• ফেডারেশন কাপ
  • " />

     

    পেনাল্টি বিতর্কে শেখ জামালকে হারিয়ে কোয়ার্টারে সাইফ

    পেনাল্টি বিতর্কে শেখ জামালকে হারিয়ে কোয়ার্টারে সাইফ    

    ফুলটাইম 
    শেখ জামাল ১-৩ সাইফ স্পোর্টিং


    ম্যাচের ১০ মিনিট বাকি থাকতেও ফেডারেশন কাপ থেকে বিদায়ের ক্ষণ গুণছিল সাইফ স্পোর্টিং। বাকি সময়ে হতে পারত অনেক কিছুই। যেটা হলো তাতে অবশ্য কপাল খুলে গেল সাইফেরই। ৮৩ মিনিটে রেফারির বিতর্কিত এক সিদ্ধান্তে পেনাল্টি পাওয়ার পর জাহাঙ্গির এরগাশেভ গোল করে এগিয়ে নিয়ে গেলেন সাইফকে। এর পর যোগ করা সময়ে শেখ জামালের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে আখমেদভ ব্যবধান করেন ৩-১। তাতে ফেডারেশন কাপে গ্রুপ 'সি' এর শেষ ম্যাচ জিতে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে গেছে সাইফ স্পোর্টিং, তাদের সঙ্গী হয়েছে রহমতগঞ্জ। 

    ১৪ মিনিটের ভেতর দুই দলই দুই গোল করে খেলা জমিয়ে তুলেছিল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে। ম্যাচ ড্র হলে গ্রুপের তিন দলেরই পয়েন্ট হত সমান, গোলব্যবধানও তখন ছিল এক। তাই ফেয়ার প্লে নিয়মে পরের রাউন্ডে উঠে যেত শেখ জামাল ও সাইফ। এখন কোয়ার্টার ফাইনালে সাইফের প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ পুলিশ এফসি ও ঢাকা আবাহনী খেলবে রহমতগঞ্জের বিপক্ষে।


     


    দুইদলই যে জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমেছিল সেই ছাপ ছিল শুরু থেকেই। ম্যাচের ৯ মিনিটে দুই গাম্বিয়ান ফরোয়ার্ডের দারুণ সমন্বয়ে সাইফকে চমকে দিয়ে এগিয়ে যায় শেখ জামালই। সোলোমন কিংয়ের পাস থেকে বক্সের ভেতর থেকে ডান পায়ের শটে গোল করেন পা ওমর জোবে। সাইফ অবশ্য গোল শোধ করতে সময় নেয়নি। জামালকে চাপে ফেলে ১৪ মিনিটেই গোল করে দলকে সমতায় ফেরান ডিফেন্ডার ইয়াসিন আরাফাত। বক্সের বাইরে থেকে বেশ কয়েকবার জামালদের শট ফিরিয়ে দেওয়ার পর বল পেয়ে গিয়েছিলেন ইয়াসিন। এর পর তিনিও বক্সের ভেতর থেকেই শট নিয়ে গোল পেয়ে যান।

    এর পর প্রথমার্ধে  সাইফই বলের নিয়ন্ত্রণ রেখেছে বেশি। তবে সেভাবে পরিষ্কার গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারেনি তারা। কাউন্টার অ্যাটাকে আরেকটু হলেই গোল পেয়ে যেতে পারত শেখ জামাল। কিন্তু এবার সতীর্থ সোলোমনের থ্রু পাস থেকে জামাল গোলরক্ষকের সঙ্গে ওয়ান অন ওয়ানে ফিনিশটা করতে পারেননি জোবে। পাপ্পুর দারুণ সেভের পর বারপোস্টে লেগে ফেরত আসে বল। 

    দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য খেলার গতি কমে এসেছিল। তাতেও সাইফই দাপট দেখিয়েছে। তবে আরও একবার অ্যাটাকিং থার্ডে  গিয়ে ফুরিয়ে গেছে সাইফের সব প্রচেষ্টা। সে তুলনায় অন্যপ্রান্তে আরও একবার সহজ গোলের সুযোগ নষ্ট করেছেন জোবেরা। পরে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত বিপক্ষে যাওয়ার পর সেই আফসোস আরও বেশি পুড়িয়েছে জামালকে।

    ৮৩ মিনিটে বক্সের ভেতর উড়ে আসা বল বুক দিয়ে নামাতে চেয়েছিলেন ডিফেন্ডার অসাগি মানডে। তবে রেফারি আনিসুর রহমানের কাছে সেটা হ্যান্ডবলই মনে হয়েছে। জামালের ফুটবলারদের তর্কাতর্কির পর মিনিটে দুয়েক খেলা বন্ধও থাকে। এরপর স্পটকিক থেকে নিচু শট নিয়ে গোল পেয়ে যান তাজিক ফরোয়ার্ড এরগাশেভ।

    যোগ করা সময়ে আখমেদভ শেখ জামালের ষোলকলা পূর্ণ করেছেন দারুন এক গোল করে। বক্সের ঠিক মাথা থেকে বাঁ পায়ের দারুণ শটে সাইফের জয়ের সঙ্গে কোয়ার্টার ফাইনালও নিশ্চিত করে ফেলেন কিরগিজ মিডফিল্ডার। 

    রেফারিকেই দুষছেন শেখ জামাল কোচ
     
    ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে রেফারির সিদ্ধান্তকে ধুয়ে দিয়েছেন শেখ জামাল কোচ শফিকুর রহমান মানিক। তার দাবি প্রতিপক্ষ দলকে হারাতেই এমন সিদ্ধান্ত দিয়েছেন রেফারি, "আমরা ম্যাচের আগে ছিলাম গ্রুপের শীর্ষে। রেফারির একটি সিদ্ধান্তে বাদ পড়ে যেতে হল আমাকে। আমি জানিনা আমরা মাঠে এগারো জনের বিপক্ষে খেলাম নাকি বারো জনের বিপক্ষে।"

    "রেফারি ইচ্ছা করেই এ ধরনের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। ম্যাচের শুরু থেকেই নড়বড়ে ছিল তার কিছু সিদ্ধান্ত।"  


    খেলোয়াড়দের জয়ক্ষুধার প্রশংসা নিজামের
    সাইফ স্পোর্টিং কোচ মোহাম্মদ নিজাম অবশ্য রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি, "যেখানে ঘটনা ঘটেছে আমি তার চেয়ে বহুদূরে ছিলাম। সেখান থেকে আসলে দেখা যায়নি আসলে কী হয়েছে।"

    ৩-১ গোলের জয়ে দলের প্রশংসা করেছেন নিজাম। অনুশীলনে ঘাটতির কথাটা বললেও, খেলোয়াড়দের ভেতর জয়ক্ষুধা শেখ জামালকে হারাতে সাহায্য করেছে বলেছে জানিয়েছেন তিনি।