দনঞ্জয়ার হ্যাটট্রিকের পর তাকে এক ওভারে ছয়টি ছয়ের স্বাদ দিলেন পোলার্ড
শ্রীলংকা ২০ ওভারে ১৩১/৯ (ইনশাংকা ৩৯, ডিকভেলা ৩৩; ম্যাককয় ২/২৫)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৩.১ ওভারে ১৩৪/৬ (পোলার্ড ৩৮, হোল্ডাড় ২৯*, লুইস ২৮, সিমন্স ২৬; হাসারাঙ্গা ৩/১২, দনঞ্জয়া ৩/৬২)
ফলঃ ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৪ উইকেটে জয়ী
টি-টোয়েন্টিতে পাগলাটে ম্যাচ আপনি অনেক দেখেছেন, কিন্তু এরকম কিছু সম্ভবত দেখেননি। একজন বোলার এক ওভারে হ্যাটট্রিক করার পরের ওভারে ছয় বলে ছয়টি ছয় খেয়েছেন- এরকম কিছু আসলে পাগলাটে বললেও কম বলা হয়। অ্যান্টিগায় আকিলা দনঞ্জইয়ার সেই অভিজ্ঞতাই হয়েছে, আর তাকে সেই অভিজ্ঞতা দিয়েছেন কাইরন পোলার্ড। আর খ্যাপাতে এক রানতাড়ায় শ্রীলংকাকে ৬ উইকেটে হারিয়ে প্রথম টি-টয়েন্টি জিতেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
ঘটনার শুরু ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসের চতুর্থ ওভারে। তার আগেই দুই ওপেনার এভিন লুইস ও লেন্ডল সিমন্স মিলে তুলে ফেলেছেন ৫২ রান, সেটাও মাত্র ১৯ বলে। লুইস মাত্র ৯ বলে করে ফেলেছেন ২৮ রান। আকিলা দনঞ্জয়াকে লং অফের ওপর দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে আউট হলেন। ক্রিজে এলেন গেইল, প্যাডে লাগল। আপিল হলো, কিন্তু আম্পায়ার আউট দিলেন না। রিভিউ নিয়েই গেইলকে এলবিডব্লু করলেন দনঞ্জয়া। অনেক দিন পর আন্তর্জাতিক ফেরাটা স্মরণীয় করে রাখতে পারলেন না গেইল।
হ্যাটট্রিক বল দনঞ্জয়ার, নিকোলাস পুরান অফ স্টাম্পের বাইরের বলটা খো৬চা দিয়ে ক্যাচ দিলেন উইকেটের পেছনে। দনঞ্জয়া উল্লাসে ফেটে পড়লেন, পেলেন হ্যাটট্রিক।
তবে নাটকের শুরু এক ওভার পর থেকে। এবার বল নিলেন দনঞ্জয়া, স্ট্রাইকে পোলার্ড। প্রথম বলটা স্লগ সুইপ করে ছয়, পরের বলটা মাথার ওপর দিয়ে। পরের বলটা স্টাম্পের বাইরে, আবারও ছয়। পোলার্ড তখনই বুঝলেন তার সামনে সুযোগ এসে গেছে। পরের দুই বলে আবারও ছয়, শেষ বলটা ডিপ মিডউইকেটের ওপর দিয়ে আবারও মারলেন পোলার্ড। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এর আগে এক ওভারে ছয়টি ছক্কা ছিল শুধু হার্শেল গিবস ও যুবরাজ সিংয়ের। এবার হলো পোলার্ডের। কী অবিশ্বাস্য, হ্যাটট্রিকের পর এই অভিজ্ঞতা হলো দনঞ্জয়ার। যেটা হয়তো ক্রিকেট ইতিহাসেই আর কারও হবে না।
তবে ম্যাচের নাটক তখনো অনেক বাকি। পাওয়ারপ্লেতে ৬ ওভারে ৯৮ রান উঠে গেছে, মনে হচ্ছিল শ্রীলংকার ১৩২ রানের টার্গেট টপকাতে বেশি সময় নেবে না ওয়েস্ট ইন্ডিজ। যদিও তার আগে চলে গেছে ৪ উইকেট। কিন্তু পোলার্ড আউট হয়ে গেলেন হাসারাঙ্গার বলে, এর পরের বলে ফাবিয়ান আলেনও আউট। হাসারাঙ্গাও হ্যাটট্রিকের সামনে, যদিও সেটা হয়নি। কিন্তু হঠাৎ করেই শ্রীলংকার দৃষ্টিসীমায় জয়।
কিন্তু জেসন হোল্ডার আর কোনো বিপদ হতে দিলেন না। রান রেট নিয়ে সমস্যা ছিল না, কিন্তু উইকেটই ছিল সমস্যা। ডোয়াইন ব্রাভোর সঙ্গে বাকি সময়টা কাটিয়ে দিলেন ক্রিজে। তবে এর আগেই আবার দনঞ্জয়ার বলে ড্রপড হয়েছেন হোল্ডার, সেটা হলে ম্যাচের ফল অন্যরকমও হতে পারত। বলের হিসেবে প্রায় সাত ওভারের কাছাকাছি রেখে জিতেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, কিন্তু কোনোভাবেই সেটা সহজ বলা যাবে না।
তার আগে শ্রীলংকাকে ১৩২ রানে বেঁধে রেখেছিলেন উইন্ডিজ বোলাররা। সবাই কমবেশি ভালো বল করেছেন, ওবেদ ম্যাককয় নিয়েছেন ২ উইকেট। নিরোশান ডিকভেলা ও নবাগত পাথুম নিশাংকা শুরুটা ভালো করেছিলেন, কিন্তু ধরে রাখতে পারেননি। তখনও কে জানত, ম্যাড়ম্যাড়ে শ্রীলংকার ইনিংসের পর এমন চমক অপেক্ষা করছে?