লড়াইয়ের ভেতর তাঁদেরও লড়াই
প্রতিপক্ষ ভারত-পাকিস্তান। মঞ্চ- চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল। সে লড়াইয়ে নজর রাখতে পারেন এই ক্রিকেটারদের ওপরও। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে অনেক কিছু বদলে দিতে পারেন তারাও!
শিখর ধাওয়ান
আইসিসি টুর্নামেন্টে যেন নিজেকে ফিরে পান শিখর ধাওয়ান। আরও নির্দিষ্ট করে বললে, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে। ৮০ ওয়ানডে খেলেছেন এখন পর্যন্ত, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ৯টি। ক্যারিয়ার গড় যেখানে ৪৪.৮২, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির গড় হয়ে যায় ৮৫! ১০টি সেঞ্চুরির মধ্যে ৩টিই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে, এবারের আসরে করেছেন ২টি। ধাওয়ান একাই যেন ফিরিয়ে আনছেন চার বছর আগে ইংল্যান্ড ও ওয়েলসেই হওয়া চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির স্মৃতি। সেবার গোল্ডেন ব্যাট পেয়েছিলেন, ফাইনালের আগ পর্যন্ত টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তিনিই(৩১৭)। তার সঙ্গে রোহিত শর্মার ওপেনিং জুটি ভারতের অনেক বড় শক্তি, ধাওয়ান কি পারবেন শেষ ম্যাচে ভারতকে শক্তিশালি কিছুই এনে দিতে?
হাসান আলি
টুর্নামেন্ট সেরার দৌড়ে শুরুতেই আসছে পাকিস্তানী বোলারের নাম। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ব্যাটিং সহায়ক সব উইকেটেও পেস বোলিংয়ের অনুপম প্রদর্শনী সাজিয়ে যাচ্ছেন হাসান আলি। লেংথের ওপর অসাধারণ নিয়ন্ত্রণ, উইকেটে পড়ার পর তার সিম মুভমেন্ট নিয়ন্ত্রণ করতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে ব্যাটসম্যানদেরকে। প্রথম ম্যাচে ভারতের সঙ্গে ৭০ রানে পেয়েছিলেন ১ উইকেট, পাকিস্তান হেরেছিল। পাকিস্তান ঘুরে দাঁড়িয়েছে, মূলত তো ওই হাসানের বোলিংয়ে ভর করেই। পরের ৩ ম্যাচেই নিয়েছেন ৩টি করে উইকেট। হাসানের দিকে তাই তাকিয়ে থাকবে কাল পাকিস্তান।
রোহিত শর্মা
ধাওয়ানের মতো তারও দুই ফিফটি, এক সেঞ্চুরি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি দেখছে রোহিতের অসাধারাণ স্ট্রোকপ্লে। বাংলাদেশের সঙ্গে তার ইনিংসটা এর অন্যতম উদাহরণ। প্রায় নিখুঁত ইনিংসটা প্রত্যাশা বাড়িয়ে দিয়েছে আরও। টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান-সংগ্রাহকের তালিকায় রোহিত আছেন দুইয়ে, করেছেন ৩০৪ রান। গোল্ডেন ব্যাটের দৌড়ে তাই আছেন তিনিও, সে দৌড়ে তিনি এগিয়ে গেলে নিশ্চয়ই খুশিই হবে ভারত!
জুনাইদ খান
প্রথম ম্যাচে একাদশেই ছিলেন না তিনি। ওয়াহাব রিয়াজ ভারতের সঙ্গে ম্যাচে চোটে পড়ে ছিটকে গেলেন টুর্নামেন্ট থেকে, একাদশে ফিরলেন জুনাইদ খান। সেই জুনাইদও সর্বোচ্চ উইকেটশিকারির তালিকায় আছেন চারে, হাসানের চেয়ে এক ম্যাচ কম খেলেই তিনি নিয়েছেন ৭টি উইকেট। ৬১টি ওয়ানডে খেলা জুনাইদ যেন ছায়ায় ঢাকা পড়েছেন হাসানের, তবে নিজের আলোয় আলোকিত হলে লাভ পাকিস্তানেরই।
যুবরাজ সিং
পাকিস্তানের সঙ্গে ম্যাচে জ্বলে উঠেছিলেন। যুবরাজ সিং এরপর সেভাবে সুযোগই পাননি যেন আর! ক্যারিয়ার গড় ৩৬ থেকে বেড়ে ৪৩ হয়ে যায় পাকিস্তানকে পেলে, বেড়ে যায় স্ট্রাইক রেটও। শেষের দিকে যুবরাজ হয়ে উঠতে পারেন ভয়ঙ্কর, পাকিস্তানের সঙ্গে তো আরও বেশি! সঙ্গে আছে বাঁহাতি স্পিন। বাংলাদেশের সঙ্গে ম্যাচে কেদার যাদবের দুই উইকেট বদলে দিয়েছে ম্যাচের চিত্র, ফাইনালে কোহলির তুরুপের তাস যুবরাজ হলেও অবাক হওয়ার মতো কিছুই থাকবে না।
শোয়েব মালিক
২৫১ ম্যাচে ৯ সেঞ্চুরি। ভারতের সঙ্গে খেলেছেন ৩৮ ম্যাচ, তাতেই সেঞ্চুরি ৪টি। পাকিস্তান যুবরাজের অন্যতম প্রিয় প্রতিপক্ষ হতে পারে, তবে ভারত শোয়েবের নিঃসন্দেহে প্রিয়তম প্রতিপক্ষ। ব্যাটিং গড় ৩৫ থেকে ৪৮ হয়ে যায় ভারতকে সামনে পেলে, স্ট্রাইক রেট হয়ে যায় ৮১ থেকে ৮৯। নিজের সর্বোচ্চ ওয়ানডে ইনিংসটাও ভারতের সঙ্গেই, ১৪৩। টুর্নামেন্টের ৪ ম্যাচে করেছেন ৩২ রান, আছেন উইকেটশূন্য। সামনে ভারতকে পেলে বদলে যেতেই পারে এসব সংখ্যা!