• ক্রিকেট

ভালোবাসা দিবসের গল্প এবং অন্যান্য

পোস্টটি ১২৯১৫ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

ভালোবাসা দিবসের গল্প বলি একটা; চট্টগ্রামের...

পকেটে সেদিন মাত্র ১২০ রানের পুঁজি নিয়ে লড়ছে বাংলাদেশ। তাও ৫০ রানের মধ্যে ছয় ব্যাটসম্যানকে প্যাভিলিয়নে পাঠিয়েছে বোলাররা। কিন্তু যথারীতি দাঁড়িয়ে গেছেন সাঙ্গাকারা-থিসারা। সাগরিকার মাঠে জমছিল শিশির। বল ভিজে ভারী হয়ে যাচ্ছে বারবার, বারবার রুমালে মুছেও লাভ হচ্ছেনা। স্পিন তো দূরের কথা, পেসারদেরকেই 'ক্রস-সিম' গ্রিপে বল করতে হচ্ছে। সাকিব আর আরাফাত সানি দুইজনেরই নিজেদের ২ ওভার করে বাকি, আগের দুই ওভারে দুইজনেই দিয়েছেন মাত্র ৮ রান করে, সাথে ১ উইকেট ঝুলিতে।

শেষ ৫ ওভারে লংকানদের দরকার ছিল ৩৯ রান। অধিনায়ক নিজে এক ওভার করলেন, বাকি ৪ ওভার করালেন ফরহাদ রেজা আর রুবেলকে দিয়ে। শেষ বলে চার খেয়ে বাংলাদেশ হেরে গেল ম্যাচটা। মাহমুদউল্লাহকে ৪ ওভার করানো হলেও সাকিব-সানিকে কেন বল দেয়া হল না, কিংবা আগের ওভারে ১১ রান দেয়ার পরেও কেন রুবেলকে বল দেয়া হল, শেষ ওভারই বা কেন সাকিবের বদলে ফরহাদ রেজাকে দিয়ে করানো হল -- এসব নিয়ে দেশ তখন অধিনায়কের মুন্ডুপাত করতে ব্যস্ত। এই 'ল্যাংড়া' খেলোয়াড়ের বোঝা দল আর কতদিন বইবে, এই নিয়েই তখন চায়ের কাপে ঝড়। ভালবাসা দিবসে সেই অধিনায়ক কিন্তু সেদিন 'ভালবাসা' পাননি আপনাদের কাছ থেকে!

অধিনায়কের নাম তো বুদ্ধিমান পাঠক মাত্রই বুঝে যাওয়ার কথা। মাত্র বছর তিনেকের মধ্যেই দৃশ্যপট কত বদলে গেছে আজ! ঐ ম্যাচটার শেষদিকে নেয়া অধিনায়কের সেসব সিদ্ধান্তকে ডিফেন্ড করতে যাওয়ায় এই লেখককে সইতে হয়েছে গালাগাল, অপমান।

সেই শ্রীলংকার বিপক্ষেই ম্যাচ দিয়ে টি-টোয়েন্টির ইতি টেনেছেন সেদিনের সেই 'ল্যাংড়া' বোলার, ক'দিন পরে হয়ত ছাড়বেন ওয়ানডেও। নিজের মাঠে বিশ্বকাপ খেলতে না পারায় তাঁর কান্নাও ক'বছর আগে সামান্য আহা-উহু ছাড়া আর কিছু শোনাতে পারেনি বাতাসে। সেই তিনি এখন জাতীয় বীর, সদাবিভক্ত বাঙ্গালিকে খুব কম জনই এক করতে পেরেছেন তাঁর মত করে।

তার মানে ব্যাপারটা কি দাঁড়াচ্ছে এমনই, সাফল্য-ই বদলে দেয় সবকিছু? নয়ত যত ডেডিকেশনই দেখান, পাত্তা পাবেন না তেমন বিশেষ?

তিন বছর আগে তখনও মাশরাফির হাঁটুতে সাতটা অপারেশনই ছিল; তাই বলে রেহাই পাননি তিনি, স্পষ্টতই মনে আছে। সেই হাঁটুজোড়া তখন যে লোকের নোংরা আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু ছিল, আজ ঐ লিগামেন্ট ছেঁড়া হাঁটুতেই অনুপ্রেরণা খোঁজে সেই একই লোক।

অবাক পৃথিবী, অবাক করলে তুমি...