• চ্যাম্পিয়নস ট্রফি
  • " />

     

    ২২ গজের সেলুলয়েড : অদ্ভুতূড়ে ওভার, 'পার্ট-টাইমার' চমক

    ২২ গজের সেলুলয়েড : অদ্ভুতূড়ে ওভার, 'পার্ট-টাইমার' চমক    

    চাপের নাম ডট 
     
    টানা ১৩ বল ডট। সে রানখরা কাটাতেই কিনা নাগালের বাইরে থাকা বলে কাট করতে গেলেন সাব্বির। শেষ মুহুর্তে ব্যাটের হাতল থেকে ছিটকে গেল হাত, উইকেট থেকে ছিটকে গেলেন সাব্বিরও। সেই রানখরা চললোই, ২৪ বলে এলো মাত্র ১ রান। হাপিত্যেশ করতে থাকা মুশফিক সামনে আসলেন, খেলতে চাইলেন জোরের ওপর। হলো ইনসাইড-এজ, ভাগ্যের জোরের হয়ে গেল চার। সেই মুশফিক পরে আউট হলেন ওই ডট বলের চাপেই, কেদারকে ডাউন দ্য গ্রাউন্ডে মারতে এসে! 
     
     
    অদ্ভুতূড়ে ওভার 
     
    সচরাচর দেখা মেলেনা এসব ঘটনার। গতকাল পাকিস্তান-ইংল্যান্ড ম্যাচে ওইন মরগানের দলকে নো ডেকেছিলেন আম্পায়ার। লেগসাইডে ৫ জনের বেশি ফিল্ডার ছিল বলে। আজ বিরাট কোহলির দলকে নো ডাকা হলো, বৃত্তের ভেতর ফিল্ডার কম ছিল বলে! তবে ঘটনার শুরু কেবল তখন। পান্ডিয়ার সেই ফ্রি হিটে ক্যাচ দিলেন তামিম, দৌড়ালেন ডাবল নেয়ার জন্য। সেই ওভারের পঞ্চম বলেই তামিম বোল্ড হলেন, এবার পান্ডিয়ার পা ছিল ক্রিজের বাইরে। হলো নো বল। এই ফ্রি হিটে হলো ওয়াইড, পরের বলে তামিম মারলেন চার। 

     

    পেনাল্টি

    ধাওয়ানকে একটু অদ্ভূত জায়গায় রাখলেন কোহলি। ঠিক পয়েন্টে নয়, কাভার বা এক্সট্রা কাভারেও না। ধাওয়ান অবশ্য তাতে তেমন প্রভাব ফেলতে পারলেন না। তবে প্রভাব ফেললো বেজায়গায় থাকা ধোনির গ্লাভস। অশ্বিনের বলে লং লেগে খেলেছিলেন মাহমুদউল্লাহ। ফিল্ডারের থ্রো ধরে নন-স্ট্রাইকিং প্রান্তে থ্রো করতে হতে পারে বলে এক হাতের গ্লাভস খুলে স্টাম্পের পাশে রেখেছিলেন। থ্রো ধরে স্টাম্পে লাগাতে গেলেন, বল গিয়ে লাগলো ওই গ্লাভসেই। পাঁচ রান পেনাল্টি পেলো বাংলাদেশ। 
     
     
    উলটো সুইপ, সোজা বাউন্ডারি 

     
    ফিফটি করতে প্রয়োজন চার রান। বাউন্ডারি মেরে ল্যান্ডমার্কে পৌঁছানো নতুন নয় তামিমের, জাদেজার ফ্ল্যাট আর সোজা বলে করলেন রিভার্স সুইপ। যুতসই হলো না ঠিক, শর্ট থার্ডম্যানকে পার করতে পারলেন অল্পের জন্য। জাদেজার পরের ওভারে আবার একই ধরনের বল, এবার রিভার্স সুইপ করলেন মুশফিক। ওই শর্ট থার্ডম্যানকে টপকেই হলো চার। তামিম, মুশফিকের পর একই পথে হাঁটলেন মাহমুদউল্লাহও। এবার বোলার আরেক স্পিনার, অশ্বিন। ওই ফ্ল্যাট বল, আগে থেকেই ঠিক করা রিভার্স সুইপটাও হলো মাহমুদউল্লাহর মনমতোই। 
     
