• বাংলাদেশ-আফগানিস্তান সিরিজ
  • " />

     

    শেষ বলে গিয়েও শেষটা সুখের হলো না বাংলাদেশের

    শেষ বলে গিয়েও শেষটা সুখের হলো না বাংলাদেশের    

    তৃতীয় টি-টোয়েন্টি
    আফগানিস্তান ১৪৫/৬
    বাংলাদেশ ১৪৪/৬
    আফগানিস্তান ১ রানে জয়ী 


    আফগানিস্তান উদযাপন করলো বাংলাদেশ স্টাইলে, নাগিন ড্যান্স দিয়ে। এরপর ল্যাপ অব অনার। নাটকীয় শেষে শেষ টি-টোয়েন্টিতেও বাংলাদেশকে হারিয়েছে তারা, শেষ ওভারে ৮ রানের সম্বল নিয়ে ৭ রান দিয়ে আফগানিস্তানকে ১ রানে জিতিয়েছেন রশীদ খান। তাদের কাছে হোয়াইটওয়াশ আটকাতে পারেনি বাংলাদেশ, ১৪৫ রানে বেঁধে ফেলার পর মুশফিকুর রহিমের ৪৬ ও মাহমুদউল্লাহর ৪৫ রানের ইনিংসও যথেষ্ট হয়নি শেষটা অন্তত সুখের করতে। 

    শেষ ৪ ওভারে ৪৮ রান প্রয়োজন ছিল বাংলাদেশের। ১৭তম ওভারে আফতাব আলমের বলে ১৫ রান তুলেছেন মাহমুদউল্লাহ (মুশফিকের একটি লেগবাইসহ), পরের ওভারে ৩ রান দিয়ে আফগানিস্তানকে ম্যাচে ফিরিয়েছিলেন রশীদই। ১৯তম ওভারে করিম জানাতকে টানা পাঁচ চারসহ ২১ রান নিয়েছিলেন মুশফিক, তবে শেষ ওভারের প্রথম বলেই রশীদকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ধরা পড়েছেন তিনি। শেষ বলে প্রয়োজন ছিল চার, আরিফুলের শটটা লং-অন দিয়ে চার হয়েই গিয়েছিল প্রায়। শফিকুল্লাহ বাঁচিয়েছেন সেটা, হাতে ঠেলে বলটা যখন বাউন্ডারির ভেতরে ফেলেছেন, তার পা তখন মাটির একটু ওপরে। এই একটুর জন্যই শেষ ম্যাচটা হারলো বাংলাদেশ, তবে পুরো সিরিজের প্রতীকি চিত্র এটাই। সবকিছুই গেছে আফগানিস্তানের পক্ষে, বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত তাদের র‍্যাঙ্কিংয়ের ওপরের দলের কাছে দাঁড়াতেই পারলো না! 

    দেরাদুনের উইকেট আগের দুই ম্যাচের মতোই ধীরগতির ছিল, শট খেলা যেখানে কষ্টসাধ্য। বাংলাদেশের জন্য মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে এসেছে এক ওভারেই সৌম্য ও লিটনের একই ঘরানার রান-আউট। তামিম-লিটনের সতর্ক শুরুটা শেষ হয়ে গিয়েছিল তামিমের ডাউন দ্য গ্রাউন্ডে এসে মুজিবকে শর্ট কাভারে ক্যাচ দিয়ে। এরপরই লিটনের সঙ্গে ভুল বুঝাবুঝিতে প্রথমে ফিরেছেন সৌম্য, এরপর মুশফিকের সঙ্গে ভুল বুঝাবুঝিতে লিটন। 

    সাকিবও ফিরেছেন দ্রুতই। মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিক মিলে বাংলাদেশকে টেনেছিলেন এরপর। তবে তাদের ৮৪ রানের জুটিও থেকেছে আক্ষেপের গল্প হয়েই। 

    এর আগে স্পিন ও পেসের সমন্বয়ে আফগানদের আটকে রেখেছিল বাংলাদেশ। মেহেদি হাসান মিরাজের প্রথম ওভারে ১৮ রান, নাজমুল ইসলামের শেষ ওভারে ৩ রান। দুই বোলারের বৈপরীত্যের মতোই চিত্রটা আফগানিস্তান ইনিংসে। সাকিব আল হাসান, নাজমুল- দুই স্পিনার মিলে ৮ ওভারে দিয়েছেন ৩৪ রান, সঙ্গে ৩ উইকেট। শেষ দুই ওভারে দুইজন মিলে দিয়েছেন মাত্র ১০। আবু জায়েদ ৪ ওভারে ২৭ রানে নিয়েছেন ২ উইকেট।

    ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ৭ বোলার ব্যবহার করেছেন সাকিব। ৪ ওভারে ১৬ রানে ১ উইকেট নিয়ে দিনের সেরা বোলার তিনিই। নাজিবুল্লাহ জাদরানকে দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৫০০ উইকেটও পূর্ণ করেছেন এদিন, হয়ে গেছেন ম্যাচের হিসেবে দ্রুততম সময়ে ৫০০ উইকেট ও ১০ হাজার রানের ডাবলের মালিক। 

    সামিউল্লাহ শেনওয়ারি শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ২৮ বলে ৩৩ রানে, এর আগে ১৭ বলে ২৭ রান অধিনায়ক আসগর স্ট্যানিকজাইয়ের। ২২ বলে ২৬ রান করা মোহাম্মদ শাহজাদকে এলবিডাব্লিউ করে ব্রেকথ্রু এনেছিলেন নাজমুল ইসলাম, অবশ্য বলটা গ্লাভসে লেগেছিল শাহজাদের। সেটা অবশ্য তাকে নাগিন ড্যান্সের উদযাপন থেকে বিরত রাখতে পারেনি তখন। 

    শেষে গিয়ে আফগানিস্তানকে সেই উদযাপন থেকে বিরত রাখতে পারলো না বাংলাদেশ। 


    ম্যাচসেরা- মুশফিকুর রহিম
    সিরিজসেরা- রশিদ খান