২২ গজের সেলুলয়েড : বল করো তো দেখি!
বল করো তো দেখি!
স্ট্যাম্প ছেড়ে দিয়ে সরে দাঁড়ালেন। একটু সরে না, সরতে সরতে প্রায় রিটার্ন ক্রিজই ছুঁয়ে ফেললেন স্টিভেন স্মিথ। ফাঁকা স্ট্যাম্পে বল না করে ওয়াহাব রিয়াজ অনুসরণ করতে গেলেন স্মিথকে, করতে চাইলেন ইয়র্কার। হলো ফুলটস, ওখানে দাঁড়িয়েই স্মিথ ঘুরালেন। মিড-উইকেট দিয়ে চার!
বল করো তো দেখি- আফ্রিদি 'ভার্সন'
বল করার আগেই স্ট্যাম্প থেকে সরে গিয়েছিলেন, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল তা দেখে বলটাই করলেন না! পরের বলে আবার লেগ স্ট্যাম্প থেকে সরে এলেন শহীদ আফ্রিদি, ম্যাক্সওয়েল এবার বল করলেন। ফুল লেংথের বল, আফ্রিদি লং-অনের ওপর দিয়ে পাঠালেন বাউন্ডারিতে, ছয়! পরের ওভারে ন্যাথান কোলটার-নাইল করলেন একটা শর্ট বল, আফ্রিদি করলেন ডাক। পরের বলে আবার শর্ট, আফ্রিদি এবার পুল করতে চাইলেন। টাইমিং হলো ঠিকমতো, তবে ফিল্ডারের সামনে পড়ায় বেঁচে গেলেন পাকিস্তান অধিনায়ক। পরের ওভারের প্রথম বল, অ্যাডাম জ্যামপাকে ডাউন দ্য গ্রাউন্ডে এসে মারলেন ছয়। পরের বল জ্যামপা শর্ট করলেন, বল একটু টার্ন করলো। আফ্রিদি এগিয়ে এসেছিলেন আবারও। এবার করলেন মিস, হলেন স্ট্যাম্পড!
আমীরের শূন্য হাত
২০১০ সালে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে চারটি টি-টোয়েন্টি খেলেছিলেন মোহাম্মদ আমীর। স্পট-ফিক্সিংয়ের দায়ে এরপর নিষিদ্ধ হলেন, অন্য সব দলের মতো অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গেও খেলা হলো না তাঁর। আগের চার ম্যাচ মিলিয়ে পেয়েছিলেন ১২ উইকেট, প্রত্যেকটিতেই তিনটি করে। চার ম্যাচে সর্বোচ্চ রান দিয়েছিলেন ৩৫, চার ওভারে। আজ আবার অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে নামলেন, দিলেন পাঁচ ম্যাচের মধ্যে সর্বোচ্চ ৩৯ রান। তবে তিনটি কেন, একটি উইকেটেরও দেখা পেলেন না আমীর! অস্ট্রেলিয়া তাঁকে ফেরালো এবার শূন্য হাতেই।
স্মিথের পূর্ণ হাত
পাকিস্তানের সঙ্গে এর আগে পাঁচটি টি-টোয়েন্টি খেলেছিলেন স্মিথ। ৮, ০, ৫, ১২, ৩ রান করে করেছিলেন পাঁচ ইনিংসে। গড় ছিল ৫.৬০। বাঁচা-মরার ম্যাচে ব্যাট করতে নামলেন, করলেন ৪৩ বলে ৬১। মোহালি দুহাত ভরিয়ে দিল স্মিথকে, ঠিক আমীরের উল্টো!
হলো না ‘দেঁজা-ভু’
১২ বলে দরকার ছিল ৩৪, পাকিস্তানকে হারাতে হলে অস্ট্রেলিয়াকে করতে হতো ১৯২ রান। একজন মাইক হাসি যেন হয়ে উঠলেন সুপারম্যান, মোহাম্মদ আমীরের ওভারে নিলেন ১৬। শেষ ওভারের প্রথম বলে জনসন একটা সিংগেল নিলেন, তারপর হাসির দুঃস্বপ্ন উপহার দেয়ার পালা, সাঈদ আজমলকে। এক বল বাকী থাকতেই জিতে গেল অস্ট্রেলিয়া! আজ পাকিস্তানকে জিততে হলে করতে হতো ১৯৪ রান, ১২ বলে লাগতো ৪৪ রান। শোয়েব মালিক বা সরফরাজ আহমেদের কেউ মাইক হাসি হয়ে উঠতে পারলেন না, বিশ্বকাপ থেকেও বিদায় নিতে হলো তাঁদের!
ফকনারের পাঁচ
টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে এর আগে সেরা বোলিং ফিগার ছিল শেন ওয়াটসনের। ২০১১ সালে অ্যাডিলেডে ইংল্যান্ডের সঙ্গে ৪ ওভারে ১৫ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন ওয়াট্টো। আজ প্রথম অস্ট্রেলীয় বোলার হিসেবে ইনিংসে ৫ উইকেট নিলেন জেমস ফকনার, ভেঙ্গে দিলেন ওয়াটসনের রেকর্ডও। টি-টোয়েন্টিতে এর আগে ইনিংসে ৫ উইকেট আছে ১৬ বার, সেরা ফিগার শ্রীলঙ্কার অজন্তা মেন্ডিসের, ৮ রানে ৬ উইকেট। দ্বিতীয় সেরা বোলিং ফিগারটাও মেন্ডিসেরই, ১৬ রানে ৬ উইকেট!