হেটমেয়ারের পর ইংল্যান্ডকে কটরেলের 'স্যালুট'
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৫০ ওভারে ২৮৯/৬ (হেটমেয়ার ১০৪*, গেইল ৫০; রশিদ ১/২৮, প্লাঙ্কেট ১/৩৯ )
ইংল্যান্ড ৪৭.৪ ওভারে ২৬৩ (স্টোকস ৭৯, মরগান ৭০; কটরেল ৫/৪৬, হোল্ডার ৩/৫৩)
ফলঃ ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২৬ রানে জয়ী
ম্যাচের তখন ১০ ওভার ১ বল বাকি। ইংল্যান্ডের জেতার জন্য দরকার ৬২ রান, হাতেয়াছে ৬ উইকেট। বেন স্টোকস সেঞ্চুরি দেখতে পাচ্ছেন, জয় দেখতে পাচ্ছে ইংল্যান্ড। স্টোকস আউট হলেন, ইংল্যান্ডের দিগন্তথেকেও হারিয়ে গেল জয়। এরপর গল্পটা শুধু শেলডন কটরেলের আর ইংল্যান্ডকে একের পর এক স্যালুট করে যাওয়ায়। শেষ ৩৫ রানে ৬ উইকেট হারাল ইংল্যান্ড, অলআউট হয়ে গেল ২৬৩ রানে। ২৬ রানের জয়ে দ্বিতীয় ম্যাচে সমতা ফেরাল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
অথচ ইংল্যান্ডের জয়টা একেবারেই সহজ ছিল। ব্রিজটাউনের উইকেট ব্যাট করার জন্য মোটেই সহজ ছিল না। ১০ রানের মধ্যে জেসন রয় ও জনি বেইরস্টোকে তুলে নিয়ে কটরেল শুরুটা দারুণ করলেন। ইন ফর্ম জো রুট দারুণ খেলতে খেলতে ৩৬ রানে আউট, ৬০ রানে ইংল্যান্ড হারাল তৃতীয় উইকেট। ২৯০ রানের লক্ষ্যটা মনে হচ্ছিল অনেক দূরের পথ।
সেই পথটা কাছে চলে এলো অইন মরগান ও বেন স্টোকসের কল্যাণে। পালটা আক্রমণে দুজন তরতর করে এগিয়ে নিয়ে যাছিলেন দলকে। এর মধ্যে ৪১ ও ৫১ রানে মরগানের দুইটি ক্যাচ ছেড়ে সাহায্যের হাতও ভালোমতোই বাড়িয়ে দিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেষ পর্যন্ত মরগানকে ৭০ রানে আউট করলেন সেই কটরেলই। তবে স্টোকস ছিলেন, বাটলারের সঙ্গে তাঁর ৬৭ রানের জুটিটা জয়ের দিকেও নিয়ে যাচ্ছিল। তবে স্টোকসকে ৬৭ রানে ফিরিয়ে জুটিটা এর চেয়ে বেশি বর হতে দেননি অধিনায়ক হোল্ডার। ধসের শুরুটা ওখানেই, বাটলারকেও ৩৪ রানে ফিরিয়ে দেন হোল্ডারই। তবে মঈন আলী, টম কারান, আদিল রশিদরা ব্যাট করতে জানেন। কিন্তু কাল হলো না কিছুই। কারান হোল্ডারের প্রথম বলেই বোল্ড, মইনকে ১২ রানে ফেরালেন কটরেল। রশিদকে ১৫ রানে ফিরিয়ে ওয়ানডেরতে প্রথমবার ৫ উইকেট পেলেন কটরেল, পাঁচ বার দেখা গেল সেই স্যালুট। ইংল্যান্ড তাই পুরো ৫০ ওভার খেলার আগেই হেরে গেল।
তবে ম্যাচসেরার পুরস্কারটা কটরেল পাননি অন্য একজনের কারণে। কঠিন উইকেটে শিমরন হেটমেয়ার যে ইনিংসটি খেললেন, সেটাই আসলে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে অনেক দূর নিয়ে গিয়েছিল। ক্রিস গেইল ও জন ক্যাম্পবলের শুরুটা মন্দ হয়নি আজ। তবে পার্থক্য একটাই, গেইল আজ শুরু থেকে রান তোলার ব্যাপারে তুলনামূলক বেশি মনযোগী ছিলেন। ৬১ রানে দুজনের উদ্বোধনী জুটি যখন ভাঙল, ক্যাম্পবেলের রান ২৩। গেইল ফিফটি পেলেন ৬১ বলে, বড় কিছুর মঞ্চটা প্রস্তত হয়েই গেছে। কিন্তু এর পরেই আদিল রশিদের দুর্দান্ত একটা বলে বোল্ড, ঠিক ৫০ রানেই চারটি ছয় মেরে থামলেন গেইল।
শেই হোপ তাঁর মতোই সাবলীল ছিলেন, কিন্তু স্টোকসকে পুল করতে গিয়ে আউট হলেন ৩৩ রানে। এরপর ড্যারেন ব্রাভোকে নিয়ে পথ দেখানোর কাজ শুরু করলেন হেটমেয়ার। দুজনের ৭৬ রানের জুটিটা ভাঙল ব্রাভোর রান আউটে, এর মধ্যে ব্রাভো অবশ্য করেছেন ২৫ রান। হেটমেয়ার ওদিকে একাই চালিয়ে যাচ্ছেন ঝড়। ৪৭ বলে ফিফটি পেলেন, তবে সেঞ্চুরির জন্য অপেক্ষা করতে হলো শেষ ওভার পর্যন্ত। শেষের আগের বলে দুর্দান্ত এক চারে চতুর্থ সেঞ্চুরি পেলেন হেটমেয়ার, সেটিও ৮২ বলে। আর তাতেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ পেল ২৮৯ রানের বিশাল পুঁজি।