মরনে মরকেল : নিরীহ দৈত্য
মরনে মরকেল একটা দৈত্য। উচ্চতায় ৬ ফুট ৫ ইঞ্চি।
ফাস্ট বোলার মাত্রই নাকি আগ্রাসী হতে হয়, সময়ের চাহিদায় হিংস্রও হতে হয়। মুখ চলবে, চোখ চলবে, বাউন্সার দেবেন যতবার, চোখে-মুখে আগ্রাসনের আভা দেখা যাবে ততবার- ফাস্ট বোলাররা তো এমনই। মরকেল একটু ভিন্ন। খুব বেশি কথা বলার প্রয়োজনীয়তা বোধ করেন না, না বোধ করেন খুব আগ্রাসী হয়ে থাকতে। একেবারে কিছুই করেননি এমন- তাও না, তবে বেশিরভাগ সময়ই মরকেল ছিলেন তার মতো করেই। তার মতে, ফাস্ট বোলারদের আগ্রাসন মানে হচ্ছে নিয়মিত ৯০ মাইলের ওপর বল করে যাওয়া। মরকেল সেটা পারতেন। ফাস্ট বোলিং করতে। শর্ট বোলিং করতে। শর্ট লেংথ থেকে বুক-কাঁধ-মুখ-নাক-চোখ-মাথা সমান উচ্চতায় বল তুলে ব্যাটসম্যানদের অস্বস্তিতে ফেলতে। শর্ট বল সবসময় উইকেট এনে দেয় না, জানা কথা এটাও। মরকেলও জানেন। তবে সেসবকে খুব একটা জরুরী মনে করেন না।
মরনে মরকেল একটা দৈত্য। একটা নিরীহ দৈত্য। দেশে-বিদেশের আব্দুর রহমানের মতো। অথবা হ্যারি পটার-এর রুবিয়াস হ্যাগ্রিডের মতো।
****
কিন্তু, মরকেল একজন ফাস্ট বোলার। তার কাজই হচ্ছে ব্যাটসম্যানকে শর্ট বলে তটস্থ রাখা, শরীর তাক করে শর্ট লেংথ থেকে একটা ছোট-খাট বলকে ভরবেগে অসীম করে তোলা, যে অসীমে ব্যাটসম্যানের ভয়-ডর-উইকেট মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। মাইকেল ক্লার্ক ২০১৪ সালে কেপটাউনে এই দৈত্যের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর রুপটা মোকাবেলা করেছিলেন। এখনও বোধহয় ক্লার্কের শরীরে মরকেলের শর্ট বলগুলোর স্মৃতি আছে, শরীরে না থাকলেও নিদেনপক্ষে মস্তিস্কে তো আছেই।
কিন্তু মরকেল ক্লার্কের সে উইকেটটা পাননি, ক্লার্ক বরং ১৬১ রানের এক ইনিংস খেলেছিলেন। কেপটাউন দর্শক- যারা ক্লার্কের ওপর একেকটা আঘাতে চিৎকার করছিলেন- আর মরকেল ছুটে ছুটে যাচ্ছিলেন ক্লার্কের দিকে, খারাপ কিছু হলো কিনা সেটা দেখার জন্য- তাদেরকে মরকেল চূড়ান্ত হর্ষধ্বনিটা দেওয়ার সুযোগ করে দিতে পারেননি। কিংবা বলা যায়, মরকেলের ভাগ্য সেদিন তার সঙ্গে ছিল না, তার ক্যারিয়ারের মতো করেই। অথবা, শর্ট বলে তো উইকেট মেলে না সবসময়। শর্ট বলের কাজ তো ভিন্ন। এদিকের বোলারের শর্ট বল এদিকের বোলারেরই আরেকটু ফুললেংথের বলে উইকেট এনে দেবে, নাহলেও এনে দেবে ওদিকের বোলারকে।
ক্যারিয়ারজুড়েই মরকেলকে কথা শুনতে হয়েছে। আরেকটু ফুললেংথে তিনি কেন যান না। আরেকটু ধারাবাহিক কেন হন না লেংথ নিয়ে! তবে এসব প্রশ্নের সোজাসাপটা উত্তর আছে মরকেলের কাছেই- তিনি যে সেভাবে সুইং করাতে পারেন না। উচ্চতার কারণে শর্ট বলটা তার প্রধান অস্ত্র, তিনি দলের প্রয়োজনের ব্যবহার করতে চান সেটাই। সেটার ব্যবহার ওদিকের বোলাররাই করুক না!
