওসিমহেন এরপর গোল করে প্রথমার্ধেই ফিরিয়ে আনেন লিলকে। নির্ধারিত সময়ের ১২ মিনিট বাকি থাকতে উইলিয়ান আরেক গোল করে ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ডকে ইউরোপ প্রথম জয় এনে দেন।

    এই গ্রুপের অন্য ম্যাচে ভ্যালেন্সিয়াকে তাদের মাঠে ৩-০ ব্যবধানে হারিয়েছে আয়াক্স। দুই ম্যাচে দুই জয় নিয়ে তাই সবার ওপরে ডাচ চ্যাম্পিয়নরা। ৮ মিনিটে হাকিম জিয়েচ এগিয়ে দিয়েছিলেন আয়াক্সকে। এরপর ম্যাচে ফেরার সুযোগ হাতছাড়া করে ভ্যালেন্সিয়া। অধিনায়ক দানি পারেহো ২৫ মিনিটে মিস করেছেন পেনাল্টি। প্রথমার্ধেই কুইঙ্কি প্রোমসের গোলে ব্যবধান বাড়িয়ে নেওয়া আয়াক্স, ৬৭ মিনিটে পায় তৃতীয় গোল। ডনি ভ্যান ডি বিক আয়াক্সের হয়ে করেছেন শেষ গোলটি।