• চ্যাম্পিয়নস লিগ
  • " />

     

    কিক অফের আগে: মাদ্রিদে ফিরছেন 'জুভেন্টাসের' রোনালদো

    কিক অফের আগে: মাদ্রিদে ফিরছেন 'জুভেন্টাসের' রোনালদো    

    মাদ্রিদে ফিরছেন 'জুভেন্টাসের' রোনালদো

    অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ বনাম জুভেন্টাস; ইউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ শেষ ষোল প্রথম লেগ; ওয়ান্ডা মেট্রোপলিটানো; ২১ ফেব্রুয়ারি, রাত ২টা

     

     

    বাঁ-প্রান্ত থেকে ক্রস করলেন গ্যারেথ বেল। সর্বাত্মক চেষ্টা করলেন ডিয়েগো গোডিন, নাগাল পেলেন না তার। বেলের ক্রসে আলতো করে পা ছোঁয়ালেন তিনি। ঝাঁপিয়ে পড়েও শেষ রক্ষা হল অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের গোলরক্ষক ইয়ান ওবলাকের। আগে করেছিলেন দু'গোল, ওবলাককে পরাস্ত করলেন তৃতীয়বারের মত। হ্যাটট্রিক পূরণ করেই ছুটে গেলেন কর্ণারের দিকে। বসে পড়ে কী যেন ভাবার ইঙ্গিত করলেন। পুরো ম্যাচ তাকে দুয়ো দেওয়া অ্যাটলেটিকো সমর্থকেরা তখন নিশ্চুপ। চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে আবারও মুখোমুখি হয়েছিলেন অ্যাটলেটিকোর, সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে করেছিলেন হ্যাটট্রিক। আজ বৃ্হস্পতিবার জুভেন্টাসের হয়ে আবারও ফিরে যাচ্ছেন 'পুরনো' শত্রুঘাঁটিতে। ওয়ান্ডা মেট্রোপলিটানোতে জুভেন্টাসের বিপক্ষে শেষ ষোলর প্রথম লেগের আগে তাই আবারও রোনালদোকে থামানোর ছক কষতে হবে অ্যাটলেটিকো কোচ ডিয়েগো সিমিওনের, যা করে এসেছেন গত বছর আটেক ধরে।

     

     

    'শুধু রোনালদোকে ঘিরে ছক সাজানো যাবে না'

    নগর প্রতিদ্বন্দ্বী রিয়ালের রোনালদো বেশ ভুগিয়েছেন তাদের। আজ বৃহস্পতিবার জুভেন্টাসের হয়ে আবারও মাদ্রিদে আসছেন রোনালদো। তবে নকআউট পর্বের প্রথম ম্যাচে সিমিওনের ভাবনায় শুধু রোনালদো নয়, আছে পুরো জুভেন্টাস, 'ক্রিস (রোনালদো) কতটা দুর্দান্ত একজন ফুটবলার, তা সবাই জানে। এই বয়সে এসেও প্রায় প্রতি ম্যাচেই গোল করে চলেছে। সে রীতিমত এক মেশিন। জুভেন্টাসের আক্রমণভাগকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে সে। অবশ্যই সে প্রতিপক্ষের মূল ভরসা, কিন্তু শুধুমাত্র ক্রিসকে ঘিরে ট্যাকটিক্স সাজানো বোকামী। জুভেন্টাসে পাউলো (দিবালা), মারিওদের (মানজুকিচ) মত দুর্দান্ত ফুটবলার আছে, যারা এক মুহূর্তেই ফলাফল বদলে দিতে পারে।' 

    গত নয় বছর প্রতি মৌসুমে অন্তত দু'বার রোনালদোর মুখোমুখি হতে হয়েছে অ্যাটলেটিকোকে। তবে রোনালদোর প্রতি কোনও চাপা ক্ষোভ নয়, বরং সম্পূর্ণ শ্রদ্ধাই আছে সিমিওনের, 'কেউ আমাদের বিপক্ষে গোল করেছে বলেই তাকে ঘৃণার চোখে দেখা বা শ্রদ্ধা না করা আমার কাছে খুবই অর্থহীন মনে হয়। ক্রিস একজন উঁচুমানের পেশাদার, আর ফুটবলে পেশাদারিত্ব এবং শ্রদ্ধা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমার কাছে। সে কোনও শত্রু নয়, প্রতিপক্ষ; যার জন্য আমাদের সবারই সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা আছে।'

