১১৮ রান নিয়েই মুম্বাইকে আটকে দিল হায়দরাবাদ
হায়দরাবাদ ১১৮ অল-আউট, ১৮.৪ ওভার
মুম্বাই ৮৭ অল-আউট, ১৮.৫ ওভার
হায়দরাবাদ ৩১ রানে জয়ী
প্রথমবার ব্যাটিং করতে নামা মুস্তাফিজুর রহমানের শট আকাশে, রোহিত শর্মার মাথা নিচের দিকে। এই দৃশ্যটা একটু হলেও ইঙ্গিত দিতে পারে, ম্যাচের পরিস্থিতিটা। মাত্র ১১৮ রানের সম্বল নিয়ে মুম্বাইকে ৩১ রানে হারিয়েছে হায়দরাবাদ। ঘরের মাঠে হায়দরাবাদ বোলারদের কোনও জবাব দিতে পারেননি রোহিতরা। ম্যাচশেষে মুম্বাই অধিনায়ক নিজেই স্বীকার করে নিলেন, যে কোনও উইকেটেই ১১৮ রান তাড়া করা উচিৎ ছিল তাদের। উচিৎ-অনুচিৎ দিয়ে কিছু যায় আসে না অবশ্য হায়দরাবাদের, নিজেরা খাদের কিনারে গিয়ে প্রতিপক্ষকে হুমড়ি খেয়ে পড়া দেখলে কেইবা না খুশি হয়!
সন্দিপ শর্মার করা প্রথম ওভারটাই ইঙ্গিত দিচ্ছিল, রান-তাড়াটা সহজ হবে মুম্বাইয়ের জন্য। তবে সেটা যে এতো কঠিন বানিয়ে ফেলবেন হায়দরাবাদ বোলাররা, সেটা কে জানত! এভিন লুইসকে তৃতীয় ওভারে ফিরিয়েছেন সন্দিপ, পরের ওভারে ইশাণ কিষাণকে ফিরিয়েছেন মোহাম্মদ নবী। ভুবনেশ্বর কুমারের সঙ্গে আজ বেন স্ট্যানলেককেও পায়নি হায়দরাবাদ, অস্ট্রেলিয়ান পেসারের তো শেষ হয়ে গেছে আইপিএলই। ্তবে তাদের অভাব বুঝতেই দেননি বাকিরা!
পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে বোলিংয়ে এসেছিলেন সাকিব, দিয়েছেন মাত্র ২ রান। সঙ্গে রোহিত শর্মাকে দিয়ে পূর্ণ করেছেন টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ৩০০ উইকেট, মাত্র ৫ম বোলার হিসেবে। এর সঙ্গে ৪০০০ রান ও ৩০০ উইকেটের দারুণ এক ডাবলও পূর্ণ হয়েছে তার।
রশীদ খান এসেছেন ১০ম ওভারে, দিয়েছেন ২ রান। সাকিব-রশীদই তখন মুম্বাইয়ের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ, দুইজন মিলে ৭ ওভারে দিয়েছেন ২৭ রান, নিয়েছেন ৩ উইকেট। দুই স্পিনারকে সামলাতে ব্যস্ত মুম্বাইকে আরও বড় আঘাত করেছেন সিদ্ধার্থ কৌল ও বাসিল থামপি। কাইরন পোলার্ড বা হারদিক পান্ডিয়া- মুম্বাইয়ের দুই হার্ড-হিটারের কেউই পার করাতে পারেননি তাদের। পান্ডিয়া করেছেন ১৯ বলে ৩ রান, মুম্বাইয়ের ব্যাটিংয়েরই প্রতিচ্ছবি যেন তার ইনিংস!
এর আগে কেন উইলিয়ামসন শুরুটা ভাল করেছিলেন হায়দরাবাদের জন্য, তবে শীঘ্রই তাদেরকেও করতে হলো সংগ্রাম, রান করতে, ক্রিজে টিকে থাকতে। মিচেল ম্যাকলানাহানের ৩ উইকেটে পাওয়ারপ্লেতেই হায়দরাবাদ হারিয়ে ফেলেছিল ৪ উইকেট। উইলিয়ামসনের সঙ্গে ভুল-বুঝাবুঝিতে রান-আউট হয়েছেন সাকিব।
উইলিয়ামসন, মনীশ পান্ডে, মোহাম্মদ নবী- কেউই বড় করতে পারেননি ইনিংস। তাদের শেষ আশা হয়ে ছিলেন ইউসুফ পাঠান, ৩ ওভার বাকি থাকতেই ৯ম উইকেট হারিয়ে তখন ধুঁকছে হায়দরাবাদ। মুস্তাফিজকে একটা ছয় মারার পরের বলেই আউট পাঠান, ৮ বল বাকি থাকতেই অল-আউট হায়দরাবাদ।
এরপর ৭ বল বাকি থাকতেই শেষ হয়ে গেছে মুম্বাইয়ের ইনিংস। আইপিএল ইতিহাসে মাত্র তৃতীয়বার দুই দলই হলো অল-আউট। সবচেয়ে কম রানের সম্বল নিয়ে জিতলো হায়দরাবাদ, আর ভারতের মাটিতে আইপিএলে কোনও দলই এর আগে এতো কম রানের পুঁজি নিয়ে জিততে পারেনি এর আগে।