২২ গজের সেলুলয়েড : এ শুধু বোল্ডের দিন
ছবির পরে ছবি চলে নাকি তৈরী হয় সিনেমা। ক্রিকেট ম্যাচও তো তাই। টুকরো টুকরো অসংখ্য ছবি জন্ম নেয় যেখানে। ২২ গজ আর সবুজ ওই উদ্যানের ছবিগুলোকে যদি ধরা যেত সেলুলয়েডে!
ক্রিকেটে রাগবির ছোঁয়া
মাহমুদউল্লাহ বল করছিলেন রাউন্ড দ্য উইকেটে। কলিন মানরো পয়েন্টে ঠেলে দিয়েই রান নেয়ার জন্য ছুটলেন, ছুটলেন এপাশ থেকে রস টেলরও। মাঝপথে মানরো একটু ডানদিকে কাটলেন, আর টেলর তাঁর দিক থেকে বামদিকে। ফল- দুই ব্যাটসম্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষ! টেলরের হেলমেট খুলে গেল, তেমন আঘাত অবশ্য পাননি। ফিল্ডার মাশরাফিও ক্ষণিকের জন্য দ্বিধায় ছিলেন, থ্রোটা করবেন কোনদিকে! টেলর-মানরোর যাত্রাপথে যতই বিড়ম্বনা হোক, শেষ পর্যন্ত ম্যাচের সর্বোচ্চ রানের জুটিটা তাঁদেরই!
অবাক বোল্ড
গ্রান্ট এলিয়টের লেগকাটারটা মিস করলেন মুশফিকুর রহিম। লুক রনকি বলটা ধরেই উল্লাস শুরু করে দিলেন, প্রথমে মনে হলো সৌম্যর মতো হয়তো মুশফিকও স্ট্যাম্পডের ফাঁদে পড়েছেন। কিছুটা অবাক হলেন এলিয়টও, তবে মুশফিক বোধহয় ঠিকই বুঝেছিলেন! বলটা রনকির হাতে যাওয়ার আগে যে ছুঁয়ে গিয়েছিল অফস্ট্যাম্প!
এ শুধু বোল্ডের দিন
ইডেনের পিচ যেন ব্যাটসম্যানের জন্য মৃত্যুকূপ! নইলে কি আর দশ দশজন ব্যাটসম্যান বোল্ড হন! নিউজিল্যান্ড ইনিংসেই ছয়জন বোল্ড হয়ে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ বোল্ডের রেকর্ড ছুঁয়েছিলেন। বাংলাদেশ ইনিংসে বোল্ড হলেন আরও চারজন, ভেঙ্গে গেল টি-টোয়েন্টি ম্যাচে সবচেয়ে বেশি বোল্ডের রেকর্ড; আগেরটিতেও আছে বাংলাদেশের নাম। খুলনায় ২০০৬ সালে বাংলাদেশের অভিষেক টি-টোয়েন্টি ম্যাচে জিম্বাবুয়ের সাথে ম্যাচে দুইদলের মোট ৮ জন ফিরেছিলেন বোল্ড হয়ে!
মুস্তাফিজের পাঁচ
এলেন চতুর্থ ওভারে। কাটারে পরাস্ত হলেন নিকোলস। নবম ওভারে বলটা স্কয়ার লেগে ল্যাপ করতে চাইলেন উইলিয়ামসন, তিনিও হলেন বোল্ড! ১৮তম ওভারে তুলে মারতে গেলেন এলিয়ট, উল্টো ঘুরে অসাধারণ ক্যাচ নিলেন মিঠুন। শেষ ওভারের চতুর্থ ও পঞ্চম বলে বোকা বনলেন স্যানটনার ও ম্যাককালাম। চার ওভারে মুস্তাফিজ নিলেন পাঁচ উইকেট, টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবারের মতো। এর আগে বাংলাদেশের হয়ে পাঁচ উইকেট ছিল শুধু ইলিয়াস সানির, আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে নিজের অভিষেক ম্যাচেই সানি নিয়েছিলেন ১৩ রানে ৫ উইকেট।
মুস্তাফিজের ছয়
ইনিংসের শেষ বলে মিচেল ম্যাকগ্লানাহান মেরেছিলেন ছয়, তাঁর বলেই। ব্যাটিংয়ে নেমে যেন সেটাই ফিরিয়ে দিতে চাইলেন, গ্রান্ট এলিয়টকে মারলেন ছয়, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো! তবে ছয়ের আনন্দটা বেশীক্ষণ টিকলো না বাংলাদেশের বোলিং বিস্ময়ের, পরের বলেই যে হলেন বোল্ড!
এত কম!
২০১৪ সালে চট্টগ্রামে নেদারল্যান্ডসকে ৩৯ রানে অলআউট করেছিল শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশের এর আগে টি-টোয়েন্টিতে সর্বনিম্ন রান ছিল নেদারল্যান্ডসের সর্বনিম্ন রানের দ্বিগুন, ৭৮। ২০১০ সালে হ্যামিল্টনে নিউজিল্যান্ডের কাছেই ১৭.৩ ওভারেই অলআউট হয়েছিল বাংলাদেশ। আজ কলকাতায় নিজেদের রেকর্ডটা আরও আটরান নামিয়ে আনলো বাংলাদেশ, ১৫.৪ ওভারে ৭০ রান করতেই প্যাভিলিয়নে ফিরে গেলেন সব ব্যাটসম্যান!