মরকেলের অভিষেক টেস্টে তার বোলিং সঙ্গীরা ছিলেন শন পোলক, মাখায়া এনটিনি, আন্দ্রে নেলরা। ক্যারিয়ারের শেষ টেস্টে কাগিসো রাবাদা, ভারনন ফিল্যান্ডাররা। আর প্রায় সবসময়ই ছিলেন একজন- ডেল স্টেইন। মরকেল কি সবসময়ই ছায়া হয়ে ছিলেন? যখন তখন ছেড়ে দিয়েছেন নতুন বলের দায়িত্ব?
না। মরকেলের মতে, সবই হয়েছে দলের প্রয়োজনে। কারও চোটের কারণে হয়তো মরকেলকে নতুন বলের দায়িত্ব নিতে হয়েছে, প্রতিপক্ষের কোনও ব্যাটসম্যানদের কারণে আবার সেটা ছেড়েও দিয়েছেন। তবে একটা ক্ষেত্রে প্রায়ই ডাক পড়েছে মরকেলের, ওপেনারদের কেউ বাঁহাতি থাকলে। অথবা যে কোনও পজিশনেই বাঁহাতি থাকলে।
মরকেল রাউন্ড দ্য উইকেটে যাবেন, বাঁহাতিদের ফেলবেন চরম অস্বস্তিতে। তার সেই অ্যাঙ্গেল, লেংথ, সিম মুভমেন্ট- বাঁহাতিদের জন্য যেন চূড়ান্ত বিভীষিকা। অথচ কোনও ডানহাতি পেসার এমন কিছু করতে পারেন, তাও আবার তেমন কোনও সুইং না পেয়েই- সে এক অস্বাভাবিক ঘটনাই বটে। অ্যালেস্টার কুক- ১২, অ্যান্ড্রিউ স্ট্রাউস- ৮, মাইক হাসি- ৮, মরকেলের একই ব্যাটসম্যানকে সবচেয়ে বেশিবার আউট করার তালিকায় নামের পাশের সংখ্যাগুলো নিয়ে এরাই আছেন শীর্ষে।
বাঁহাতিদের বিপক্ষে এই সাফল্যের রহস্যটা কী তবে! এর মূলে আছেন মরকেলের দুই ভাই। অ্যালবি ও মালান। দুইজনই বাঁহাতি, বাড়ির উঠোনের ক্রিকেটে এই দুইজনের সঙ্গে খেলতে নামলে মরনে ব্যাটিং পেতেনই না। করতে হতো শুধুই বোলিং। কুক, স্ট্রাউস, হাসিরা অ্যালবি ও মালানের ছোট ভাইয়ের প্রতি এই ‘অনাচার’-এর প্রতিবাদ জানাতেই পারেন!
****
সেই উঠোনে ব্যাটিং না পাওয়ার আক্ষেপ মরকেল ভুলে গেলেও, ব্যাটিং নিয়ে তার একটা আক্ষেপ আছে। এক যুগ খেলেও যে টেস্ট ক্যারিয়ারের রানটা ১০০০ হলো না তার। একটা ফিফটি পাওয়া হলো না। অথচ নিজের ব্যাটিং নিয়ে তিনি গর্বই করেন। একবার তো ওপেনিংয়েও নেমেছিলেন।
গ্রায়েম স্মিথ সিডনিতে যেবার হাত ভাঙলেন, দক্ষিণ আফ্রিকার ড্রেসিংরুম নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল, অধিনায়ক আর ব্যাটিংয়ে নামতে পারবেন না (পরে নেমেছিলেন অবশ্য)। আবার হাশিম আমলাদের নিয়মিত ব্যাটিং পজিশনও বদলাতে চান না তারা। উপায়টা বের করে দিলেন মরনে মরকেল। নিজে থেকে এগিয়ে গিয়েছিলেন, নিল ম্যাকেঞ্জির সঙ্গে ওপেনিংয়ে নেমেও পড়েছিলেন!
