• নিউজিল্যান্ড-শ্রীলংকা সিরিজ
  • " />

     

    বোলারদের দিনে ব্যাট হাতেও উজ্জ্বল সাউদি

    বোলারদের দিনে ব্যাট হাতেও উজ্জ্বল সাউদি    

    স্কোর 

    প্রথম দিন শেষে

    নিউজিল্যান্ড ৫০ ওভারে ১৭৮ ( সাউদি ৬৮, ওয়াটলিং ৪৬; লাকমল ৫/৫৪, লাহিরু ৩/৪৯)

    শ্রীলংকা ৩২ ওভারে ৮৮/৪ ( ম্যাথিউস ২৭*, সিলভা ১৫*; সাউদি ৩/২৯, গ্র্যান্ডহোম ১/১৯) 

     

    বল হাতে গতির ঝড় তুলবেন, এটা প্রত্যাশিতই ছিল। টিম সাউদি অবশ্য শ্রীলংকার মাথাব্যথার কারণ হলেন নিজের ব্যাটিংয়ের জন্যও। সুরাঙ্গা লাকমলে টালমাটাল নিউজিল্যান্ডকে লড়াই করার পুঁজি এনে দিয়েছেন সাউদিই। ব্যাটিংয়ের পর বল হাতেও শ্রীলংকাকে স্বস্তিতে রাখেননি তিনি। সাউদির অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে প্রথম ইনিংসের অল্প পুঁজি নিয়েও শ্রীলংকাকে চাপে রেখেছে নিউজিল্যান্ড।

    সকাল থেকেই ক্রাইস্টচার্চের আকাশ মুখ গোমড়া করে ছিল। এজন্যই টসে জিতে নিউজিল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিলেন দিনেশ চান্ডিমাল। অধিনায়কে নেওয়ার সিদ্ধান্তটাকে সঠিক প্রমাণ করলেন লাকমল। তাঁর তান্ডবেই লন্ডভন্ড কিউই টপ অর্ডার। নবম ওভারে ৬ রান করে ফেরেন জিত রাভাল। মিড অফে চান্ডিমালের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। সেই শুরু, দুই ওভার পরেই আগের ম্যাচের সেরা টম লাথামকে আউট করেন লাকমল। স্লিপে কুশল মেন্ডিসের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি, আউট হওয়ার সময় তাঁর রান ছিল ১০। কেন উইলিয়ামসন ও হেনরি নিকলসও লাকমলের শিকার। উইলিয়ামসন ২ রান করে ফিরেছেন কিপার নিরোশাল ডিকভেলার হাতে তালুবন্দি হয়ে। ১ রান করা নিকোলস হয়েছেন বোল্ড।

    ৩৬ রানে চার উইকেট হারিয়ে তখন ধুঁকছে নিউজিল্যান্ড। ক্রিজে থিতু হওয়ার আভাস দিচ্ছিলেন রস টেলর। তবে মরার ওপর খাড়ার ঘা হয়ে দাড়ায় টেলরের রান আউট, লাহিরু কুমারের দারুণ এক থ্রোতে ২৭ রানে থামে টেলরের ইনিংস। কিছুক্ষণ পর কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমকেও ফেরান লাহিরু। অফ স্ট্যাম্পের অনেক বাইরের বলে মারতে গিয়ে মিড অফে চামিরার হাতে ক্যাচ দিয়েছেন গ্র্যান্ডহোম।

    কিউইদের ইনিংস তখন ১০০ রানের মাঝেই শেষ হওয়ার শঙ্কায়। সেই দুরবস্থা থেকে দলকে টেনে তুলেছে বিজে ওয়াটলিং-টিম সাউদি জুটি। এই জুটির ১০৮ রানই নিউজিল্যান্ডকে কিছুটা হলে পুঁজি এনে দিয়েছে। এই জুটিতে বেশি আক্রমণাত্মক ছিলেন সাউদিই। ছয় চার ও তিন ছয়ে মাত্র ৬৫ বলেই করেন ৬৮ রান। সাউদি ফিফটি পেলেও হাফ সেঞ্চুরি পাওয়া হয়নি ওয়াটলিংয়ের, করেছেন ৪৬ রান। শ্রীলংকার মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ান এই জুটি ভাঙ্গেন দিলরুয়ান পেরেরা। মিড উইকেটে গুনাথিলাকার অবিশ্বাস্য এক ক্যাচেই শেষ হয় সাউদির দুর্দান্ত সেই ইনিংস। এরপর খুব বেশিক্ষণ টেকেনি নিউজিল্যান্ডের ইনিংস, মাত্র ৫০ ওভারেই ১৭৮ রানে গুটিয়ে যায় তাঁরা। ৫৪ রানে ৫ উইকেট নিয়ে কিউইদের ব্যাটিং লাইনআপকে একাই ধসিয়ে দিয়েছেন লাকমল।

    ব্যাটিংয়ের পর বোলিংয়েও ছিল সাউদির রাজত্ব। লংকান টপ অর্ডারকে ধসিয়ে দিয়েছেন তিনি একাই। দুই অংক ছুঁতে পারেননি প্রথম তিন ব্যাটসম্যান। ষষ্ঠ ওভারে গালিতে থাকা উইলিয়ামসনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৭ রান করা দিমুথ করুনারত্নে। দুই ওভার পর ফেরেন চান্ডিমালও। সাউদির বলে ব্যাটের কানায় লেগে বল যায় কিপারের হাতে, তাঁর রান তখন ৬। শর্ট বলে মারতে গিয়ে জিত রাভালের হাতে স্কয়ার লেগে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন ৮ রান করা দানুস্কা গুনাথিলাকা।

    ২১ রানে তিন উইকেট পড়ার পর কিছুটা প্রতিরোধের আভাস দিয়েছিলেন আগের ম্যাচে ম্যাচ বাঁচানো দুর্দান্ত এক জুটি গড়া কুশল মেন্ডিস ও অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। ১৫ রানে গ্র্যান্ডহোমের বলে উইকেটের পেছনে ওয়াটলিংয়ের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরতে হয় মেন্ডিসকে। দিনের বাকি সময়ে আর বিপদ হতে দেননি ম্যাথিউস ও রোশেন সিলভা। লংকানদের ভরসা হয়ে টিকে আছে সেই ম্যাথিউসই। বাকিদের নিয়ে দলকে বড় লিড এনে দিতে পারেন কিনা ম্যাথিউস, সেদিকেই তাকিয়ে আছে শ্রীলংকা।