• পাকিস্তানের ইংল্যান্ড সফর, ২০১৬
  • " />

     

    নেট সেশন : সব ছাপিয়ে আমীরই?

    নেট সেশন : সব ছাপিয়ে আমীরই?    

    পাকিস্তানের অচেনা বিভুঁই

    ২০১০ সালে ইংল্যান্ড সফরের পর থেকে পাকিস্তান এশিয়ার বাইরে টেস্ট খেলেছে মোটে সাতটি। জিম্বাবুয়েতে দুইটি টেস্ট, আর নিউজিল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও দক্ষিণ আফ্রিকায় তিনটি সিরিজ। শুধু ইংলিশ কন্ডিশন বলে নয়, অ-এশীয় কন্ডিশনই তো টেস্টের তিন নম্বর দলটার জন্য একটা চ্যালেঞ্জ!

     

    বলের হাতে নতুন বল

    জেমস অ্যান্ডারসনে দ্বিতীয় টেস্ট খেলবেন, প্রথম টেস্টে ইংল্যান্ড পাচ্ছে না তাঁকে। জিমির জায়গায় অভিষেক হচ্ছে জেক বলের। নটিংহ্যাম্পশায়ারের এই পেসারের পরিবারেই আছে ক্রিকেট ইতিহাস, তাঁর মামা ব্রুস ফ্রেঞ্চ ইংল্যান্ডের হয়ে ১৬টি টেস্ট খেলেছিলেন, এখন উইকেটকিপিং কোচ।
    বলের অভিষেকটা হয়ে যেতে পারতো শ্রীলঙ্কার সঙ্গেই। তবে হোম অব ক্রিকেটেই স্টুয়ার্ট ব্রডের সঙ্গী হয়ে নতুন বল হাতে নিতে যাচ্ছেন বল!

     

    তিনে কে?

    দলের সেরা ব্যাটসম্যান তিন নম্বরে খেলেন, টেস্ট ক্রিকেটের বহুল প্রচলিত প্রবাদ। ইংল্যান্ডের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা ব্যতিক্রমই হচ্ছিল। অ্যালেস্টার কুক ওপেনিংয়ে, তা বাদে জো রুটের আবার পছন্দ চার। শ্রীলঙ্কা সিরিজে একরাশ হতাশা উপহার দেয়া নিক কম্পটন অনুমিতভাবেই বাদ পড়েছেন, আপাতত ক্রিকেট থেকেই দূরে আছেন ইংলিশ ক্রিকেটের ‘বিখ্যাত নাতী’। দলে ফিরেছেন গ্যারি ব্যালান্স, তবে তিনি খেলতে পারেন পাঁচ নম্বরে। জেমস ভিনস খেলবেন চারে, ‘সেরা’ রুটকেই আসতে হবে তিনে!

     

     

     

    আমীরের ‘অভিষেক’

    ২০১০ সালে ক্রিকেটে কলঙ্কের কালো দাগ লেপটানো তিন ক্রিকেটারের একজন মোহাম্মদ আমীর। স্পট-ফিক্সিংয়ের দায়ে প্রথমে জেল খেটেছেন, নিষিদ্ধ ছিলেন বছর পাঁচেক। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেছেন এরপর, সব পেছনে ফেলে। তবে সাদা পোশাকে ফিরছেন প্রায় ছয় বছর পর। এই লর্ডসেই শেষ টেস্টটি খেলেছিলেন আমীর। সেই সফরের অস্ট্রেলিয়ার সংগেও দুইটি টেস্ট খেলেছিল পাকিস্তান, সব মিলিয়ে ইংল্যান্ডের মাটিতে আমীরের রেকর্ডটা ‘অসাধারণ’ই। ৬ ম্যাচে ১৯.৮০ গড়ে ৩০ উইকেট আছে আমীরের।
     

    তাঁরও ফেরা

    শেন ওয়ার্ন বেশ উচ্ছ্বসিত ছিলেন তাঁকে নিয়ে। পাকিস্তানও নতুন আশায় বসতি বেঁধেছিল ইয়াসির শাহে ভর করে। কিন্তু চিরায়ত পাকিস্তানী নিয়ম মেনেই যেন বিতর্কে জড়িয়ে গেলেন ইয়াসির, ডোপ টেস্টে পজিটিভ হয়ে নিষিদ্ধ হলেন তিন মাস। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপটাও মিস করেছেন। নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে, চোটের আশঙ্কা থেকেও মুক্তি পেয়েছেন। লর্ডসে তাই ফিরছেন ইয়াসির শাহও!

     

    পেসের লড়াই 

    লর্ডসের উইকেট তুলনামূলকভাবে 'ফ্ল্যাট'ই। তবে দিন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বদলায় এর আচরণ। একটা শক্ত পেস আক্রমণ হোম অব ক্রিকেটে বেশ সহায়তাই করে। অস্ট্রেলিয়া এর প্রমাণ। পাকিস্তানের পেস আক্রমণ নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই, আমীর ও রিয়াজের সঙ্গে আরেক বাঁহাতি রাহাত আলীই হয়তো সুযোগ পাবেন। ওদিকে আছেন ব্রড, বল, ফিন। পেস আর সুইংয়ের লড়াইটা গোটা সিরিজেই আকর্ষণীয় হওয়ার কথা, শুরুটা হয়ে যেতে পারে লর্ডসেই! 

     

    তাঁদের ‘শেষ’ পরীক্ষা

    দুজনের মিলিত বয়স ৮০। মিসবাহ-উল-হক ও ইউনুস খান, দুই ‘বুড়ো’র ব্যাটের ওপর পাকিস্তানের ভার তাই বলে কম নয়! ১৫টি সেঞ্চুরি জুটি আছে তাঁদের, ২০১০ সালে পাকিস্তানের শেষ বিতর্কিত ইংল্যান্ড সফরের পর থেকে দুজন মিলেই ধরেছেন দলের হাল। মিসবাহ অধিনায়ক, তবে তাঁর সবচেয়ে বড় শক্তির নামটা ইউনুস খানই। দুজনেরই একটা আক্ষেপ রয়ে গেছে, ইংল্যান্ডের মাটিতে সিরিজ জেতা হয়নি কারোরই! ইউনুসের আক্ষেপটা বেশী, এর আগে দুইটি সিরিজ খেলেছেন ইংল্যান্ডের মাটিতে। তবে লর্ডস টেস্টই হবে মিসবাহর ইংল্যান্ডের মাটিতে প্রথম টেস্ট!

     

    এবার কোন বিতর্ক?

    পাকিস্তান-ইংল্যান্ড সিরিজ মানেই যেন বিতর্কের পসরা! ১৯৮৭ সালে গ্যাটিং-শাকুর রানা ‘গন্ডগোল’, ১৯৯২ সালে রিভার্স সুইংকে প্রতারণা বলা। ২০০০ সালে করাচীতে প্রায় অন্ধকারের হওয়া টেস্ট ম্যাচ, ২০০৬ সালে ‘ওভালগেট’ কেলেঙ্কারী। আর ২০১০ তো ছাপিয়ে গিয়েছিল সবকিছুকে।

    আরব আমিরাতের মাটিতে দুইদলের সিরিজটা হয়েছে প্রায় নির্ঝঞ্চাটই, ফিরতি সিরিজই কি থাকবে তেমনই?