• নিউজিল্যান্ড-শ্রীলংকা সিরিজ
  • " />

     

    বোল্টের ১৫ বলের ঝড়ে লন্ডভন্ড শ্রীলংকা

    বোল্টের ১৫ বলের ঝড়ে লন্ডভন্ড শ্রীলংকা    

    স্কোর 

    দ্বিতীয় দিন শেষে

    নিউজিল্যান্ড ১৭৮ ও ৭৯ ওভারে ২৩১/২ ( ল্যাথাম ৭৪*, রাভাল ৭৪; পেরেরা ১/৫৭) 

    শ্রীলংকা ৪১ ওভারে ১০৮ ( ম্যাথিউস ৩৩, সিলভা ২১; বোল্ট ৬/৩০, সাউদি ৩/৩৫)

    নিউজিল্যান্ড ৩০৫ রানে এগিয়ে 

     

    মিনিটের হিসেবে সেটা ২০, বলের হিসেবে ২৬, আর রানের হিসেবে ১০। এই অল্প সময়ের মাঝে ট্রেন্ট বোল্ট যে গতির ঝড় তুললেন, তাতেই লন্ডভন্ড শ্রীলংকার ব্যাটিং লাইনআপ। অবিশ্বাস্য এক ব্যাটিং বিপর্যয়ে ক্রাইস্টচার্চে প্রথম ইনিংসে মাত্র ১০৪ রানেই অলআউট হয়েছে লংকানরা। বোল্টের দুর্দান্ত এক স্পেলের পর টপ অর্ডারের দৃঢ়তায় বড় লিড নিয়েছে নিউজিল্যান্ড।

    কুশল মেন্ডিস ও অ্যাঞ্জেলো ম্যথিউস দিনের শুরুটা করেছিলেন দেখেশুনেই। আগের টেস্টের মতো এবারও লংকানদের টেনে তুলবে এই জুটি, সমর্থকদের আশা ছিল এমনটাই। প্রায় এক ঘণ্টা পর মেন্ডিসকে ফিরিয়ে সেই আশায় পানি ঢেলে দেন কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম। উইকেটের পেছনে বিজে ওয়াটলিংকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ১৫ রান করা মেন্ডিস। এরপর রোশান সিলভাকে নিয়ে ৪৩ রানে জুটি গড়েছেন ম্যাথিউস।

    এর পরেই আসে সেই বোল্ট ঝড়। ৩৬ তম ওভারের চতুর্থ বলে স্লিপে টিম সাউদির হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সিলভা। বিপর্যয়ের সেই শুরু। মাত্র ১১ বলের মাঝেই বোল্ট নেন আরও চার উইকেট। ১১ বলে পাঁচ উইকেট তুলে নিয়ে দ্রুততম সময়ে এক ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেওয়ার রেকর্ডটাও নিজের করে নিয়েছেন বোল্ট।

    ৩৯ তম ওভারে বোল্ট নেন তিন উইকেট। প্রথম বলেই স্লিপে থাকা সাউদির হাতে ক্যাচ দেন নিরোশান ডিকভেলা। পঞ্চম বলে দিলরুয়ান পেরেরাকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন বোল্ট। পরের বলেই সুরাঙ্গা লাকমলও ফেরেন এলবিডব্লিউ হয়ে। পরের ওভারে বল করতে এসে বোল্ট তুলে নেন শ্রীলংকার শেষ দুই উইকেট। দুসমান্থা চামিরা ও লাহিরু কুমারা দুজনেই ফিরেছেন এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়ে। ৯৪ রানে ৪ উইকেট থেকে ১০৪ রানেই অলআউট হয় শ্রীলংকা। শেষ ছয় উইকেট পড়েছে মাত্র ১০ রানের ব্যবধানে। ১৫ বলের বিধ্বংসী এক স্পেলে ৬ উইকেট নিয়েছেন বোল্ট, এটাই তাঁর ক্যারিয়ার সেরা বোলিং।

    প্রথম ইনিংসে ৭৪ রানের লিড পেয়ে বদলে গেছে নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিংও। আগের ইনিংসে ব্যর্থ টপ অর্ডার এবার ঠিকই জ্বলে উঠেছে। জিত রাভাল, টম ল্যাথাম ও কেন উইলিয়ামসন; রান পেয়েছেন প্রথম তিন ব্যাটসম্যানই। ওপেনিং জুটিতে রাভাল-ল্যাথাম তুলেছেন ১২১ রান। দুজনেই পেয়েছেন হাফ সেঞ্চুরি। বোল্ট যেখানে গতি ও সুইংয়ে নাকাল করেছিলেন লংকান মিডল অর্ডারকে, সেই তুলনায় লংকান বোলাররা খুব বেশি বিপদে ফেলতে পারেননি কিউইদের। প্রথম ইনিংসের নায়ক লাকমলও ছিলেন নিষ্প্রভ। লাঞ্চের পর চা বিরতি পর্যন্ত কোনো উইকেট হারায়নি কিউইরা।

    শেষ সেশনের দ্বিতীয় ওভারে রাভালকে ফিরিয়ে ১২১ রানের জুটি ভাঙেন পেরেরা। ৭৪ রান করে শর্ট লেগে মেন্ডিসের হাতে তালুবন্দি হয়ে সেঞ্চুরি পাওয়া হয়নি রাভালের। রাভাল ফিরলেও উইলিয়ামসনকে নিয়ে ল্যাথামের জুটি লিড ২৫০ ছাড়িয়ে যায়। ফিফটি থেকে দুই রান দূরে থাকতে আউট হন উইলিয়ামসন। কুমারার বলে অনেকটা আলসে ভঙ্গিতে শট খেলে স্লিপে মেন্ডিসের হাতে ক্যাচ দেন কিউই অধিনায়ক।

    ল্যাথাম ও রস টেলর দিনের বাকি সময়ে আর বিপদ হতে দেননি। দুজনের দৃঢ়তায় নিউজিল্যান্ডের লিড পেরিয়েছে ৩০০ রান। দ্বিতীয় দিন শেষে নিউজিল্যান্ডের লিড ৩০৫, হাতে আছে আরও ৮ উইকেট। ম্যাচ বাঁচাতে বাকি তিনদিনে তাই আগের ম্যাচের মতো অবিশ্বাস্য কিছুই করতে হবে লংকান ব্যাটসম্যানদের।