চেনা নিউ জিল্যান্ড, অচেনা অস্ট্রেলিয়া
১৮ ওভার শেষে কাঁধে তোয়ালে, হাতে পানি নিয়ে ঢুকলেন অ্যারন ফিঞ্চ। এইতো কদিন আগেও অধিনায়ক ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার, টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে। আইসিসির টি-টোয়েন্টি র্যাংকিংয়ে এক নম্বর ব্যাটসম্যান তিনি, অথচ তাঁকেই এ ম্যাচে বইতে হচ্ছে পানি-তোয়ালে! সে ওভারে বল করতে এলেন মিচেল ম্যাকলেনাহান, প্রথম বলেই লং-অনে অ্যাডাম মিলনেকে ক্যাচ দিলেন মিচেল মার্শ। মিলনে দাঁড়িয়ে ছিলেন অস্ট্রেলিয়ান ডাগ-আউটের সামনে, তাঁর হাতে ক্যাচ যাওয়ার আগেই মাথায় হাত স্টিভেন স্মিথের! ফিঞ্চকে বাদ দিয়েও অস্ট্রেলিয়ার লাভ হয়নি, অধিনায়কের মাথায় হাত তো পড়বেই!
অস্ট্রেলিয়া বাদ দিয়েছে জশ হ্যাজেলউডকেও, তিনি জায়গা করে দিয়েছেন অ্যাডাম জামপা ও অ্যাশটন অ্যাগারকে। এর আগে মাত্র একটি টি-টোয়েন্টি খেলেছিলেন অ্যাগার, আজ তাঁকে দিয়ে মোটে এক ওভার করালেন স্মিথ! জ্যাম্পার অভিজ্ঞতা অ্যাগারের চেয়ে এক ম্যাচ বেশী, তবে তাঁকে দিয়েও ওই এক ওভারই করালেন অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক!
স্মিথ বা অস্ট্রেলিয়া যাই করেছেন, শেষ পর্যন্ত বিপক্ষে গেছে প্রায় সবই। খাওয়াজা-ওয়াটসনের ওপেনিং জুটি শুরু করেছিল ভালই, তবে এরপরই পথ হারানো শুরু। ওয়ার্নারকে পাঠানো হয়েছে মিডল-অর্ডারে, তাঁর আগে এসেছেন স্মিথ, ব্যর্থ হয়েছেন দুজনই! জেমস ফকনারের আগে এসেছেন অ্যাগার, পিটার নেভিল নেমেছেন দশ নম্বরে! কোনো ‘ফিনিশার’ই ‘ফিনিশ’ করতে পারেন নি, তাসমান প্রতিবেশীদের সঙ্গে প্রায় পাঁচ বছর পর টি-টোয়েন্টি খেলতে নেমে বিশ্বকাপে হার দিয়ে সূচনা করতে হয়েছে অজিদের।
চিত্রটা একেবারেই বিপরীত কিউই শিবিরে। ব্রেন্ডন ম্যাককালাম যেখানে শেষ করেছিলেন, কেন উইলিয়ামসন যেন শুরু করেছেন সেখান থেকেই। ভারতের সঙ্গে ম্যাচে তিন স্পিনার খেলিয়ে চমক দেখানো নিউ জিল্যান্ড আজ নেমেছিল দুই ‘স্পেশালিস্ট’ স্পিনার নিয়ে। বাদ দেয়া হয়েছিলে ন্যাথান ম্যাককালামকে, তাঁর বদলে দলে আসা মিচেল ম্যাকলানাহানই হয়েছেন ম্যাচসেরা! ১৯তম ওভারে দিয়েছেন ৩ রান, নিয়েছেন ২টি উইকেট! ট্রেন্ট বোল্ট আর টিম সাউদিকে বসিয়ে রেখে কাজ চালানো হচ্ছে কোরি অ্যান্ডারসন, গ্রান্ট এলিয়টকে দিয়ে। শেষ ওভারে দরকার ছিল ১৯ রান, অ্যান্ডারসন খরচ করেছেন ১০, উইকেট নিয়েছেন দুইটি। পেস টোটকাটা কাজে লেগেছে, সঙ্গে কাজে লেগেছে স্পিনও! মিচেল স্যান্টনার পরবর্তী ড্যানিয়েল ভেট্টোরি হয়ে ওঠার পথে বোধহয় গুটি গুটি পায়ে এগুচ্ছেন, ভারতকে চমকে দেয়ার পর এ ম্যাচেও নিয়েছেন দুই উইকেট, সঙ্গে ইশ শোধিরও আছে একটি। চার ওভারে ১৪ রান দিয়েছেন সোধি, নিজেকে যেন নতুন করে চেনাচ্ছেন এই লেগস্পিনার। সঙ্গে আবার অসাধারণ ফিল্ডিং করে ইন-ফর্ম খাওয়াজাকে করেছেন রান-আউট।
যে রস টেলরের ব্যাটে রান নেই, তিনিও অসাধারণ ক্যাচ নিয়ে জয়ে রেখেছেন অবদান।
বিস্তৃতি হয়েছে কিউইদের মুখের হাসি, ধর্মশালায় দিনটা ছিল তো তাদেরই!