• ক্রিকেট

আইপিএলের অভিজ্ঞতা কি কাজে লাগাতে পেরেছেন সাকিব-মুস্তাফিজ?

পোস্টটি ৬৭৫ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচ না খেলে আইপিএলে পাড়ি জমিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। গণমাধ্যমে সাকিবের বিরুদ্ধে রব উঠেছিলো। নেটিজেনরা মন্তব্যের রোষানলে সাকিব নামকে পিষেই দিচ্ছিলেন। দেশের খেলা বাদ দিয়ে অন্যের দেশ লীগ খেলার পক্ষে ছিলেন না মাশরাফিও। তবুও সাকিবের সঙ্গে যে যুক্তি দাঁড়িয়েছিল, সেটা আইপিএল খেলে বিশ্বকাপে ভালো করার প্রত্যয়। আইপিএল খেলতে দেশ ছাড়ার আগে একই বুলি আওড়িয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান। আসলেই কি আইপিএলের অভিজ্ঞতা বিশ্বকাপে কাজে লাগাতে পেরেছেন বাংলার দুই আইপিএল তারকা?

 

আইপিএলের রবিন রাউন্ডে পাঞ্জাবের বিপক্ষে মোস্তাফিজের রাজস্থান অবিশ্বাস্যভাবে ২ রানে জয় পেয়েছিলো। ওই ম্যাচের পুরো চিত্রটায় বদল এনেছিলো মোস্তাফিজের ১৯তম ওভার। ক্রিজে থাকা নিকোলাস পুরানকে বোকা বানিয়ে বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ে নিজের কোটার শেষ ওভারে দিয়েছিলেন মাত্র ৪ রান। মোস্তাফিজের ৪ বল খেলে পুরান করতে পেরেছিলেন মাত্র ২ রান। মূলত ম্যাচটা সেখানেই বদলে যায়। ম্যাচ শেষে অনেকেই মোস্তাফিজের বুদ্ধিমত্তার প্রশংসা করেছিলেন। 

 

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে গত ম্যাচে বুদ্ধির খেই যেন হারিয়ে ফেলেছিলেন ফিজ। স্টাম্প জোনে পুরানের স্কোরিং শট জেনেও ফিফথ স্টাম্পে বল করেছেন, দিয়েছেন বাউন্ডারি। আইপিএল থেকে পাওয়া অভিজ্ঞতা হয়তো জানাননি সাকিব-মাহাদীকে। তারা উভয়ই স্টাম্প জোনে বল ছুঁড়ছিলেন, বিনিময়ে বলের ঠিকানা গিয়ে মিলছিলো গ্যালারিতে। মূলত ম্যাচের মোড় অনেকটা এখানেই পরিবর্তন হয়। একই কথা জেসন হোল্ডারের ব্যাটিংয়েও। স্টাম্প করিডোরে জেসন হোল্ডার খুবই স্ট্রং ব্যাটসম্যান। শেষ ওভারে মোস্তাফিজ হোল্ডারকে বরাবরই স্টাম্পে বল করেছিলেন। এবং তিনটি বলই গ্যালারিতে পাঠিয়েছেন জেসন হোল্ডার। নিজের শেষ দুই ওভারে ৩৩ রান দিয়েছেন কাটার মাস্টার। 

 

পরিসংখ্যান বলে, নিকোলাস পুরান তার টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রায় ৫৫ শতাংশ ক্যাচ আউট হয়েছেন। কট বিহাইন্ড হয়েছেন প্রায় ২২ শতাংশ। অন্যদিকে জেসন হোল্ডার ক্যারিয়ারের ৭৫ শতাংশই ক্যাচ আউট হয়েছেন। যার অধিকাংশ সময়ই ওয়াইড অব স্টাম্প, ওয়াইড ইয়ার্কারে উইকেট হারিয়েছেন। আইপিএলে খেলার অভিজ্ঞতা থেকে সাকিব, ফিজের এসব জানার কথা। একই সাথে বাংলাদেশের কম্পিউটার বিশ্লেষক, কোচের প্রতিপক্ষের দুর্বলতা নিয়ে অবগত থাকার কথা। তবুও কেন মাঠে প্রতিফলন হচ্ছে না? আসলেই কি তারা প্রতিপক্ষকে নিয়ে ভাবছেন? নাকি গা ছাড়া ভাব করে কোন মতো চালিয়ে যাচ্ছেন, প্রশ্ন থেকেই যায়। 

 

বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচ থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত ৯টি ম্যাচ খেলেছেন রিয়াদের দল, জিতেছেন মাত্র ৩টি। ৬টি ম্যাচ হেরে যাওয়ার পিছনে দুর্বলতা আর দোষ নিয়ে আসলেই কি কাজ করছেন টিম ম্যানেজমেন্ট? পিচ দেখে সাজাতে পারছেন কি তাদের সেরা একাদশ? নাকি মিডিয়ার কথা শুনে, অতীত পরিসংখ্যান ঘেঁটে ফ্লাট উইকেটে খেলাচ্ছেন অতিরিক্ত স্পিনার! যদি তা-ই হয়, তবে নিষ্ক্রিয় এই ম্যানেজমেন্টের কী প্রয়োজন! কী প্রয়োজন অভিজ্ঞতার ঝুলি বড় করতে যাওয়া আইপিএল খেলা সাকিব-ফিজের জাতীয় দলে বুদ্ধিহীন বোলিং। পরাজয়ে জমে মেলা সমীকরণ, নানান প্রশ্ন, জয়-ই হয়তো বড় সমাধান।