     

     

    'অ্যাওয়ে গোল করাটাই মূল চ্যালেঞ্জ'

    রক্ষণের দিক দিয়ে ইউরোপে অ্যাটলেটিকো জুড়ি মেলা ভার। ডিয়েগো গোডিন, হুয়ানফ্রানদের অভিজ্ঞতার সাথে হোসে মারিয়া হিমেনেজদের তারুণ্যের মিশেলে সিমিওনের দলের বিপক্ষে জাল খুঁজে পাওয়া ভার। আর গোলবারের নিচে ইয়ান ওবলাক তো আছেনই। ওয়ান্ডা মেট্রোপলিটানোতে নিজেদের প্রথম ম্যাচের আগে তাই গোল করাকেই মূল লক্ষ্য নির্ধারণ করলেন জুভেন্টাস কোচ মাসিমিলিয়ানো আলেগ্রি, 'অ্যাটলেটিকোর দলটা দুর্দান্ত। বিশেষ করে রক্ষণভাগ। প্রায় প্রতি মৌসুমেই সবচেয়ে কম গোল খাওয়া দলগুলোর একটি হয়ে এসেছে তারা। জিততে না পারলেও আমাদের সম্ভাবনা শেষ হয়ে যাবে না। এর মানে এই না যে আমরা জয়ের জন্য লড়ব না। তবে তাদের মাঠে গোল করাটাই মূল চ্যালেঞ্জ।'

     

    দলের খবর

    মৌসুমের অন্যতম বড় ম্যাচের আগে ইনজুরি নিয়ে খুব একটা ভুগতে হচ্ছে না কোনও দলকেই। অ্যাটলেটিকোর হয়ে থাকছেন না লুকাস হার্নান্দেজ, আর জুভেন্টাসের হয়ে থাকছেন না হুয়ান কুয়াদ্রাদো।

     

     

    সম্ভাব্য মূল একাদশ

    অ্যাটলেটিকো (৪-৩-৩): ওবলাক; আরিয়াস, গোডিন, হিমেনেজ, লুইজ; কোকে, রড্রি, থমাস; সল, মোরাতা, গ্রিযমান

    জুভেন্টাস (৪-৩-৩): শেজনি; ক্যান্সেলো, বনুচ্চি, কিয়েলিনি, সান্দ্রো; মাতুইদি, পিয়ানিচ, চান; দিবালা, রোনালদো, মানজুকিচ

     

    সংখ্যায় সংখ্যায়

    • চ্যাম্পিয়নস লিগে কখনোই অ্যাটলেটিকোকে হারাতে পারেনি জুভেন্টাস
    • ইউরোপে নিজেদের শেষ ১২ 'হোম' ম্যাচে অপরাজিত অ্যাটলেটিকো
    • অ্যাটলেটিকোর বিপক্ষে রিয়ালের ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোল রোনালদোর (২২)
       

     

    'ফেভারিট' সিটির সামনে 'সারপ্রাইজ প্যাকেজ' শালকে

    শালকে বনাম ম্যানচেস্টার সিটি; ইউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ শেষ ষোল প্রথম লেগ; শালকে অ্যারেনা; ২১ ফেব্রুয়ারি, রাত ২টা 

    চ্যাম্পিয়নস লিগ শেষ ষোলতে শালকের স্মৃতিটা বেশ মিশ্র। শেষ ২০১৫ সালে চ্যাম্পিয়নস লিগের নকআউট পর্বে এসেছিল জার্মানরা। রিয়াল মাদ্রিদের কাছে নিজেদের মাঠে ২-০ গোলে হারের পর সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে হয়ত রিয়ালেরই আরও এক সহজ জয় দেখছিলেন অনেকে। কিন্তু ২০১৫-এর ১১ মার্চ বার্নাব্যুতে রিয়ালকে রীতিমত কাঁপিয়েই দিয়েছিল শালকে। ৪-৩ গোলে জয়ে পরের রাউন্ডে অবশ্য যেতে পারেনি, কিন্তু বিদায় নিয়েছিল মাথা উঁচু করেই। ৪ বছর পর আবারও নক আউড় পর্বে শালকে, এবারও প্রতিপক্ষ ইউরোপের আরেক পাওয়ারহাউজ ম্যানচেস্টার সিটি। প্রথম লেগে জার্মানিতে ফিরছেন পেপ গার্দিওলা, বায়ার্নের কোচ হয়ে একটা সময় শালকে অ্যারেনাতে এসেছিলেন হরহামেশাই। রিয়ালের মত ঘাম ছুটিয়ে নয়, সিটির লক্ষ্য নিজেদের সেরাটা দিয়েই শেষ আটের পথ সুগম করা।

