• ইংল্যান্ড-পাকিস্তান
  • " />

     

    ২০ বছর পর পাকিস্তান!

    ২০ বছর পর পাকিস্তান!    

    কয়েকটা 'ফাইল' করে দাঁড়ালেন সবাই। সামনে থেকে ইউনুস খান 'কমান্ড' দিচ্ছেন, কে কার পাশে যাবে, কে সামনে, কে পেছনে। সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে 'পুশ-আপ' দেয়া শুরু করলেন। পাঁচবার। উঠে দাঁড়িয়ে আবার সটান, এবার স্যালুট। মিসবাহ-উল-হক সেঞ্চুরির পর যে উদযাপন করেছিলেন, তারই বর্ধিত রুপ যেন দেখালেন সব পাকিস্তানী ক্রিকেটার মিলে। মিসবাহ যেখানে সাধারণ সৈনিক, 'জেনারেল' ইউনুস। স্কোয়াডের সব সদস্য মিলে লর্ডসকে দেখালেন অনন্য এক উদযাপন। অবশ্যই সফরের আগে কাকুলে 'আর্মি-ক্যাম্প' এর সদস্যদের প্রতি সম্মান। শুধু সেই সৈনিকদের সম্মান নয়, পাকিস্তানের এ উদযাপনে যেন মিশে থাকলো এই বার্তাও, 'শুধু আরব আমিরাত নয়, পাকিস্তান টেস্ট দল এখন যে কারও প্রতি হুমকিস্বরুপ, বিশ্বের যে কোনো প্রান্তে'! 

     

     

    উদযাপনে হয়তো এটিও মিশে ছিল, ২০ বছর পর ক্রিকেটের মক্কায় জয় পাওয়ার তৃপ্তি। ১৯৯৬ সালে ক্রিকেটের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ভেন্যুতে ইংল্যান্ডকে শেষবার হারিয়েছিল পাকিস্তান। মুশতাক আহমেদ দুই ইনিংস মিলে নিয়েছিলেন ৬ উইকেট, শেষ লেগস্পিনার হিসেবে নিয়েছিলেন ইনিংসে পাঁচ উইকেট। ইয়াসির শাহ সেই কীর্তি গড়েছিলেন নতুন করে প্রথম ইনিংসেই, এবার দ্বিতীয় ইনিংসে নিলেন ৪ উইকেট। দুই ইনিংস মিলিয়ে ১০ উইকেট, পাকিস্তানও লর্ডসে জিতলো চতুর্থবারের মতো। লর্ডসে অস্ট্রেলিয়ার (১৫-৭) পরই এখন পাকিস্তানের জয়ের হার সবচেয়ে বেশী(৪-৪)! 

     

     

    অথচ দিনের শুরুতে একটু ফিরে আসারই ইঙ্গিত দিয়েছিল ইংল্যান্ড। শেষ দুই ব্যাটসম্যানকে ২.১ ওভারের মধ্যেই ফিরিয়ে কাজটা ব্যাটসম্যানদের ওপর দিয়েছিলেন ইংলিশ বোলাররা। কুক-হেলসের শুরুটা ভালই ছিল, প্রথম ৬ ওভারের প্রত্যেকটিতেই এসেছে বাউন্ডারি! বল পুরোনো হয়ে গেলে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবেন ইয়াসির, শুরুতেই বেশী রান তোলার পরিকল্পনাতে সফলই ছিল ইংল্যান্ড। তবে বেশী শট খেলার মাশুলও গুনতে হয়েছে, রাহাত আলীই নিয়েছেন প্রথম তিন উইকেট। ইয়াসির শাহ দৃশ্যপটে হাজির এরপরই। প্রথম ইনিংসের মতোই যথারীতি ইয়াসিরের কোনো জবাব জানা নেই ইংলিশদের! গ্যারি ব্যালান্স ও মঈন আলীকে যে দুইটি বলে বোল্ড করলেন, ধারাভাষ্য কক্ষে থাকা শেন ওয়ার্নেরও নিশ্চয়ই তাতে গর্ব হয়েছে! 

    ভিনস, ব্যালান্স, বেইরস্টোর তিনটি চল্লিশ পেরোনো ইনিংস শুধু আশাই দিয়েছে ইংল্যান্ডকে। নাটক জমেছে, রিভিউ নিয়ে বেঁচেছেন ব্যাটসম্যানরা, ক্যাচ পড়েছে একটু সামনে। জেক বলকে বোল্ড করে ইংলিশ কফিনে শেষ পেরেক ঠুকেছেন এ ম্যাচ দিয়েই টেস্ট ক্রিকেটে ফেরা মোহাম্মদ আমির। ছয় বছর আগে যেখানে তিনি নিজেই নিজের এপিটাফ লিখেছিলেন, সেখানেই আজ ম্যাচে ইংল্যান্ডের শেষ ঘোষণা করলেন! 

    জিতলো পাকিস্তান। তবে প্রথম ইনিংসে মিসবাহর সেঞ্চুরি, আমিরের ফেরা বা রাহাত আলীর বোলিং ছাপিয়েও যেন একটি নামই মনে রাখবে সবাই! 

    ইয়াসির শাহ। আর মনে রাখবে তাঁর ১০ উইকেট!