সাইফ উদ্দিন-মাশরাফিতে ম্লান সেঞ্চুরিয়ান ইয়াসির
স্কোর
আবাহনী ৫০ ওভারে ২৩৬ (সাইফ উদ্দিন ৫৯*, মোসাদ্দেক ৫৪, শান্ত ৪৪, মাশরাফি ২৬*; নাঈম জুনিয়র ২/২৮)
ব্রাদার্স ৫০ ওভারে ২২২/৮ (ইয়াসির ১০৬*; সাব্বির ২/২১, মাশরাফি ২/৩৯ )
ফলঃ আবাহনী ১৪ রানে জয়ী
ম্যাচসেরাঃ মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন
একজন বাংলাদেশের ক্রিকেটের পঞ্চপাণ্ডবের অন্যতম, আরেকজনকে ধরা হচ্ছে তাঁর উত্তরসূরি। আর তৃতীয়জন এখনো জাতীয় দলে আসেন নি, তবে কড়া নাড়ছেন দরজায়। প্রথম দুজন ব্যাটে-বলে জ্বলে উঠলেন, তবে তৃতীয় জন সেঞ্চুরি করে একাই টেক্কা দিয়ে দিচ্ছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত মাশরাফি বিন মুর্তজা আর সাইফ উদ্দিনের কাছে ম্লান হয়ে গেলেন ইয়াসির আলী। লিস্ট এ তাঁর দ্বিতীয় সেঞ্চুরিও বাঁচাতে পারল না ব্রাদার্সকে, ওয়ালটন ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে ১৪ রানের জয় পেল আবাহনী।
মাত্র দুই দিন আগে এসেছেন ভারত থেকে। এক দিনেরে অনুশীলনেই আজ নেমে গেছেন লিগে। অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে মাশরাফি যখন মাঠে নেমেছেন, ১৭৪ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলেছে আবাহনী। মিরপুরের উইকেট এমনিতেই স্লথ, আজকে টু-ফেসড উইকেটে বল ব্যাটেই আসছিল না। নাজমুল হোসেন শান্ত তাই ৪৪ রান করতে খেললেন ৭২ বল। মোসাদ্দেকের ইনিংসটা তো আরও স্লথ, ৯৫ বলে করেছেন ৫৪ রান। অধিনায়ক মোসাদ্দেক যখন আউট হলেন, ইনিংসের বাকি ৩২ বল। আবাহনীর রান ২০০ হয় কি না সেটা নিয়েই সন্দেহ।
সেটা তো ২০০ হলোই, তার চেয়ে অনেক বেশিই হলো। ৪৭তম ওভার থেকে এলো ৯ রান, ঝড়ের আভাসটা তখন মাত্র দেখা দিচ্ছে। পরের ওভারে মাশরাফি খেললেন অবিশ্বাস্য একটা শট। মোহাম্মদ শরীফের বিমারে ঠেকাতে গিয়ে উল্টো স্কয়্যার লেগের ওপর দিয়ে মারলেন বিশাল এক ছয়।
মেহেদী হাসানের পরের ওভারে সাইফ উদ্দিনও দুর্দান্ত। প্রথম তিন বলে মারলেন তিন চার। এর মধ্যে অফ স্টাম্পের বাইরের বলটা যেভাবে ফ্লিক করে চার মারলেন, সেটি মিরপুরের গুটিকয়েক দর্শকের চোখে লেগে থাকবেই। ওই ওভারে এলো ১৮ রান। পরের ওভারে আরও খুনে সাইফ উদ্দিন, চার মেরে ফিফটির পর শেষ বলে বোলারের মাথার ওপর দিয়ে মারলেন দারুণ এক ছয়। শেষ ৫ ওভারে এলো ৬২ রান। ৪৫ বলে ৫৯ রানে অপরাজিত সাইফ উদ্দিন, ১৫ বলে ২৬ রানে মাশরাফি।
ওই ৫ ওভারই আসলে পার্থক্য গড়ে দিয়েছে ম্যাচের। ব্রাদার্স শুরু থেকে হোঁচট খাচ্ছিলই। ৩২ রানের ভেতর ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে ব্রাদার্স, আউট হয়ে গেছেন মিজানুর রহমান, জুনাইদ সিদ্দিকী ও হামিদুল ইসলাম। এর মধ্যে দুই উইকেট মাশরাফি ও সাইফের। ভারতের চেরাগ জানি অবশ্য ১৫ রানের বেশি করতে পারলেন না, ৬২ রানের ভেতর ৪ উইকেট হারাল ব্রাদার্স।
তবে ইয়াসির লক্ষ্যের দিকে ছিলেন অবিচল। ৬৩ বলে পেলেন ফিফটি, কিন্তু অন্য পাশ থেকে কেউ সঙ্গ দিতে পারছিলেন না। শরিফুল্লাহ, মোহাম্মদ শরিফ সবাই শুরুটা করেও বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি। ১৭৬ রানে সপ্তম উইকেট পড়ার পর জোয়ালটা নিজের কাঁধেই তুলে নিয়েছিলেন, নাঈম ইসলাম জুনিয়রকে নিয়ে অষ্টম উইকেটে যোগ করলেন ৪১ রান। এর মধ্যে ১০৫ বলে পেয়ে গেছেন সেঞ্চুরিও, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা জয়ের জন্য যথেষ্ট হলো না। শেষ ওভারে ২৩ রান দরকার ছিল ব্রাদার্সের, তারা নিতে পারল ৮ রান। ইয়াসির ১০৬ রানে অপরাজিত রইলেন, এরপর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শরিফুল্লার ২১। আবাহনীও পেল টানা তৃতীয় জয়।