কপালে জুটেছিল ‘ডাক’, তবে তার আগ পর্যন্ত মরকেল ছিলেন দারুণ রোমাঞ্চিত, বোলিং ইনিংস শেষে ওপেনারদের মতো দৌড়ে ড্রেসিংরুমে গিয়েছিলেন, রোমাঞ্চিত ছিলেন তাতেও। এমনও ভেবেছিলেন, হাতের কাছে ফোনটা থাকলে বাবাকে এসএমএস করতেন, তিনি ওপেনিংয়ে নামছেন এই খবরটা দিতে। তবে সিডনির বেরসিক ফাটল ধরা পিচে বেরসিক রায়ান হ্যারিসের বেরসিক একটা ডেলিভারিতে মুছে গেল সব রোমাঞ্চ!
সব মিলিয়ে মরকেল অবশ্য নিখাদ এক ‘নাম্বার ইলেভেন’ ব্যাটসম্যানই। এমনিতে তাদের ওপর তেমন প্রত্যাশা থাকে না, তবে নন-স্ট্রাইকিং ব্যাটসম্যান কোনও মাইলফলকের কাছাকাছি হলেই খবর আছে। এবি ডি ভিলিয়ার্স যেমন ছিলেন, ২০১০ সালে আবুধাবিতে। দক্ষিণ আফ্রিকার তখনকার সর্বোচ্চ অপরাজিত ২৭৮ রানের ইনিংস খেলেছিলেন এবি, দশম উইকেটে মরকেল তাকে দিয়েছিলেন যোগ্য সঙ্গ, দুইজন মিলে তুলেছিলেন ১০৭ রান! ডি ভিলিয়ার্স রেকর্ডটা ভাঙার সঙ্গেই সঙ্গেই ডিক্লেয়ার করে দিলেন স্মিথ, অথচ মরকেলের কথা একবারও ভাবলেন না! তিনি যে তখন ৩৫ রানে অপরাজিত, তারও তো ক্যারিয়ারে একটা ফিফটির ইচ্ছা হয়! তবে শেষ টেস্টে এসে অবশ্য গড়বড় করে ফেললেন মরকেল। শেষবার ব্যাটিংয়ে নামার সময় অস্ট্রেলিয়ানরা হাততালি দিয়ে অভিনন্দন জানালো, ওপাশে ৯৫ রানে দাঁড়িয়ে টেমবা বাভুমা। মরকেল আউট হয়ে গেলেন প্রথম বলেই!
এটা বাদ দিয়ে ড্রেসিংরুমে মরকেল সবসময়ই কাঙ্খিত একজন। ওভালে একবার স্টুয়ার্ট ব্রডের শর্ট বলে বেসামাল হয়ে ক্যাচ তুলে ড্রেসিংরুমের দিকে হাঁটা দিলেন, অন্তত সবাই তেমনই ভেবেছিলেন। অথচ তিনি আউট হওয়ার দুঃখেই হোক, আর তখন থেকে বোলিংয়ের কথা ভাবতে ভাবতেই হোক- যাচ্ছিলেন গ্রাউন্ডসম্যানদের ঘরের দিকে। দর্শকরা চিৎকার করে ফিরতে বলছেন, আর তিনি ভাবছেন বোধহয় আম্পায়ার নো-বল ডেকেছেন, আবার ফিরতে বলছেন ক্রিজে!
তবে ক্রিজে দৈত্য হয়ে ওঠা মরকেল যে ড্রেসিংরুমে দারুণ মজার মানুষ, সেটার প্রমাণ মিলবে পথ খুঁজে ফেরার পর তার এমন কান্ডের জবাবে, ‘আমার অধিনায়ক বলেছেন, আমি দ্রুত আউট হলে যাতে ড্রেসিংরুমে আর না ফিরি!’
