স্করপিয়ন কিকের একাল-সেকাল!
নতুন বছরের প্রথম দিন ক্রিস্টাল প্যালেসের বিপক্ষে অদ্ভুত দর্শন এক গোল করেছেন আর্সেনালের ফরাসী স্ট্রাইকার অলিভিয়ের জিরু। গত সপ্তাহে সান্ডারল্যান্ডের সাথে বক্সিং ডে’র ম্যাচে প্রায় একই ধরনের গোল করেছিলেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হেনরিখ মিখিতারিয়ান। তবে জিরু-মিখিতারিয়ানের স্করপিয়ন কিক কিন্তু ফুটবলে নতুন নয়।
কোথা থেকে এসেছে স্করপিয়ন কিক? জনক কে? – এসব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া মুশকিল। তবে ফুটবলের বড় মঞ্চে স্করপিয়ন কিককে প্রথম চিনিয়েছিলেন কলম্বিয়ার গোলরক্ষক রেনে হিগুইতা। ১৯৯৫ সালের সেপ্টেম্বরে ইংল্যান্ডের সাথে এক প্রীতি ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে জেমি রেডন্যাপ ক্রস করেন পল গ্যাসকোয়েনের উদ্দেশ্যে। কিন্তু ইংলিশ মিডফিল্ডারের লক্ষ্যভ্রষ্ট সেই ক্রস অল্প গতিতে ভাসতে ভাসতে গোলমুখের দিকে যাচ্ছিল। অবশ্য গ্যাসকোয়েন অফসাইডে থাকায় লাইন্সম্যান সাথেসাথেই পতাকা ওঠালেও দেখতে পাননি রেফারি। ঝাঁকড়া চুলের হিগুইতা চাইলেই পারতেন বল ধরে খেলা আবার শুরু করতে। কিন্তু সবাইকে হতভম্ব করে শরীরটা শূন্যে ভাসিয়ে দুপা উল্টো করে তুলে দিলেন মাথার উপরের উচ্চতায়। তারপর বলটাকে দু পায়ের গোড়ালি দিয়ে কিক করে ক্লিয়ার করলেন। কাঁকড়াবিছা আক্রমণের সময় লেজকে বাঁকিয়ে ধরে বিষাক্ত হুল ফোটায়। কাঁকড়াবিছার সেই আক্রমণের নামানুসারে এই কিক পরিচিতি পায় স্করপিয়ন কিক হিসেবে। অনেক বছর পর এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, রাস্তায়-পার্কে ফুটবল খেলা বাচ্চাদের থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই চেষ্টাটা করেছিলেন পাগলাটে গোলরক্ষক হিগুইতা।
হিগুইতার সেই স্করপিয়ন কিকের পর গত ২১ বছরে সেই চেষ্টা করেছেন অনেকেই। ২০১৩ সালে বাস্তিয়ার সাথে করে দেখিয়েছেন ইব্রাহিমোভিচ। ২০১৫-তে ঘরোয়া লিগের এক ম্যাচে চেষ্টা করেও হিগুইতাকে পুরোপুরি অনুকরণ হয়নি দক্ষিণ আফ্রিকা জাতীয় দলের গোলরক্ষক ইতুমেলেং খুনের। দুই গোড়ালির বদলে এক গোড়ালির স্পর্শে বল ক্লিয়ার করতে পেরেছিলেন খুনে।
গত বছরের এপ্রিলে রিয়াল মাদ্রিদের অনুশীলনে হিগুইতাকে ট্রিবিউট দেন কোস্টারিকান গোলরক্ষক কেইলর নাভাস। মার্সেলোর ক্রসে স্করপিয়ন সেভ করে দেখান মাদ্রিদ গোলরক্ষক। তবে দৃষ্টিনন্দন স্করপিয়ন কিক করতে গিয়ে মাশুল দেবার উদাহরণও আছে। ২০১১ সালে হংকং লিগের ম্যাচে স্করপিয়ন কিক স্টাইলে ডিফেন্ড করতে গিয়ে দলকে আত্নঘাতী গোল দিয়ে বসেছিলেন নাইজেরিয়ান ডিফেন্ডার ফেস্তুস বাইসে।