• নিউজিল্যান্ডের অস্ট্রেলিয়া সফর
  • " />

     

    বক্সিং ডে-র উপলক্ষ্য রাঙালেন স্মিথ

    বক্সিং ডে-র উপলক্ষ্য রাঙালেন স্মিথ    

    অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস ২৫৭/৪, ৯০ ওভার (স্মিথ ৭৭*, ল্যাবুশেন ৬৩, ডি গ্র্যান্ডোম ২/৪৮, ওয়াগনার ১/৪০) 


    প্রায় ৫০ বছর এমসিজিতে অ্যাশেজ ছাড়া বক্সিং ডে-তে এতো দর্শক (৮০৪৭৩) হয়নি। প্রায় ৩২ বছর পর এমসিজিতে বক্সিং ডে টেস্ট খেলতে নেমেছিল অস্ট্রেলিয়ার ট্রান্স-তাসমান প্রতিবেশি নিউজিল্যান্ড। দারুণ স্টিভ স্মিথের সঙ্গে মারনাস ল্যাবুশেনের ফিফটিতে ভর করে অস্ট্রেলিয়া তুলেছে ৪ উইকেটে ২৫৭ রান, উপলক্ষ্যটা করে নিয়েছে নিজেদের। টসে জিতে ফিল্ডিং নিয়ে নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন ঘাসযুক্ত উইকেটে হয়তো নিজেদের বোলারদের কাছে আশা করছিলেন আরেকটু বেশি। 

    এমসিজির উইকেট গত কয়েকদিন থেকেই ছিল আলোচনায়, বিপজ্জনক বলে শেফিল্ড শিল্ডের ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ার পর থেকে। এদিনও ম্যাথু ওয়েড, মারনাস ল্যাবুশেনরা আঘাত পেলেন শরীরে, তবে সেখানে এমসিজির উইকেটের চেয়েও ‘দায়’ বেশি নিউজিল্যান্ড পেসারদের শর্ট বলের। নেইল ওয়াগনার এদিনও দাগিয়েছেন শর্ট বলের তোপ, তবে সেসব জয় করে স্মিথ এগিয়ে যাচ্ছেন আরেকটি সেঞ্চুরির দিকে। 

    ট্রেন্ট বোল্টের দারুণ এক ইনসুইংয়ে জো বার্নস স্টাম্প হারিয়েছিলেন ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে, বোল্টের প্রথম বলেই। এমন শুরুই তো চেয়েছিলেন উইলিয়ামসন। ল্যাবুশেন ক্রিজে এসে ডেভিড ওয়ার্নারের সঙ্গে গড়লেন ৬০ রানের জুটি। ওয়াগনারের অফস্টাম্পের বাইরের ফুললেংথের বল তাড়া করতে গিয়ে স্লিপে টিম সাউদির দারুণ ক্যাচে পরিণত হয়ে ওয়ার্নার ফিরলে ভেঙেছে সে জুটি। 

    এবং এর ফলে ক্রিজে আবারও আরেকটি জুটির সুযোগ এসে গেছে স্মিথ-ল্যাবুশেনের। ল্যাবুশেন যে খুব দৃঢ় ছিলেন, তা নয়। তবে ফিফটি পেয়ে গেছেন ঠিকই। এজড হয়েছিলেন, রান-আউটের সুযোগ দিয়েও বেঁচেছিলেন। সব পেরিয়ে পার্থে সেঞ্চুরি-ফিফটির পর টানা তৃতীয় ইনিংসে ফিফটি পেরিয়ে গেলেন তিনি। কলিন ডি গ্র্যান্ডোমের ব্যাক অফ আ লেংথ থেকে লাফিয়ে ওঠা বলটা লিভ করতে গিয়ে পারেননি ঠিকঠাক, তার কনুইয়ে লেগে বল নেমে এসেছে স্টাম্পে। শুরুতে অবাক হয়ে পরে বেশ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে মাঠ ছেড়েছেন লাবুশেন, তবে সেটা যে ঠিক কার বা কীসের ওপর- তা অবশ্য স্পষ্ট ছিল না। 

    স্মিথ লড়াই চালিয়ে গেছেন নিজের সহজাত খেলা খেলে। কখনও শর্ট বলে গা এলিয়ে দিয়েছেন, কখনও ব্যাটের ফেইস ক্লোজ করে খেলেছেন স্ট্রেইট ড্রাইভ। লাবুশেনের সঙ্গে ৮৩ রানের জুটির পর ম্যাথু ওয়েডকে নিয়ে যোগ করেছেন আরও ৭২ রান। ওয়েডের ক্রিজে সময়টা অবশ্য খুব স্বস্তির ছিল না, ওয়াগনারের বাউন্সার তো গিয়ে লেগেছিল তার হেলমেটের পেছনেও। 

    গ্র্যান্ডোমের লেংথ বলটা পড়ে বেরিয়ে যাওয়ার আগে ওয়েডের ব্যাট ছুঁয়ে গেলে শেষ হয়েছে তার ৩৮ রানের ইনিংস। ৯০ ওভারের দিনে নিউজিল্যান্ডের চার পেসারই করেছেন ২০ ওভারের বেশি করে, ৪৮ রানে ২ উইকেট নিয়ে সেখানে সবচেয়ে সফল ওই ডি গ্র্যান্ডোমই। ওয়াগনার ২১ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ৪০ রান। 

    ওয়েডের পর স্মিথকে সঙ্গ দিয়েছেন ট্রাভিস হেড। ৩ বাউন্ডারিতে ২৫ রানে অপরাজিত আছেন তিনি। চা-বিরতির পর ১০৯ বলে ফিফটি পূর্ণ করা স্মিথ দিনশেষে অপরাজিত আছেন ১৯২ বলে ৭৭ রানে, ৮ চারের সঙ্গে মেরেছেন ১টি ছয়। 

    বক্সিং ডে টেস্টের দ্বিতীয় দিন এই স্মিথকে টলানোই নিশ্চয়ই প্রথম ও হয়তো সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে কিউইদের।