****
হাসছেন তো? আচ্ছা, এমন কজন ‘ফাস্ট’ বোলার আছেন, যারা আপনাকে এভাবে হাসাতে পারবে? হাস্যরস ক্রিকেট কম নেই, কিন্তু ক্রিকেট তো ‘সিরিয়াস গেম’। ফাস্ট বোলিং তো আরও সিরিয়াস! মরকেলও উইকেটের জন্য হাপিত্যেশ করেন, ব্যাটসম্যানের আক্রমণে অস্থির হয়ে পড়েন। তবে সবকিছুর পরও ক্রিকেটকে একটা খেলা হিসেবেই তিনি নিয়েছিলেন। তার এই দৃষ্টিভঙ্গী বদলানোতে ভূমিকা আছে এক দক্ষিণ আফ্রিকান বংশোদ্ভূত সুইস ভদ্রলোকের। মাইক হর্ন নামের এই ব্যক্তি অ্যাডভেঞ্চার প্রিয়, প্রচলিত কথায় বলা যায়, ‘অনুপ্রেরণাদায়ী বক্তা’।
এই ৩৩ বছর বয়সে হুট করেই অবসরের পেছনে সেই হর্নের হয়তো সরাসরি হাত নেই, তবে তার দ্বারা প্রভাবিত মরকেলের দৃষ্টিভঙ্গীর হাত আছে। স্ত্রী অস্ট্রেলিয়ান, সন্তান বড় হচ্ছে- ক্রিকেটের পরের জীবনটা ডাকছে মরকেলকে।
দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে একটা শিরোপা জেতার ইচ্ছা ছিল তার, ২০১৫ সালে বিশ্বকাপে দেশের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারিও ছিলেন তিনি। মরকেলের ক্যারিয়ারের অন্যতম চূড়া এসেছিল এই ফরম্যাটেই, ২০১১ সালে হয়েছিলেন আইসিসির ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ বোলার। ফুললেংথে বোলিংটা রপ্ত করেছিলেন বেশ ভালভাবেই, উইকেট এসেছিল তাতে, সঙ্গে ওই শীর্ষস্থানটাও।
এই ফরম্যাটই আবার কাঁদিয়েছিল তাকে। ২০১৫ বিশ্বকাপেই সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে হেরে। হয়তো ডি ভিলিয়ার্সদের কান্নায় ভেসে গেছে তার কান্না, তবে ক্রিকেটীয় জীবনটাকে যিনি স্মৃতি সংগ্রহের এক উপায় হিসেবে দেখেন, সেই মরকেল নিজে নিশ্চয়ই মনে রেখেছেন! তার কাছে ক্রিকেট মানেই পরবর্তী জীবনের জন্য এক স্মৃতির আধার, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে অবসরের পর, ক্রিকেট থেকেই চূড়ান্ত অবসরের পরের জীবনে যেসব কাজে লাগবে তার।
ক্রিকেট ছাড়লেও তাই ঠিক ছাড়ছেন না তিনি। কেইবা পারে, একেবারেই ছেড়ে দিতে?