     

    'সিটি দুর্দান্ত, কিন্তু অজেয় নয়' 

    ২০১৮-১৯ প্রিমিয়ার লিগ টেবিলের দুইয়ে থাকলেও ইউরোপের সিটির মত আক্রমণাত্মক দল খুব কমই আছে। এই মৌসুমে ইউরোপে গোলের 'সেঞ্চুরি' পূরণ করা একমাত্র দল তারা। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই এসেছে পরের রাউন্ডে। শালকের বিপক্ষে স্বাভাবিকভাবেই 'ফেভারিট' তারা। তবে শালকে কোচ ডমেনেকো টেডেস্কোর বিশ্বাস, সিটিকে হারানো সম্ভব, 'পেপ (গার্দিওলা) অসাধারণ এক দল বানিয়েছে। প্রতি ম্যাচেই তারা অন্তত ৩-৪ গোল করছে। সিটির প্রত্যেকেই দলে নিজেদের ভূমিকা খুব ভালমত জানে। মাঝমাঠ এবং আক্রমণভাগ দুর্দান্ত তাদের। কিন্তু সিটিকেও হারানো সম্ভব। এই মৌসুমেই তারা হেরেছে। কিন্তু সেজন্য আমাদের সর্বোচ্চটাই দিতে হবে।'

     

     

    'সেরাটা দিতে না পারলে বিদায় নিতে হবে'

    গ্রুপপর্বের প্রথম ম্যাচ হারলেও নিজেদের গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হয়েই নকআউট পর্বে এসেছে সিটি। বায়ার্ন মিউনিখের কোচ থাকার সময় শালকের বিপক্ষে একাধিকবার খেলেছিলেন গার্দিওলা। পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকেই জানিয়েছেন, সাবধান না থাকলে বেজে যেতে পারে বিদায়ঘণ্টা, 'শালকে প্রতি-আক্রমণে অসাধারণ দল। এবারের বুন্দেসলিগাতেও ভাল করছে তারা। তবে সবচেয়ে বড় কথা, আমরা এখন নকআউট পর্বে আছি। এখানে ছোট বড় বলে কিছু নেই। ভাল করতে না পারলে বিদায় নেওয়াটা খুব অস্বাভাবিক কিছু নয়। সে অবস্থা যেন না হয়, সেজন্য পূর্ণ প্রস্তুতিই নিচ্ছি আমরা।'


     

    দলের খবর

    ইনজুরির কারণে শালকের হয়ে থাকছেন না ব্রিল এম্বোলো, বেনজামিন স্তাম্বুলি এবং ডমিনিক শফ। বহিষ্কারাদেশের কারণে থাকছেন না ওমর মাস্কারেল। সিটির হয়ে ম্যাচটি মিস করবেন বেনজামিন মেন্ডি, জন স্টোনস, গ্যাব্রিয়েল হেসুস।

     

     

    সম্ভাব্য মূল একাদশ

    শালকে (৪-৫-১):ফারম্যান; সানে, নাসতাসিচ, ওজিপকা, কালিজুরি; কেনি, বেন্টালেব, মাটোন্ডো, উথ; কনোপ্লিয়াঙ্কা; বার্গস্টেলার

    ম্যান সিটি (৪-৩-৩):এডারসন; ওয়াকার, অটামেন্ডি, কম্পানি, লাপোর্তে; ডি ব্রুইন, ফার্নান্দিনহো, সিলভা; সিলভা, আগুয়েরো, স্টার্লিং

     

    সংখ্যায় সংখ্যায়

    • ৪ বছর পর চ্যাম্পিয়নস লিগের নকআউট পর্বে এসেছে শালকে 
    • নিজেদের শেষ ৬ ম্যাচে মাত্র ১বার হেরেছে শালকে