২২ গজের সেলুলয়েড : নাগালের বাইরে
নাগালের বাইরে
পঞ্চদশ ওভারের তৃতীয় বলে চার, পরের বলেও চার। খেই হারিয়ে ফেলা মাশরাফি পরের বল দিলেন ফুলটসে নো, আফ্রিদি স্কয়ার লেগ দিয়ে মারলেন ছয়। ফ্রি হিটে জায়গা বানিয়ে খেলতে গেলেন আফ্রিদি, মাশরাফি করলেন আফ্রিদির নাগালের বাইরে। আম্পায়ার ইয়ান গোউল্ড ওয়াইড দিলেন না, বিস্মিতই হলেন পাকিস্তান অধিনায়ক। এ যাত্রায় মাশরাফিই সফল, তবে পাকিস্তানকে নাগালের ভেতর পাওয়া হলো কই মাশরাফিদের!
দেখা হয়নি দুইশর মুখ
এর আগে একবারই টি-টোয়েন্টিতে ২০০ ছুঁয়েছিল পাকিস্তান। প্রায় আট বছর আগে করাচীতে বাংলাদেশের সঙ্গেই ২০৩ রান করেছিল শোয়েব মালিকের দল। আইসিসির পূর্ণ সদস্যের মধ্যে সবচেয়ে কম ২০০ রান করার তালিকায় পাকিস্তান আট নম্বরে। সবচেয়ে বেশী আটবার করে দুইশ ছুঁয়েছে অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা, পাঁচবার করে শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ইংল্যান্ড। চারবার ভারত ও নিউজিল্যান্ড। আফগানিস্তানও এ মাইলফলক ছুঁয়েছে দুইবার, আয়ারল্যান্ড ও জিম্বাবুয়েও একবার করে। শুধু বাংলাদেশই এখনও দেখেনি দুইশর মুখ!
ছয়ের আগেই আউট
সাব্বিরের বলে হাফিজের স্লগ সুইপটা মিড-উইকেট দিয়ে যাচ্ছিল ছয় হওয়ার পথেই। হাফিজ হয়তো তাই ভেবেছিলেন, তবে সৌম্যর চিন্তা ছিল ভিন্ন। বাঁদিকে গিয়ে দুহাতে ধরলেন, তবে ভার সামলাতে না পেরে চলে গেলেন বাউন্ডারির বাইরে। যাওয়ার আগে অবশ্য বলটা ছুঁড়ে দিয়ে গেলেন, বল ওপরে থাকতেই বাউন্ডারির ভেতরে এসে ধরলেন আবার। হাফিজ যেন বিশ্বাস করতে পারছিলেন না, যাঁরা দেখলেন বিস্মিত হলেন তো তাঁরাও!
তাঁদের ফিরে আসা
এর আগের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ক্যারিয়ারের একমাত্র টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরি করেছিলেন শেহজাদ। এ বিশ্বকাপে করলেন ফিফটি। ২০১৪ ও ২০১৫ সাল মিলিয়ে কোনো ফিফটি না পাওয়া হাফিজ পেলেন এ বছরের দ্বিতীয় ফিফটি। ১২ ম্যাচ আগে ত্রিশ পেরুনো ইনিংস(৪৫) খেলেছিলেন আফ্রিদি, এবার করলেন ১৯ বলে ৪৯। তিনজন মিলিয়েই তো স্কোরটাকে নিয়ে গেলেন বাংলাদেশের ধরাছোঁয়ার বাইরে!
সাব্বিরের কীর্তি
১৯ বলে ২৫ রান, সাব্বিরের ইনিংস ম্যাচে প্রভাব রাখতে পারলো কই! তবে এ রান দিয়েই এক বছরে ৪০০ এর বেশী টি-টোয়েন্টি রান হয়ে গেল তাঁর, প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে গড়লেন এ কীর্তি। সব মিলিয়ে সাব্বির এক বছরে ৪০০ রান করা নবম ব্যাটসম্যান তিনি।
তামিমের পর সাকিব
আগের ম্যাচে করেছিলেন তামিম, এবার সাকিব। টি-টোয়েন্টিতে সাকিবের রান হয়ে গেল ১০০০, ১৪ ম্যাচ পর পেলেন ফিফটিও। টি-টোয়েন্টিতে ১০০০ রান ও ৫০ উইকেট পাওয়া দ্বিতীয় ক্রিকেটার তিনি, শহীদ আফ্রদির আছে ১৩৬৪ রান ও ৯৫ উইকেট। তবে সাকিবের এই অর্জন ছোঁয়ার ম্যাচ যে শুধু একরাশ হতাশাই দিল তাঁকে!
মিলবে কি তাঁদের দেখা!
১৬ ম্যাচ আগে শেষ ৩০ পেরুনো ইনিংস খেলেছিলেন মুশফিকুর রহীম। ২০১৪ সালে ঢাকায় অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে করেছিলেন ৪৭ রান। ওয়ানডেতে আস্থা অর্জন করলেও টি-টোয়েন্টিতে যেন পাখা মেলেননি সৌম্য, ১৬ ইনিংসে ৩০ পেরুনো ইনিংস তাই তিনটি। শেষ ১০ ইনিংসে এশিয়া কাপে পাকিস্তানের সঙ্গে করেছিলেন ৪৮, তারপর সর্বোচ্চ ২০।
বিশ্বকাপের পরের ম্যাচগুলোতে বাংলাদেশ কি পাবে ‘প্রত্যাশিত’ মুশফিক ও সৌম্যকে?