আড়ালের রুমানা এবার তারকা হবেন?
পাদপ্রদীপের আলোয় খুব একটা কখনোই আসেননি। সালমা, জাহানারারা যেখানে মেয়েদের ক্রিকেটের বড় বিজ্ঞাপন, রুমানা আহমেদের নাম সেভাবে কখনোই উঠে আসে না। অথচ অনেকটা নিভৃতেই নিজের কাজটা ঠিকঠাক করে যাচ্ছেন বাংলাদেশের মেয়েদের দলের এই অলরাউন্ডার।
পরিসংখ্যানই সেই কথা বলবে। টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের মেয়েদের হয়ে সবার ওপরের দিকেই নাম থাকবে রুমানার। ২৮টি টি-টোয়েন্টি খেলে ৪০৪ রান করেছেন। তাঁর চেয়ে বেশি রান করেছেন শুধু সালমা। বল হাতেও সমানভাবে দলের জন্য অবদান রেখেছেন। অফ স্পিনে তুখোড়, ক্যারিয়ারে নিয়েছেন ১৮ উইকেট। বাংলাদেশের হয়ে এর চেয়ে বেশি উইকেট নেওয়ার কীর্তি আছে শুধু সালমা ও জাহানারার।
ক্যারিয়ারের শুরুটাই হয়েছিল চমক দিয়ে। ২০১১ সালে অভিষেক ওয়ানডেতেই পেয়েছিলেন ম্যাচসেরার পুরস্কার। এর পর বাংলাদেশের হয়ে সব ধরনের ক্রিকেটেই নিয়মিত মুখ। টি-টোয়েন্টিতে দেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি ২৮টি ম্যাচ খেলার রেকর্ডও তাঁর। সেখানে অবশ্য যৌথভাবে আছেন সালমা ও লতা মন্ডলও।
ব্যাটে-বলে বাংলাদেশের কত বড় ভরসা, সেটি নিয়মিত দেখাচ্ছেন এবারেও। আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে প্রস্তুতি ম্যাচে ৪ উইকেট নিয়ে দলের জয়ে বড় অবদান রেখেছিলেন। ভারতের সঙ্গে ২ উইকেট নিয়ে ছিলেন সফলতম বোলার। তবে ব্যাট হাতে নিজেকে এখনো সেভাবে মেলে ধরতে পারেননি। সামনের ম্যাচগুলোতে রুমানা নিশ্চয় সেই অতৃপ্তি রাখতে চাইবেন না।
অবশ্য এই পর্যায়ে উঠে আসতে কম সংগ্রাম করতে হয়নি। খুলনার এক রক্ষণশীল পরিবারে জন্ম, সেখান থেকে একজন মেয়ের ক্রিকেটার হয়ে ওঠা ছিল অকল্পনীয় ব্যাপার। খালিশপুরে একদিন ঝোঁকের বশেই গিয়েছিলেন ট্রায়াল দিতে। এর পর সেখানে টিকে যান। বড় ভাই, বোনের উৎসাহে ২২ গজের জীবনটাকে বেছে নিয়েছেন। এর পর আর পেছনে ফিরে তাকানো নয়। খুলনায় প্রথম বিভাগ খেলার পর ঢাকায় আসা, সেখানেও একটা একটা সিঁড়ি বেয়ে সাফল্যের শীর্ষে পৌঁছে যাওয়া।
তবে রুমানার সামনে এখন আরও বড় চ্যালেঞ্জ। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে বাংলাদেশ কিছু প্রাপ্তি নিয়ে ফিরতে পারবে কি না, তাঁর ওপরেই অনেকটা নির্ভর করছে।