• উইমেনস টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২০
  • " />

     

    বাগে পেয়েও নিউজিল্যান্ডকে বশ করা হলো না বাংলাদেশের

    বাগে পেয়েও নিউজিল্যান্ডকে বশ করা হলো না বাংলাদেশের    

    আইসিসি উইমেনস টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২০
    নিউজিল্যান্ড ৯১ অল-আউট, ১৮.২ ওভার (প্রিস্ট ২৫, সালমা ৩/৭, রিতু ৪/১৮)
    বাংলাদেশ ৭৪ অল-আউট, ১৯.৫ ওভার (নিগার ২১, জেনসেন ৩/১১, কাসপেরেক ৩/২৩)
    নিউজিল্যান্ড ১৭ রানে জয়ী  


    অভিজ্ঞতা। শব্দটা কতো সহজে উচ্চারণ করা গেলেও এর মূল্যটা চড়া। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ উইমেন মার খেয়ে গেল ওই অভিজ্ঞতাতেই। সে অভিজ্ঞতা যে শুধু বয়সে আসে তা তো নয়, পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার ক্ষেত্রেও তা কার্যকরী। নিউজিল্যান্ডকে ৯১ রানে অল-আউট করে দিয়েও বাংলাদেশ হয়ে পড়লো এলোমেলো, বাগে এনেও বশ করা হলো না তাই তাদের। ৭৪ রানে আটকে গিয়ে বাংলাদেশ এই ম্যাচটাই হেরেছে শেষ পর্যন্ত। 

    ৯২ রানের লক্ষ্য হলেও কাজটা বাকি ছিল, অন্তত অর্ধেক তো বটেই। নিউজিল্যান্ডের সেখানে অল-আউট আক্রমণ ছাড়া উপায় ছিল না। প্রথম ওভারে লেইগ কাসপেরেককে চার মেরে অবশ্য উলটো ইঙ্গিত দিয়েছিলেন মুরশিদা খাতুন। পরের ওভারে লিয়া টাহুহু করলেন চার ওয়াইড, মুরশিদার ক্যাচ পড়লো স্লিপে। নিউজিল্যান্ডকেই চাপে মনে হচ্ছিল তখনও। 

    তবে তৃতীয় ওভারে কাসপেরেককে স্লগ করতে গিয়ে লিডিং-এজড হয়ে ফিরলেন মুরশিদা, বাংলাদেশের পা হড়কানোর শুরু তখন। এক ওভার পর হেইলি জেনসেনকে তুলে মারতে গেলেন আয়েশা- ফল হলো একই। দুটি শটই ছিল পরিস্থিতির বিচারে অনপযুক্ত, অভিজ্ঞতায় যেন মার খাওয়ার শুরু হলো বাংলাদেশের। পাওয়ারপ্লেতে বাংলাদেশ তুললো ২ উইকেটে ২৩ রান। অ্যামেলিয়া কের তো শর্ট লেগ আর স্লিপ নিয়েও বোলিং করা শুরু করলেন। 

    পরের ২২ বলে এলো ৮ রান, চাপ তখন বেশ কয়েকগুণ বেশি হয়ে চাপছিল বাংলাদেশের ওপর। নিগার সুলতানা গলার কাছাকাছি আঘাত পেয়ে উঠে গেলেন, ভুল বুঝাবুঝির চূড়ান্ত মাত্রায় গিয়ে রান-আউট হলেন ফারজানা হক ও রিতু মনি। এরপর রুমানা আহমেদ এলবিডব্লিউ হলেন জেনসেনের বলে, সোফি ডিভাইনের বলে ক্যাচ দিলেন সোবহানা মোশতারি, কেরের গুগলি ঠেকাতে না পেরে গোল্ডেন ডাক জাহানারার। নিগার ফিরে এলেন, তবে সালমা তাকে রেখে উঠে গেলেন রিভার্স সুইপের ব্যর্থ চেষ্টায়। নিগার আবার নামলেন, তবে শেষরক্ষা আর হয়নি বাংলাদেশের। 
     


    আইসিসি/গেটি


    বাংলাদেশের জন্য তাই থাকলো প্রথম ইনিংসের ওই উদযাপনই।

    অস্ট্রেলিয়ার মতো নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও বাংলাদেশের এটি প্রথম ম্যাচ, তবে এবার যেন নিউজিল্যান্ডই ভড়কে গেল বাংলাদেশের দারুণ বোলিং-ফিল্ডিংয়ে। ৬৬ রানে ২ উইকেট থেকে নিউজিল্যান্ড  নাটকীয় ধসে অল-আউট হয়ে গেল ৯১ রানে। দারুণ বোলিং, দারুণ ফিল্ডিং- বাংলাদেশ যেন উড়ছিল তখন। তবে প্রদিপের নিচের আঁধার হয়ে ব্যাটিংয়ের জীর্ণদশা বেরিয়ে আসা বাকি তখনও।  

    টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নামা নিউজিল্যান্ড পাওয়ারপ্লেতে তুলেছিল ৩৩ রান, দুই ওপেনার ডিভাইন ও রেচেল প্রিস্টের জুটিতে। ৭ম ওভারে এসে বাংলাদেশকে ব্রেকথ্রু দিয়েছেন সালমা, কাট করতে গিয়ে ফাহিমার হাতে ধরা পড়েছিলেন ডিভাইন। পরের ওভারে আবার আঘাত করলেন সালমা, এবার সুইপ করতে গিয়ে এলবিডব্লিউ প্রিস্ট। 

    নিউজিল্যান্ডের ধস নামলো ১৩তম ওভারের তৃতীয় বল থেকে, রিতুকে মিডউইকেটে খেলতে গিয়ে মিস করে সুজি বেটস বোল্ড হওয়ায়। রুমানা আহমেদের পরের ওভারে গেল আরও দুই উইকেট- ম্যাডি গ্রিন স্টাম্পড হওয়ার পর ধসের অলিখিত নিয়ম মেনে জেনসেন হলেন রান-আউট। 

    মার্টিন পরের ওভারে রিতুকে জোরের ওপর খেলতে গিয়ে ধরা পড়লেন ফাহিমার হাতে। মাঝে রুমানার ওভারে ৬ রান উঠলো, কিন্তু রিতুকে সামাল দিতে পারলেন না পিটারসন বা কের। প্রথমজন পরিণত হলেন মিডউইকেট থেকে ছুটে আসা ফারজানার অসাধারণ ক্যাচে, কের দিলেন ফাহিমার হাতে পয়েন্টে ক্যাচ। ১৮ রানে ৪ উইকেট নিলেন রিতু- এ বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত যা সেরা বোলিং ফিগার। রুমানা ও সালমা এসে এরপর ছেঁটে দিলেন নিউজিল্যান্ডের লেজ, ১০ বল বাকি থাকতেই গুটিয়ে গেল তারা। 

    তবে তখনও অর্ধেক কাজ বাকি ছিল বাংলাদেশের, সেটি করতে না পেরে পরে পুরোটাই হারিয়ে ফেলল তারা।