২২ গজের সেলুলয়েড : এতো কাছে, তবু এতো দূরে...
ছবির পরে ছবি চলে নাকি তৈরী হয় সিনেমা। ক্রিকেট ম্যাচও তো তাই। টুকরো টুকরো অসংখ্য ছবি জন্ম নেয় যেখানে। ২২ গজ আর সবুজ ওই উদ্যানের ছবিগুলোকে যদি ধরা যেত সেলুলয়েডে!
ফ্লাই সৌম্য ফ্লাই-২
হারদিক পান্ডিয়ার শটটাতে কী ছিল না! পাওয়ার, প্লেসমেন্ট। তবে ছিলেন যে একজন সৌম্য সরকারও, স্কয়ার লেগে। বামদিকে দৌড়ে গেলেন, ঝাঁপিয়ে পড়লেন, বাঁহাতে নিলেন আরেকটা অসাধারণ ক্যাচ। পাকিস্তানের সঙ্গে ম্যাচে মোহাম্মদ হাফিজকে ফিরিয়েছিলেন একটা ‘ফ্লাইং’ ক্যাচে, ইডেন গার্ডেনসের পর চিন্নাস্বামীতেও উড়লেন সৌম্য!
রোহিতের ত্রাস
ক্রস-ব্যাটে খেলতে গিয়ে ক্যাচ দিলেন সাব্বির রহমানকে। রোহিত শর্মা আরেকবার আউট হলেন মুস্তাফিজুরের বলে। পাঁচ ম্যাচে চারবার। এর আগে ওয়ানডেতে তিনবার রোহিতের উইকেট নিয়েছিলেন মুস্তাফিজুর। টি-টোয়েন্টিতে একজন ব্যাটসম্যানকে সবচেয়ে বেশীবার আউট করার সংখ্যাটা চার, আফগানিস্তানের দাওলাত জাদরান জিম্বাবুয়ের চামু চাবাবাকে চারম্যাচেই আউট করেছিলেন চারবার। ইংল্যান্ডের গ্রায়েম সোয়ান ও নিউজিল্যান্ডের অ্যাডাম মিলনে অবশ্য পাকিস্তানের উমর আকমলকে চারবার আউট করতে নিয়েছেন আটটি করে ম্যাচ।
মিসের ওভার
প্রথম বলটা লেগস্ট্যাম্পের বাইরে, ফ্লিক করলেন তামিম। জাসপ্রিত বুমরাহ মিস করলেন বলটা, হলো চার। সে বলেই দৌড়াতে গিয়ে আবার নেহরার অবস্থানটা ‘মিস’ করলেন তামিম, ধাক্কা লেগে পড়েই গেলেন! পঞ্চম বলটা জোরের ওপর মারলেন তামিম, তবে দ্রুতগতির ক্যাচটা মিসই করলেন নেহরা!
আহা বুমরাহ
ম্যাচের প্রথম বলেই মিস-ফিল্ডিংয়ে দিলেন চার, পঞ্চম ওভারে অশ্বিনের বলে ফেললেন তামিমের ‘লোপ্পা’ ক্যাচ। পরের ওভারেই তাঁকে বোলিংয়ে আনলেন ধোনী। বুমরাহর আফসোসটা বাড়িয়ে দিতেই যেন তামিম ওই ওভারে মারলেন চারটি চার!
সৌম্যর অচেনা পজিশন
গত বছর জুনে ভারতের সঙ্গে একমাত্র টেস্টের প্রথম ইনিংসে ছয় নম্বরে নেমেছিলেন সৌম্য সরকার। ওপেনিং ছাড়া অন্য পজিশনে সৌম্যর সেটাই শেষবার ব্যাটিং। মোট ৩৭ আন্তর্জাতিক ম্যাচে ১০ বার ওপেনিং ছাড়া খেলেছেন সৌম্য, ভারতের সঙ্গে আজকের ম্যাচে নামলেন সাত নম্বরে!
মিসের চক্র
অশ্বিনের বলে পঞ্চম ওভারে তামিমের ক্যাচ ফেলেছিলেন বুমরাহ। সেই অশ্বিনই আবার একাদশ ওভারে সাকিবের ক্যাচ ছাড়লেন পান্ডিয়ার বলে। বাংলাদেশ ইনিংসে ক্যাচ মিস হয়েছে আরও একটি, প্রথম ওভারেই নেহরা নিজের বলেই ছেড়েছিলেন তামিমের ক্যাচ। অশ্বিন ‘দোষ’ দিতে পারেন বুমরাহকে, পান্ডিয়া দিতে পারেন অশ্বিনকে আর নেহরা চাইলে ‘দোষী’ ভাবতে পারেন নিজেকেই!
হায় তিন!
এর আগে ভারতের মাটিতে ভারতের সঙ্গে তিনটি ম্যাচ খেলেছিল বাংলাদেশ, তিনটিই ওয়ানডে, হেরেছিল তিনটিতেই। শেষটি হয়েছিল ২৫মে, ১৯৯৮ সালে। ভারতের সঙ্গে এর আগে চারটি টি-টোয়েন্টিতেও হারতে হয়েছিল। তবে প্রথম তিনটিকে চার বানানো হলো না!
শেষ ওভারে দরকার ছিল ১১ রান, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বলে চার মেরে মুশফিক তা নামিয়ে আনলেন দুই রানে। তবে শেষ তিন বলে শুধুই তিনটি উইকেটই দিয়ে আসলো বাংলাদেশ। পড়ে থাকলো ইতিহাস, পড়ে থাকলো জয়। রইলো শুধুই আক্ষেপ, তিন অথবা দুইয়ের!