অবিশ্বাস্য মুস্তাফিজের পরও শেষ হাসি সাকিবদের
মুম্বাই ১৪৭/৮, ২০ ওভার
হায়দরাবাদ ১৫১/৯, ২০ ওভার
হায়দরাবাদ ১ উইকেটে জয়ী
শেষ ১২ বলে প্রয়োজন ১২ রান, সানরাইজার্সের বাকি ৩ উইকেট। ১৯তম ওভারে বোলিংয়ে এলেন মুস্তাফিজ, ১৬তম ওভারে যিনি দিয়েছিলেন ৩ রান। এবার দিলেন আরও কম, ১ রান। কাটারে ব্যতিব্যস্ত করে রাখলেন ব্যাটসম্যানদের, নিলেন ২ উইকেট। যেন নিদাহাস ট্রফির ফাইনালের কথা মনে করিয়ে দিলেন আবার। শেষ ওভারে বেন কাটিংয়ের জন্য রাখলেন ১১, প্রথম বলেই ছয় মেরে কাজটা এগিয়ে নিলেন দীপক হুডা, তবুও ম্যাচ গেল শেষ বল পর্যন্ত, প্রয়োজন যেখানে ১ রান। বেন স্ট্যানলেক মিডউইকেটের ইনফিল্ড ছাড়িয়ে মারলেন চার, শেষ হাসি হাসলো হায়দরাবাদই, শেষ হাসি হাসলেন সাকিবরাই। শেষ বলে ১ উইকেট হাতে রেখে এই প্রথমবার কোনও দল জিতল আইপিএলের ইতিহাসে। ৪ ওভারে ২৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে পরাজিত দলে মুস্তাফিজ, ১২ বলে ১২ রান ও ৩৪ রানে ১ উইকেট নিয়ে জয়ী দলে তাঁর টি-টোয়েন্টির জাতীয় দলের অধিনায়ক সাকিব।
১৪৮ রানতাড়ায় অবশ্য অনেক্ষণ পর্যন্ত ঠিকপথেই ছিল হায়দরাবাদ। প্রথম ৬ ওভারে ৫৬ রান, এরপর মারকানদেতে ব্রেকথ্রু মুম্বাইয়ের। পরের ওভারে প্রথমবার বোলিংয়ে এলেন মুস্তাফিজ, নিলেন অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের উইকেট। কাটারে আলতো করে খেলতে চেয়েছিলেন উইলিয়ামসন, ধরা পড়েছেন উইকেটকিপারের কাছে। এ দুই উইকেটই রিভিউ নিয়ে পেয়েছে হায়দরাবাদ।
এরপর তিন ওভারে টানা তিন উইকেট নিয়েছেন লেগস্পিনার মারকানদে, যার শেষটি সাকিবের। গুগলি পড়তে না পেরে স্টাম্পে ডেকে এনেছেন বল, ১২ রান করে। হুডা ও ইউসুফ পাঠানের ব্যাটিংয়ে এরপর অনেকখানি এগিয়ে গিয়েছিল হায়দরাবাদ, তবে ১৭তম ওভারে এসে ৩ রান দিয়ে ২ উইকেট নিলেন জাসপ্রিত বুমরাহ, চাপে ফেললেন তাদের। যে চাপ আরও বাড়িয়ে দিলেন মুস্তাফিজ, তার অবিশ্বাস্য ওভারে। তবে শেষ পর্যন্ত স্নায়ু ধরে রাখলো তার প্রতিপক্ষরাই।
এর আগে মুম্বাইকে ১৪৮ রানে বেঁধে রেখেছিল হায়দরাবাদ, সব বোলারই নিয়েছেন উইকেট, সাকিব নিয়েছিলেন ১টি। ৭ম ওভারে প্রথম এসেছিলেন বোলিংয়ে। ৫ ওভারে ৪৮ রান তোলা মুম্বাইয়ের রানের গতিটা টেনে ধরেছিলেন সিদ্ধার্থ কৌল, ৬ রানের সঙ্গে ২ উইকেট নিয়ে, সাকিব সে গতিটাই টেনে ধরলেন আরও, দিলেন মাত্র ১ রান। পরের ওভারে এসে প্রথম ৪ বলে সাকিব দিলেন ১৩ রান, পঞ্চম বলে নিলেন প্রতিশোধ। তার ঝুলিয়ে দেওয়া বলে এক্সট্রা কাভারে সহজ ক্যাচ দিয়েছেন ক্রুনাল পান্ডিয়া। নিজের তৃতীয় ওভারে সাকিব গুণেছেন ১০ রান। ১৬তম ওভারে ১০ রান দিয়ে বোলিং শেষ করেছেন এই বাঁহাতি। ৪ ওভারে খরচ করেছেন ৩৪ রান।
টসে জিতে ফিল্ডিংয়ে নামা হায়দরাবাদকে প্রথম সাফল্য এনে দিয়েছিলেন বেন স্ট্যানলেক, ফ্লিক করতে যাওয়া রোহিত শর্মার ক্যাচটা স্কয়ার লেগ থেকে সামনে এসে নীচু হয়ে নিয়েছেন সাকিব। এভিন লুইসের ১৭ বলে ২৯, কাইরন পোলার্ডের ২৩ বলে ২৮ বা সুরায়াকুমার যাদবের ৩১ বলে ২৮ রানের ইনিংসগুলো বড় হয়নি। আফগান লেগস্পিনার রশীদ খান ৪ ওভারে ২ উইকেট নিয়েছেন মাত্র ১৩ রানে, সন্দীপ শর্মা ২ উইকেট নিতে খরচ করেছেন ২৫ রান। আর কৌল বোলিং শেষ করেছেন ৪ ওভারে ২৯ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়ে।