• শ্রীলংকার পাকিস্তান সফর
  • " />

     

    ১৩ বছর পর দেশের মাটিতে জয় থেকে ৩ উইকেট দূরে পাকিস্তান

    ১৩ বছর পর দেশের মাটিতে জয় থেকে ৩ উইকেট দূরে পাকিস্তান    

    ৪র্থ দিন, স্টাম্পস
    পাকিস্তান ১ম ইনিংস ১৯১ অল-আউট (বাবর ৬০, শফিক ৬৩, কুমারা ৪/৪৯, এমবুলদেনিয়া ৪/৭১) ও ২য় ইনিংস ৫৫৫/৩ ডিক্লে. (আবিদ ১৭৪, মাসুদ ১৩৫, আজহার ১১৮, বাবর ১০০*, কুমারা ২১৩৯)
    শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস ২৭১ অল-আউট (চান্ডিমাল ৭৪, পেরেরা ৪৮, আফ্রিদি ৫/৭৭, আব্বাস ৪/৫৫) ও ২য় ইনিংস ২১২/৭* (ফার্নান্ডো ১০২*, ডিকওয়েলা ৬৫, নাসিম ৩/৩১) 
    শ্রীলঙ্কার ৩ উইকেটে ২৬৪ রান প্রয়োজন


    ২০০৬ সালে করাচিতেই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়েছিল পাকিস্তান, দেশের মাটিতে তাদের সর্বশেষ টেস্ট জয় হয়ে আছে সেটিই। ১৩ বছর পর সেই করাচিতেই আরেকটি জয়ের কাছাকাছি চলে গেছে তারা। ৪৭৬ রানতাড়ায় ওশাদা ফার্নান্ডোর দারুণ সেঞ্চুরি ও নিরোশান ডিকওয়েলার সঙ্গে ১০৪ রানের জুটি পাকিস্তানকে আটকে রেখেছিল বেশ কিছুক্ষণ, তবে শেষবেলায় আরও ২ উইকেট হারানো শ্রীলঙ্কাকে ঠেলে দিয়েছে অলৌকিক কিছু করার সামনে। 

    এর আগে আজহার আলি ও বাবর আজমের সেঞ্চুরিতে পাকিস্তান দ্বিতীয় ইনিংসে ৩ উইকেটে ৫৫৫ রান তুলে ঘোষণা করেছিল। বাবরের সেঞ্চুরিতে পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইন-আপের প্রথম চারজনই সেঞ্চুরি পেলেন, ইতিহাসে এমন ঘটনা আছে আর একবারই। ২০০৭ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে একই টেস্ট সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন ভারতের ওয়াসিম জাফর, দীনেশ কার্তিক, রাহুল দ্রাবিড় ও শচিন টেন্ডুলকার। 

    এরপর রানতাড়ায় ৯৭ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান যেখানে ব্যাটিং করেছে, শ্রীলঙ্কা যেন করেছে ভিন্ন কোনও কন্ডিশনে। মোহাম্মদ আব্বাস, শাহিন শাহ আফ্রিদি বা নাসিম শাহ- শ্রীলঙ্কানদের ওপর চেপে বসেছিলেন তারা। 

    পাকিস্তানকে প্রথম ব্রেকথ্রু দিয়েছিলেন আব্বাস, ফুললেংথের বলে পুশ করতে গিয়ে কট-বিহাইন্ড হয়েছেন শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নে। নাসিমের লেংথ বলে শরীর থেকে দূরে খেলতে গিয়ে স্লিপে বাবরের হাতে ধরা পড়েছেন কুসাল মেন্ডিস, কোনো রান করার আগেই। ফার্নান্ডোকে কিছুক্ষণ সঙ্গ দেওয়ার পর আফ্রিদির বলে এজড হয়েছেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস, সামনে ঝুঁকে রিজওয়ানের নেওয়া ক্যাচটি টিভি আম্পায়ার রায় দিয়েছেন ঠিকঠাক বলেই। 

     


    পরপর দুই ওভারে দীনেশ চান্ডিমাল ও ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে হারিয়ে এরপর খাদের কিনারে চলে গিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। নাসিমের ভেতরের দিকে ঢোকা বলে এলবিডব্লিউ হয়েছেন চান্ডিমাল, যে উইকেট পাকিস্তান পেয়েছে রিভিউ নিয়ে। পরের ওভারে ইয়াসিরকে কাট করতে গিয়ে স্টাম্পে বল ডেকে এনেছেন ডি সিলভা। 

    ফার্নান্ডো ও ডিকওয়েলার ঘুরে দাঁড়ানো এরপরই। ডিকওয়েলা ছিলেন দারুণ আক্রমণাত্মক, ৫৭ বলে ফিফটি পূরণ করেছেন, এর মাঝে ৯টি চার মেরেছিলেন তিনি। তার রিভার্স সুইপের প্রবণতাই শেষ পর্যন্ত কাল হয়েছে, হারিস সোহেলকে এ শট খেলতে গিয়ে হয়েছেন বোল্ড। এরপর ফার্নান্ডো পূরণ করেছেন সেঞ্চুরি, ১৭২ বলে। ১৩ চারে ১০২ রান করে অপরাজিত আছেন তিনি। দিনের শেষ বলে পাকিস্তানকে আরেকটু এগিয়ে দিয়েছেন নাসিম, তার বলে আউটসাইড-এজড হয়ে ফিরেছেন আগের ইনিংসে ফিফটি করা দিলরুয়ান পেরেরা। 

    ৩১৫ রানের লিড নিয়ে দিন শুরু করা পাকিস্তান এদিনও বজায় রেখেছিল আধিপত্য। লাঞ্চের আগে সেঞ্চুরি পেয়ে গেছেন আগের দিন ৫৭ রানে অপরাজিত থাকা পাকিস্তান অধিনায়ক আজহার আলি, লাসিথ এমবুলদেনিয়াকে বাইরে এসে খেলতে গিয়ে স্টাম্পড হওয়ার আগে ১৫৭ বলে করেছেন ১১৮ রান। ১৪ ইনিংস পর ফিফটি পেয়ে সেটিকে তিন অঙ্কে রূপান্তর করলেন তিনি, আরও অনেক কিছুর সঙ্গে অধিনায়কের ফর্মে ফেরার ইঙ্গিতও স্বস্তি দেবে পাকিস্তানকে। 

    বাবরের ইনিংস অবশ্য পাকিস্তানকে দিয়েছে বরাবরের মতোই স্বস্তির চেয়েও বেশি কিছু। মাত্র ১৩১ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছেন তিনি। ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারির পর থেকে কমপক্ষে ১০০০ রান করা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৬১.৬০ গড় এখন এই পাকিস্তান ব্যাটসম্যানেরই। তার সেঞ্চুরির পরই ইনিংস ঘোষণা করে দিয়েছিলেন আজহার।