****
মরকেল তার রান-আপের পুরোনো অভ্যাসটাও ছাড়তে পারেননি। বোলিং-মার্কে যাবেন, ঘুরবেন, দৌড় শুরু করবেন- হওয়ার কথা এমনই। তবে মরকেল বাড়তি একটা বৃত্তাকার পথ ধরে ঘোরেন দৌড় শুরু করার আগে। এটার ব্যাখ্যা হিসেবে তিনি বলেন, বাঁ পাটাকে আরেকটু সচল করতে সাহায্য করে এটা, একদম স্থির অবস্থা থেকে দৌড় শুরুর চেয়ে এটা ভাল মনে হয় তার কাছে। এটার নাহয় ব্যাখ্যা আছে, তবে দৌড় শুরুর পর বেসুরো ভঙ্গিতে চলেন কেন, সেটার ব্যাখ্যা নেই তার কাছে। ঠিক করতে চেয়েছিলেন, হয়নি। ক্যারিয়ারের শুরুতে তো বেশ অনেকগুলো করে নো-বলও করতেন।
এই রান-আপ নিয়েই টেস্টে ৩০০ উইকেট হয়ে গেছে মরকেলের। কেপটাউন টেস্টে, তার নতুন ঘরের মাঠে। সেই টেস্টেই ক্যারিয়ার সেরা বোলিং ফিগার গড়েছেন, সেই টেস্টের পরই পেয়েছেন ক্যারিয়ার সেরা রেটিং পয়েন্ট। অথচ মাঠের বাইরের ঘটনার কারণে হয়তো চাপা পড়ে গেছে মরকেলের এসব কীর্তি। তা যাক, তাতে মরকেলের কিছু যায় আসে না। কার ছায়াতে তিনি থাকলেন, কোন ঘটনায় তার অর্জন চাপা পড়ে গেল, তাতে তার কিছু যায় আসে না। এই দিনটা তিনি সবসময় স্মরণ করবেন, স্মৃতির বই থেকে এই পাতাটা বের করে পড়বেন বারবার। এতদিন ধরে ক্রিকেট খেলে তিনি এই অধিকারটা অর্জন করেছেন।
ক্যারিয়ারের গ্রাফটা যখন উর্ধ্বমূখি হচ্ছে, উইকেটের কলামে যখন ঘরটা পূর্ণ হচ্ছে বেশ, যখন তিনি ২০১৪ সালের পর দক্ষিণ আফ্রিকার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি, যখন ক্যারিয়ারসেরা বোলিং করছেন, মরকেল অবসরে যাচ্ছেন তখনই। নিশ্চয়ই প্রোটিয়া ক্রিকেটের প্রতি এর অনেক দিনের পুরোনো এক শ্রমিকের এটাও অধিকার!
****
জোহানেসবার্গে প্রথমে চোট পেলেন তিনিই, এরপর চোট পেয়ে বসল রাবাদা-ফিল্যান্ডারকেও। দক্ষিণ আফ্রিকা তাই ব্যাট করতেই থাকল। এরপর থামল। রাবাদা এলেন, ফিল্যান্ডার এলেন, বোলিংয়ে এলেন মরকেলও। তার টেস্ট ক্যারিয়ার, দক্ষিণ আফ্রিকা ক্যারিয়ারের শেষ ইনিংসে। আবেদন করতে গিয়েও পেটে হাত দিচ্ছেন, মানে ব্যথা পাচ্ছেন। কিন্তু মরকেল বোলিং করেই গেলেন।
বাঁহাতি ম্যাট রেনশকে রাউন্ড দ্য উইকেটে এসে এলবিডাব্লিউ করলেন ব্যাক অব আ লেংথ থেকে ভেতরের দিকে ঢোকা বলে। এরপর জো বার্নস। তিনিও এলবিডাব্লিউ। এবার ফুললেংথে। বাঁকানো ডেলিভারি।
একসময় বোলিং করলেন সুয়েটার পরেই। কে জানে, শেষ টেস্টের আবেগেই শরীরটা কাঁপছিল কিনা!
অথচ এক যুগ ধরে মরনে মরকেল দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে বোলিং করে গেছেন, আর প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানরা কেঁপেছেন। হয়তো মাঝে মাঝে কাঁপিয়েই গেছেন শুধু, উইকেট মেলেনি।
মরকেল একটা দৈত্য। তবে সেই দৈত্যের ভেতরে বা বাইরে একটা নিরীহ সত্তা ছিল তার। প্রোটিয়া অলঙ্কৃত সুয়েটারে ভেতরের গরমের মতো করে যা জমিয়ে রেখেছিলেন তিনি, এক যুগ ধরে, বাইরের ঠান্ডা থেকে সুরক্ষিত করে!