• আইসিসি টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০১৬
  • " />

     

    ২২ গজের সেলুলয়েড : তামিম, তামিম এবং তামিম!

    ২২ গজের সেলুলয়েড : তামিম, তামিম এবং তামিম!    

    প্রথম সহস্র

    নেমেছিলেন ৯৮৯ রান নিয়ে। অজয় লালচেতাকে চার মেরে প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে হাজার রান পূর্ণ করলেন তামিম ইকবাল। তিন ফরম্যাট মিলিয়ে তামিমের রান এখন ৮৯২৩, তামিমের পেছনে থাকা সাকিব আল হাসানের রান ৮২১৭। টি-টোয়েন্টিতে হাজারের কাছাকাছি আছেন সাকিবও, চার অঙ্ক ছুঁতে তাঁর প্রয়োজন আর চার রান।

     

    প্রথম শতক

    টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের এর আগের সর্বোচ্চ ইনিংসটাও ছিল তাঁরই। ২০১২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে ১০ চার ও ২ ছয়ে করেছিলেন ৬১ বলে অপরাজিত ৮৮। ম্যাচটা হেরেছিল বাংলাদেশ। ২০১৬ সালের বিশ্বকাপে এসে মেহরাব হোসেন অপি, আমিনুল ইসলাম বুলবুলের পাশে নাম লেখালেন তামিম ইকবাল খান। ক্রিকেটের ক্ষুদ্রতর ফরম্যাটে দেশের হয়ে করলেন প্রথম সেঞ্চুরি। ওমানের সঙ্গেও মারলেন সেই ১০ চারই, ছয়ের সংখ্যাটা বেড়ে গিয়ে দাঁড়ালো ৫-এ। তামিম ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে সে ইনিংসের চেয়ে ২ বল বেশী খেললেন, করলেন ১৫ রান বেশী।

     

    তামিমের ‘নাম্বারস-গেম’!

    প্রথম বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন ক্রিস গেইল। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তামিমের সেঞ্চুরিটি সপ্তম। গেইল থেকে তামিম, টি-টোয়েন্টিতে ওপেনিংয়ে নেমে এটি ১১তম সেঞ্চুরি। সব মিলিয়ে তামিম টি-টোয়েন্টিতে সেঞ্চুরি পাওয়া ১৯তম ব্যাটসম্যান। তিন ফরম্যাটেই সেঞ্চুরি পেলেন তামিম, ১১তম ব্যাটসম্যান হিসেবে।

     

    বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ

    সব মিলিয়ে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে। ২০১২ সালে বেলফাস্টে ১৯০ রান করেছিল মুশফিকুর রহীমের দল। বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান ছিল পাকিস্তানের সঙ্গে, ২০১২ সালে পাল্লেকেল্লেতে এসেছিল ১৭৫। ওমানের সঙ্গে করা ১৮০ রান টপকে গেল সেই ম্যাচকে। টি-টোয়েন্টিতে উইকেট প্রতি সবচেয়ে বেশী রানের ইনিংসের তালিকায় এটি ১৮ নম্বর, সবার ওপরেও বাংলাদেশই! ২০১২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে ১ উইকেটে ১৭৯ রান করেছিল বাংলাদেশ, ম্যাচটা যদিও হারতে হয়েছিল ১৮ রানে।

     

    উদযাপন

    তামিমের উদযাপন বরাবরই উপভোগ্য। লর্ডসে সেঞ্চুরির পর বোর্ড এঁকে দেখানো, অথবা এশিয়া কাপে টানা ফিফটির পর আঙ্গুল গুণে দেখানো! টি-টোয়েন্টিতে দেশের প্রথম সেঞ্চুরিটাই বা বাদ যাবে কেন! লাফ দিলেন ব্যাট-হেলমেট ছুঁড়ে ফেলে, মাথায় হাত বুলিয়ে ইঙ্গিত করলেন ‘টেকো’ কোচ চন্দিকা হাথুরুসিংহের কথা। বিশ্বকাপ শুরুর আগে কোচকে  বলেছিলেন, এ বিশ্বকাপে একটা সেঞ্চুরি এনে দিবেন! তামিম কথা রাখলেন, উদযাপনও করলেন ‘তামিমীয়’ ভঙ্গিমাতেই!

     

    দিশেহারা স্লিংগার

    মুনিস আনসারির গল্পটা আবেগময়। খেলতে পারতেন ভারতের হয়েই, ভাগ্য শেষ পর্যন্ত পাশে থাকেনি ভারতীয় ‘স্লিঙ্গারের’। ভাগ্য বদলাতে গিয়েছেন ওমান, ক্রিকেটটা ছাড়েননি। শেষ ওভারে সাকিব আল হাসান প্রথম বলে মারলেন ছয়, পরের বলে চার। ছন্দপতন হলো আনসারির, পরের দুই বল অফস্ট্যাম্পের শুধু নয়, ক্রিজের বাইরে দিয়েই করলেন ওয়াইড। ওই ওভারে দিলেন ১৫, সব মিলিয়ে চার ওভারে ৫০। আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ দুই উইকেট নিয়েছিলেন, এবার থাকলেন উইকেটশূন্য। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ওমানের মতো দেশের পদচারণা কম, আনসারি নিজেই মানেন, ক্যারিয়ারে হয়তো এটিই শেষ ‘বিগ-ম্যাচ’।

    শেষটা ঠিক মনমতো হলো না এই ‘আন-অর্থোডক্স’ পেসারের!

     

    বেরসিক বৃষ্টি

    ধর্মশালা আর বৃষ্টি, দুজন দুজনার যেন! দিনের প্রথম ম্যাচটা নেমে এসেছিল ছয় ওভারে। বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস প্রায় ‘নির্বিঘ্নে’ শেষ হলেও ওমানের ইনিংসে ঠিকই হানা দিল বৃষ্টি! ধর্মশালায় নিরাপত্তার কারণে ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচ সরিয়ে নেয়া হয়েছে, বৃষ্টি কি মাথায় আছে আয়োজকদের?

     

    অতঃপর মূল পর্ব

    গ্রুপে ওমানের সাথে আয়ারল্যান্ড-নেদারল্যান্ডসের মত 'জায়ান্ট কিলার' থাকায় কিছুটা অস্বস্তির কাটা খচখচ করছিল অনেকের মধ্যে। শেষ পর্যন্ত সব সংশয় উড়িয়ে দিয়ে দাপটের সঙ্গেই চূড়ান্ত পর্বে পা রাখল বাংলাদেশ। ৫৪ রানে শেষ ম্যাচ জিতে একটা বার্তাও দিয়ে রাখল ভারত, পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডকে।