• চ্যাম্পিয়নস ট্রফি
  • " />

     

    ২২ গজের সেলুলয়েড : তামিম বনাম স্টোকস (দ্বিতীয় অধ্যায়)

    ২২ গজের সেলুলয়েড : তামিম বনাম স্টোকস (দ্বিতীয় অধ্যায়)    

    ছবির পরে ছবি চলে নাকি তৈরী হয় সিনেমা। ক্রিকেট ম্যাচও তো তাই। টুকরো টুকরো অসংখ্য ছবি জন্ম নেয় যেখানে। ২২ গজ আর সবুজ ওই উদ্যানের ছবিগুলোকে যদি ধরা যেত সেলুলয়েডে! 


     

    ‘বল, কই যাও?’

    মার্ক উডের বাউন্সার থেকে বাঁচলেন কোনোমতে। ব্যাটে লেগে পায়ের কাছে পড়লো বল, দৌড় দিল স্ট্যাম্পের দিকে। বলকে তাড়া করলেন তামিমও, ওপাশ থেকে ছুটে এলেন উড। শেষ পর্যন্ত স্ট্যাম্পে লাগলো না বল, বেঁচেই গেলেন তামিম। পরের ইনিংসে মাশরাফির অফস্ট্যাম্পের বাইরের লাফিয়ে ওঠা বলে ঠেকালেন রুট। মাটিতে লেগে বল আবার দৌড় দিল স্ট্যাম্পের দিকে, পেছন ছুটলেন রুট। এবারও জয় হলো ব্যাটসম্যানের!

     

    স্টোকস বনাম তামিম (দ্বিতীয় অধ্যায়) 

    ফুললেংথের বলটা থার্ডম্যান দিয়ে চার মারলেন তামিম। স্টোকসের যেন সহ্য হলো না সেটাই। তামিমকে হাত উঁচিয়ে কিছু একটা বললেন। তৃতীয় বলের ঘটনা এটি, ঘটনা গড়ালো ওভারের শেষ পর্যন্ত। স্টোকস বলেন, তামিম শোনেন, হাত ইশারায় বোলিং মার্কে ফিরে যেতে বলেন। ওভার শেষে আম্পায়ার এস রভিকে মাঝে রেখেই দুজনের কথা চালাচালি চললো একচোট! ফিরে এলো গত বছরের ইংল্যান্ডের বাংলাদেশ সফরের স্মৃতিও। ম্যাচশেষে করমর্দন করতে গিয়ে লেগে গিয়েছিল তামিম-স্টোকসের। সেবার তামিম ছিলেন জয়ী দলে, এবার পরাজিতদের।  

     

    ইংল্যান্ড বনাম তামিম (দ্বিতীয় অধ্যায়) 

    ২০১০ সাল। মিরপুর। তামিম ইকবাল করলেন ১২৫ রান, এর পরের সর্বোচ্চ স্কোর ২৫। বাংলাদেশের ২২৮ রানের প্রায় ৫৪ শতাংশই ছিল তামিমের। ২৪ বল বাকি থাকতে ৬ উইকেটে ম্যাচ হারলো বাংলাদেশ। তামিম ইংল্যান্ডের সঙ্গে নিজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরিটা পেলেন আজ, করলেন ১২৮। সঙ্গ দিলেন মুশফিক, বাংলাদেশ করলো ৩০৫। তবে ফলটা বদলালো না। ১৬ বল বাকি থাকতে ৮ উইকেটে হারলো বাংলাদেশ!

     

    ঠিক স্কুপ, ভুল স্কুপ

    লেগস্ট্যাম্পের ওপর ফুললেংথের বল। একটু সরে গেলেন, শেষ মুহুর্তে ব্যাটের ‘ফেস’ মেলে ধরলেন মুশফিক। স্কুপের মতো করেই খেললেন, বল গেল কিপারের মাথার ওপর দিয়ে। চার। শটটা হলো দারুণ। স্কুপ করতে গেলেন রয়ও। সরে এলেন অফস্ট্যাম্পের দিকে, জায়গা বানালেন। স্কুপটা ঠিকঠাক হলো না। ফাইন লেগে লাফিয়ে উঠে বামদিকে ঝাঁপিয়ে অসাধারণ ক্যাচ নিলেন মুস্তাফিজ। এক স্কুপে দুই ফল পেলেন মুশফিক ও রয়!

     

    ‘ওপেনার’ সাকিব

    বাংলাদেশের অন্যতম বড় ভরসার নাম তিনি। ব্যাটিংয়ে, বোলিংয়েও। ৩০৫ রানের পুঁজি, দ্বিতীয় ওভারেই সাকিবকে আনলেন মাশরাফি। ক্যারিয়ারে এ নিয়ে সপ্তমবার ওপেনিংয়ে বোলিং করতে এলেন সাকিব, আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে করেছিলেন শেষ। এর আগে তিনটি ম্যাচে জিতেছিল বাংলাদেশ, সাকিব সেই ৩ ম্যাচ মিলিয়ে উইকেট নিয়েছিলেন ৪টি। আর হারা ৩ ম্যাচে নিয়েছিলেন ৮ উইকেট, এর মধ্যে দুই ম্যাচেই নিয়েছিলেন ৪টি করে, একটিতে ছিলেন উইকেটশূন্য। উইকেটের কলামটা আজও শূন্যই থাকলো তার। 

     

    চোট

    দুই ওভার বল করে উঠে গেলেন ওকস। সেই যে উঠলেন, আর নামলেন না! পরে জানা গেল ‘সাইড-স্ট্রেইন’, সহসাই যা ভাল হওয়ার নয়। প্রয়োজন হলে অবশ্য ব্যাটিং করবেন বলে জানা গেল। ওকসের খানিক বাদে উঠে গেলেন প্লাঙ্কেটও, তিনি অবশ্য পরে নেমে করলেন পুরো ১০ ওভারই। ব্যাটিংয়ের সময় আবার একটা শর্ট বল খেলে খোঁড়াতে লাগলেন জো রুট। কয়েকবার ফিজিও ঢুকলেন মাঠে, রুট পরে পেলেন সেঞ্চুরিই।

     

    এবং ক্যাচ বিতর্ক

    তামিম আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। সামনে ঝাঁপিয়ে পড়ে ক্যাচটা নেয়ার পর থেকেই আঙ্গুল তুলে ধরলেন, ক্যাচটা ঠিকঠাক নিয়েছেন বোঝাতে। মাঠের দুই আম্পায়ার এসব ক্ষেত্রে তৃতীয় আম্পায়ারের সাহায্য নেন। এবারও নিলেন। তবে বিপত্তিটা ঘটালো তাদের ‘সফট-সিগন্যাল’-এ। এস রভি ও রড টাকার যে সেটা পাঠালেন ‘নট-আউট’ হিসেবে। টেলিভিশন আম্পায়ার ব্রুস অক্সেনফোর্ড সে সিদ্ধান্ত নাকচ করতে পারলেন না, নাকচ হয়ে গেল তামিমেরই ক্যাচ। আসলেই কি তাই? নাকি বলের নিচে আঙ্গুল ছিল তামিমের! তৃতীয় আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের পর তামিমের প্রতিক্রিয়াই বলে দিচ্ছিল, খুশী হওয়ার মতো কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছিলেন না তিনি!