• রাশিয়া বিশ্বকাপ ২০১৮
  • " />

     

    ছোটবেলায় ভয় দেখাতেন বন্ধুদের, বড় হয়ে দেখালেন জার্মানিকে

    ছোটবেলায় ভয় দেখাতেন বন্ধুদের, বড় হয়ে দেখালেন জার্মানিকে    

    হরর ছবির পোকা হয়ে থাকলে সিডস অব চাকির নাম আপনার শোনারই কথা। সেই যে, চাকি নামের একটা ভয়ংকর পুতুল ভয় দেখিয়ে বেড়াত সবাইকে। সেই চাকি ছিল মেক্সিকোতেও, অবশ্য ছবির চাকির মতো সে মোটেই ভয়ংকর নয়। বরং মজা করে ভয় দেখিয়ে বেড়াত বন্ধুদের। সেজন্য ছেলেটির নাম হয়ে গিয়েছিল চাকি। কে জানত, বড় হয়ে জার্মানদের এভাবে মাঠে ভয় দেখিয়ে যাবে সে? জার্মানির সঙ্গে মেক্সিকোর অবিশ্বাস্য জয়ে হারভিং লোজানোই যে আজ ছিলেন নায়ক!

    মজা করতে খুব পছন্দ করতেন লোজানো। ছেলেবেলায় বন্ধুদের বাসায় যখন যেতেন বা এক সঙ্গে ফুটবল খেলতে যেতেন কোথাও, খাটের নিচে লুকিয়ে থাকতেন। হুট করে বেরিয়ে চমকে দিতেন সবাইকে। বড় হয়ে জার্মানিকে এমনই চমকে দিলেন, গোলটা আর শোধই করতে পারল না বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। পিএসভির ২২ বছর বয়সী এই উইঙ্গারের অপর এখন বিশ্বকাপের অনেকটুকু আলো।

    বিশ্বকাপের আগেই লোজানোকে নিয়ে কথা হচ্ছিল অনেক। এবারের মেক্সিকোর আক্রমণের মূল ভরসা মনে করা হচ্ছিল তাঁকে। বাছাইপর্বে মেক্সিকোর হয়ে সবচেয়ে বেশি গোল করেছিলেন। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে এমন একটা কীর্তি করলেন, তাঁকে নিয়ে এখন টানাটানি পড়ে যেতে পারে ইউরোপের বড় ক্লাবগুলোর মধ্যে।

     

     

    মাত্র ১৮ বছর বয়সে পাচুকার হয়ে পেশাদার ফুটবলে অভিষেক হয় লোজানোর। শুরুটা এলাম, দেখলাম, জয় করলামের মতো, প্রথম মৌসুমেই দলকে নিয়ে ক্লসুরার রানার্স আপ ট্রফি জেতেন। দুই বছর আরও বড় অর্জন ধরা দেয় তাঁর পায়ে, এবার ক্লসুরার চ্যাম্পিয়নশিপ আসে তাঁর হাত ধরে। তবে ক্লাবের হয়ে নিজের সেরাটা দেখান ২০১৭ সালে। এবার টিগ্রেসকে হারিয়ে কনকাকাফ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতিয়েছেন, সর্বোচ্চ গোলও ছিল তাঁর।

     

     

    তার আগে থেকেই লোজানোর ওপর নজর ছিল ইউরোপের অনেক ক্লাবের।  ম্যানচেস্টার সিটি তাঁকে কিনছে, এমন খবর পাকাপাকিই হয়ে গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত গত বছর ডাচ ক্লাব পিএসভি তাঁকে কিনে নেয়। পিএসভির হয়ে প্রথম ম্যাচে তো বটেই, গোল করেন টানা তিন ম্যাচে। প্রথম তিন ম্যাচে গোল করার রেকর্ড ডাচ এই ক্লাবে আর কারোরই নেই। মৌসুম শেষ করেছেন পিএসভির সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবে, ডাচ ক্লাবটিকে জিতিয়েছেন শিরোপাও।

    তবে ২২ বছর বয়সেই মেক্সিকোর হয়ে হয়ে গেছেন অপরিহার্য। জাতীয় দলে ডাক পেয়েছিলেন দুই বছর আগে, অভিষেকে গোল না পেলেও একটি গোল করিয়েছেন। গত বছর কনফেডারেশনস কাপেও খেলেছিলেন দেশের হয়ে, রাশিয়ার বিপক্ষে গোলও করেছিলেন একটি। কে জানত, নিজের সেরাটা রেখে দেবেন সবচেয়ে বড় মঞ্চের সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষের জন্য? বিশ্বকাপে জার্মানির বিপক্ষে গোল দিয়ে তাদের হারানো তো রূপকথাই।