     
    নাচিয়ে মাশরাফি 
     
    মাশরাফি যেন নাচের মুদ্রা ঠিক করছিলেন। স্ট্যান্স থেকে অফসাইডের দিকে সরে গেলেন প্রথমে লাফ দিয়ে। সেখান থেকে লেগের দিকে সরলেন আরেকটু, বল হওয়ার আগে সরে এলেন আরেকটু। ওই লাফ দিয়েই। বুমরাহ যেন ধন্দ্বে পড়ে গেলেন, করলেন ব্লকহোলেই। হলো বটম-এজ, হলো চার। বুমরাহ হেসেই দিলেন, যেন মজা পেয়েছেন তিনিও! মাশরাফি তার গোটা ইনিংসেই নেচে বেড়ালেন। কখনও টপ-এজে চার হলো, কখনও চালিয়ে দেয়া ব্যাটে এলো বাউন্ডারি। 
     
     
    সফল ‘পার্টটাইমার’, ব্যর্থ পার্টটাইমার 

     
    জমছে তামিম-মুশফিকের জুটি। চাপ বাড়ছে কোহলির। পঞ্চম বোলার নিয়ে সমস্যায় আছেন এমনিতেই। ২৬ তম ওভারে আনলেন কেদার যাদবকে। প্রথম ওভারে দিলেন ৬ রান। পরের ওভার। তামিম অফস্ট্যাম্পের বাইরের বলটা খেললেন কাভারে। পরের বলটাতে অ্যাকশন বদলালেন কিছুটা, করলেন বেশি রাউন্ডআর্ম। তামিম বড় শট খেলতে গিয়ে নাগাল পেলেন না। হলেন বোল্ড। কাঙ্খিত ব্রেকথ্রু মিললো ভারতের। ৬ষ্ঠ ওভারে যাদব এসে ফাঁদে ফেললেন মুশফিককেও। মুশফিক ফুলটস বানিয়ে ক্যাচ দিলেন কোহলিকে। ওই ওভারের পর আর এলেন না কেদার, দায়িত্বের থেকে বেশি কাজ তো করেই ফেলেছেন! কেদার সফল হলেও সফল হতে পারলেন না পরে মোসাদ্দেক, মাহমুদউল্লাহ বা সাব্বির। নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে স্বপ্নের স্পেল করা মোসাদ্দেককে আনলেন মাশরাফি, ২৪তম ওভারে। মোসাদ্দেক করলেন দুই ওভার। ৩১তম ওভারে এলেন মাহমুদউল্লাহ। তিনি করলেন ১ ওভারই। ৩৯তম ওভারে সাব্বিরকে আনলেন। তার ওভারেই খেলা শেষ হলো। তবে মাশরাফিকে ব্রেকথ্রুটা দিতে পারলেন না কেউ। 
     
     
    বৈপরীত্য 

     

    পান্ডিয়ার সেই অদ্ভূত ওভারে এসেছিল ১৪ রান। তাকে বল করতে হয়েছিল সব মিলিয়ে ৯টি। বাংলাদেশ ইনিংসে সর্বোচ্চ রানের ওভার সেটিই। ৮ম ওভারেই পান্ডিয়াকে ছাড়িয়ে গেলেন তাসকিন, দিলেন ১৬ রান। ২৩তম ওভারে তাসকিনকেও ছাড়িয়ে ২৩ রান দিলেন রুবেল। দুজনই কেউই অতিরিক্ত কোনো বল করেননি, করেছিলেন ছয়টি করে বলই।