আসলামে আস্থা, আজহারেও আস্থা
পুশ-আপ যেন পাকিস্তানের ‘দলীয়’ উযযাপন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। মিসবাহ শুরু করেছিলেন লর্ডস টেস্টে, লর্ডস টেস্টে জিতে পুরো দল, এজবাস্টনে পাঁচ উইকেট পেয়ে সোহেল খান। এবার আজহার আলি। ড্রেসিংরুমে স্যালুট ঠুকে শুরু করলেন ‘পুশ-আপ’ দেয়া, ড্রেসিংরুমে মিসবাহর মুখের হাসিটা প্রশস্তই হলো শুধু। এই উদযাপনের আগে অবশ্য বুনো উল্লাসে মেতেছিলেন পাকিস্তানের তিন নম্বর ব্যাটসম্যান। আগের চার ইনিংস মিলিয়ে ৩৯ রান, আজহারের ব্যাটে হাসি ছিল কই! সেই আজহার এক ইনিংসেই করলেন আগের চার ইনিংসের চেয়ে ১০০ রান বেশী! সব মিলিয়ে দশম হলেও এশিয়ার বাইরে আজহারের এটিই প্রথম সেঞ্চুরি!
৩৮ রানে স্লিপে জো রুট ক্যাচ ফেললেন, জীবন পেয়ে যেন আরও স্থিতধি হয়ে গেলেন আজহার। ১২৭ বলে ফিফটি। ৬৯ রানে আরেকবার জীবন পেলেন, ফিরতি ক্যাচটা ঠিক হাতে জমাতে পারলেন না মঈন আলি। আজহার এরপর করলেন সেঞ্চুরি। তবে দিনের শেষ বলে আজহারকে আরেকটা জীবন উপহার দেয়ার বিলাসিতা করলেন না অ্যালেস্টার কুক। ১১ রানের জন্য ‘ড্যাডি-হান্ড্রেড’ মিস করে গেলেন।
আজহার তবুও সেঞ্চুরির উল্লাসে মেতেছেন, সামি আসলামের হতাশাটা একবার বুঝুন! সেঞ্চুরি থেকে ১৯ রান দূরে থামতে হয়েছে ২০ বছর বয়সী পাকিস্তানী ওপেনারকে। হয়েছেন রান-আউট! আজহারের ইনিংসটা যদি তাঁর ফর্মে ফেরা হয়, সামির ইনিংসটা তবে টেস্টের নিজের ভিত গড়ার একটা আভাস! বয়সভিত্তিক পর্যায়ে পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দলের এককালের অধিনায়কের প্রথম শ্রেণির শুরুটা কিন্তু আশাজাগানিয়াই ছিল! প্রথম ৩০ ম্যাচে ফিফটির(৪) চেয়ে ছিল সেঞ্চুরিই(৬) বেশী!
সামি আসলাম- পাকিস্তানের ওপেনিং ভরসা?
বাংলাদেশের সঙ্গে গত বছর টেস্ট অভিষেক, তবে সে আশাপূরণের আভাস তখন দিলেন কই! ২ টেস্টে ৩ ইনিংস মিলিয়ে ৪৭ রান, সর্বোচ্চ ২০! ইংল্যান্ড সফরে দলের সঙ্গেই ছিলেন, কিন্তু খেলার সুযোগ যে এভাবে পাবেন, সেটা কি আশা করেছিলেন সামি? শেষ প্রথম শ্রেণির ম্যাচটা খেলেছিলেন সেই গত বছরের ডিসেম্বরে, পাকিস্তান যে তাঁকে নিয়ে বাজি খেলবে, এটাও তো নিশ্চিত ছিল না। এমনি এজবাস্টন টেস্টের আগে উরচাস্টারশায়ারের সঙ্গে ম্যাচেও এক ইনিংসে করেছিলেন ১৭ রান। শান মাসুদ ঠিকই করেছিলেন ফিফটি।
সেই মাসুদের জায়গাতেই খেললেন সামি। আজহারের চেয়ে চার ইনিংস মিলিয়ে মাসুদের রানই ছিল বেশী(৭১), তবে আউট হওয়ার ধরণগুলোই যেন বিপক্ষে কথা বলেছিল তাঁর! প্রথম টেস্টে ওকস, দ্বিতীয় টেস্টে অ্যান্ডারসন, দুইজন মিলেই মাসুদকে আউট করেছেন চারবার! পাকিস্তান তাই ঝুঁকিটা নিয়েই নিল। যুব ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশী রান সংগ্রাহকের দুই নম্বরে থাকা সামিকে এজবাস্টনে নামিয়ে(যুব ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশী রানের রেকর্ড বাংলাদেশের নাজমুল হোসাইন শান্তর, ১৮২০)।
সামি আসলাম তাঁর প্রতিভার প্রতি নির্বাচকদের আস্থার প্রতিদান দিলেন, আজহার আলি আরেকবার জানান দিলেন, তাঁর ওপর আস্থাটাও এখনই না হারিয়ে ফেলতে।
আসলাম-আজহারের ইনিংসে ভর করে তো এজবাস্টন টেস্টে 'আপাতত' বড় রকমের আস্থা পাচ্ছে পাকিস্তানও!