• ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ
  • " />

     

    রানতাড়ায় কোহলির সেঞ্চুরির পরও হারে ভারত!

    রানতাড়ায় কোহলির সেঞ্চুরির পরও হারে ভারত!    

    ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২৮৩/৯, ৫০ ওভার (হোপ ৯৫, নার্স ৪০, বুমরাহ ৪/৩৫) 
    ভারত ২৪০ অল-আউট, ৪৭.৪ ওভার (কোহলি ১০৭, ধাওয়ান ৩৫, স্যামুয়েলস ৩/১২, নার্স ৪৩) 


    ওয়ানডে ক্রিকেটে ব্যাটিংটা তার কাছে এখন শ্বাস-প্রশ্বাসের মতোই সহজ। ৩৮তম সেঞ্চুরি করলেন, প্রথম ভারতীয় হিসেবে করলেন টানা তৃতীয় সেঞ্চুরি। বিরাট কোহলির এমন সেঞ্চুরির দিনেও কিনা হারলো ভারত! তাও আবার রানতাড়ায়! এর আগে ঘরের মাটিতে পরে ব্যাটিং করে ১০ বার সেঞ্চুরি করেছেন কোহলি, ভারত হারেনি একটিও। দেশের বাইরে রানতাড়ায় করেছিলেন আরও ১২ সেঞ্চুরি, ভারত হেরেছিল শুধু একটি ম্যাচ। সেসবই বদলে গেল, পুনেতে ২৮৪ রান তাড়ায় কোহলির ১০৭ রানের ইনিংসের পরও ভারতকে ৪৩ রানে হারিয়ে দিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সঙ্গে সিরিজে সমতা এনেছে ১-১ এ। তিন ওয়ানডের বাকিটি হয়েছে টাই। 

    একপেশে টেস্ট সিরিজের পর প্রথম ওয়ানডেতে বড় ব্যবধানে হেরেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর যদি আপনি ভেবে থাকেন, ওয়ানডে সিরিজও একপেশেই হতে যাচ্ছে, তাহলে আপনার ধারণাটা ভুল ছিল। অবশ্য এ ম্যাচেও সবকিছু ভারতের জন্য হচ্ছিল ঠিকঠাকই। টসে জিতে ফিল্ডিং নিলেন কোহলি, পুনের এ উইকেটে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ব্যাটিং হওয়ার কথা সহজই। তবে আজ একটা পরীক্ষার মুখে পড়লো ভারত, যেটার কথা হচ্ছে বেশ কিছুদিন ধরেই। ভারতের এই মিডল অর্ডার পরীক্ষার মুখে পড়েনি, তারা রয়ে গেছে ভঙ্গুর। আজ রোহিত শর্মা বা শিখর ধাওয়ান টিকলেন না, একা কোহলিও সামাল দিতে পারলেন না এরপর। 

     

    টানা তৃতীয় সেঞ্চুরি কোহলির, তবে হেরেছে ভারত/ক্রিকইনফো

     

    আম্বাতি রাইডু ম্যাককয়ের বলে বোল্ড ২২ রানে, নার্সের বলে কট-বিহাইন্ড হওয়ার আগে পান্টের রান ২৪, আর হোল্ডারের বলে এজড হওয়ার আগে ধোনি করতে পেরেছেন ৭ রান। এমন অবস্থা চলতে থাকলে ভারতের জন্য ব্যাপারটা বেশ সতর্কজাগানিয়াই হচ্ছে। ব্যাটসম্যানদের ওপর অতি-ভরসায় ভারত খেলিয়েছে এক ব্যাটসম্যান কম, অলরাউন্ডার রবীন্দ্র জাদেজাকে বসিয়ে খেলানো হয়েছে পাঁচ বোলারকেই। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২৮৩ রানে বেঁধে ফেলে বোলারদের কাজটা তারা ঠিকই করেছেন, তবে কোহলি ছাড়া ভুগেছেন ব্যাটসম্যানরাই। লোয়ার অর্ডারেও ভারতের অবস্থা যাচ্ছেতাই, মারলন স্যামুয়েলসকে পুল করতে গিয়ে  জয় থেকে ৬৪ রান দূরে থাকতে কোহলি বোল্ড হওয়ার পরই মূলত ঠিক হয়ে গেছে ম্যাচের ভাগ্য। 

    এর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে এতোখানি আনার পেছনে মূল অবদান শেই হোপের ৯৫ ও নয়ে নামা অ্যাশলি নার্সের ২২ বলে ৪০ রানের ইনিংসের। শুরুতে জাসপ্রিত বুমরাহর বোলিং তোপে পড়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৫৫ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর হোপের সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে ৫৬ রান যোগ করেছিলেন শিমরন হেটমায়ার। হেটমায়ারের পর রভম্যান পাওয়েলকেও দ্রুত ফিরিয়ে কাজটা ভারতের জন্য এগিয়ে দিয়েছিলেন কুলদিপ যাদব। 

    অধিনায়ক জ্যাসন হোল্ডারের সঙ্গে ৭৬ রানের জুটি গড়েছেন হোপ, ভুবনেশ্বরের বলে ক্যাচ দেওয়ার আগে উইন্ডিজ অধিনায়ক করেছেন ৩২ রান। অ্যালিয়েনকে দ্রুত ফিরিয়েছেন চেহেল, আর হোপকে সেঞ্চুরি থেকে ৫ রান দূরে থামিয়েছেন বুমরাহ। নার্সের ঝড় এরপরই, রোচকে নিয়ে ৯ম উইকেটে চোখের পলকে যোগ করেছেন ৫৬ রান। 

    রোহিত শর্মাকে ৯ রানের মাঝেই বোল্ড করে দারুণ কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন হোল্ডার। তবে ধাওয়ানকে নিয়ে ৭৯ রান যোগ করে কোহলি ব্যাপারটাকে বানিয়ে ফেলছিলেন একপেশে। ব্যাটিংয়ে দারুণ ইনিংসের পর এই জুটিটাও বোলিংয়ে এসে ভেঙেছেন নার্স, পরে গিয়ে ম্যাচসেরাও হয়েছেন তিনিই। ধাওয়ানের পর কোহলিকে সেভাবে সঙ্গ দিতে পারলেন না কেউ, উইকেটের দ্রুত পতনে বাড়তে থাকলো রান-বলের ব্যবধানও। সেটা কমিয়ে আনার চাপ ছিল কোহলির, সঙ্গে ছিল উইকেট ধরে রাখার ব্যাপারও। 

    হয়নি কিছুই। তার সেঞ্চুরিও তাই সিরিজে প্রথমবার পরাজয় আটকাতে পারেনি ভারতের।