মেঘলা গলে বাংলাদেশের আশার আলো সৌম্য-তামিম
স্কোর
চতুর্থ দিন শেষে
শ্রীলঙ্কা ৪৯৪ ও ২৭৪/৬
বাংলাদেশ ৩১২ ও ৬৭/০ (সৌম্য ৫৩*, তামিম ১৩)
আরও একবার গলের আকাশে ঘনিয়ে এসেছে কালো মেঘ। খেলাও পণ্ড হয়ে গেছে নির্ধারিত সময়ের কিছুটা আগে। তবে বাংলাদেশের আকাশে সেই মেঘ কালো ছায়া ফেলতে পারেনি, সৌম্য-তামিমের ব্যাটে সেখানে এখনো খেলা করছে ঝলমলে রোদ। শেষ দিনে দুজনের ব্যাট আরও কিছুক্ষণ ছায়া দিলে বাংলাদেশ ড্র নিয়েই হয়তো ফিরবে। কে জানে, আজ আরও বেশ কিছুক্ষণ খেলা হলে হয়তো ৪৫৭ রানের পাহাড়টা আরেকটু কাছে চলে আসত।
৪৫৭ রান আসলে এভারেস্টই বলা উচিত। টেস্ট ইতিহাসেই এত রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড কারও নেই। শ্রীলঙ্কার মাটিতে সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড পাকিস্তানের, পালেকেল্লেতে ৩৮২ তাড়া করে পেয়েছিল দুর্দান্ত এক জয়। আর গলে চতুর্থ ইনিংসে ৯৯ রানের বেশি তাড়া করে কেউ জিততে পারেনি।
তবে এসবই পরিসংখ্যান। বাস্তবতা বলছে, গলের উইকেটে চতুর্থ দিন শেষেও এমন কোনো জুজু নেই। দিন শেষে সৌম্য-তামিম সেটা যেন চোখে আঙুল দিয়েই দেখিয়ে দিচ্ছেন। এভারেস্ট তাড়া করে শুরুটা সতর্কের সঙ্গেই হওয়ার কথা ছিল দুজনের। তামিম বেশ দেখেশুনেই খেলছিলেন, তবে অন্য প্রান্তে সৌম্য খেলেছেন তাঁর মতোই।
নিজের দিনে সৌম্যের ব্যাটিং দেখার চেয়ে দৃষ্টিসুখকর কিছু কমই আছে। শেষ বিকেলে সৌম্যের ব্যাট যেন গলের নোনা বাতাসে দারুণ প্রশান্তি। পেরেরা, হেরাথকে ড্রাইভ করে মেরেছেন চার। পরে আবার পেরেরাকে এক ওভারে ব্যাকফুটে দুর্দান্ত দুই শটে মেরেছেন চার। হেরাথকে উড়িয়ে মেরে একমাত্র ছয়ও মেরেছেন। খেলার ধরনের জন্যই কয়েকবারও আংশিক সুযোগও দিয়েছিলেন। সৌম্যের সৌভাগ্য, সেই সুযোগগুলো নিতে পারেনি শ্রীলঙ্কা। শেষ পর্যন্ত মাত্র ৪৪ বলেই পেয়ে গেছেন নিজের তৃতীয় টেস্ট ফিফটি। শ্রীলঙ্কার মাটিতে চতুর্থ ইনিংসে এটা বাংলাদেশের হয়ে মাত্র দ্বিতীয় ফিফটি। ২০০২ সালে প্রথমবার সেটি করেছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল। টেস্টে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এটা বাংলাদেশের দ্রুততম ফিফটি। ২০০৬ সালে বগুড়ায় হাবিবুল বাশারের ৫০ বলে ফিফটির রেকর্ড ভেঙে দিলেন সৌম্য। আর বাংলাদেশের ওপেনারদের মধ্যে এর চেয়ে কম বলে ফিফটি করেছেন শুধু তামিম ইকবাল।
তবে সৌম্য নিশ্চয় এখানেই থামতে চাইবেন না। কাল শেষ দিনটা কাটাতে হলে সকালে নিশ্চয় উইকেট হারাতে চাইবে না বাংলাদেশ। গলের ড্রয়ের সম্ভাবনা এখন একদমই অসম্ভব কিছু নয়।