• ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগ
  • " />

     

    সৌম্য-জহুরুলের ঝড়ে টানা দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন আবাহনী

    সৌম্য-জহুরুলের ঝড়ে টানা দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন আবাহনী    

    সুপার লিগ, বিকেএসপি
    শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব ৩১৭/৯, ৫০ ওভার 
    আবাহনী লিমিটেড ৩১৯/১, ৪৭.১ ওভার 
    আবাহনী ৯ উইকেটে জয়ী 


    ম্যাচটা আবাহনীর কাছে ছিল প্রায় শিরোপা-নির্ধারণী। হারলেও আশা থাকতো, সেক্ষেত্রে ওপাশে হারতে হতো রূপগঞ্জকে, যারা এই ম্যাচের আগে রান-রেটে পিছিয়ে পড়েছিল একটু। তবে প্রথমে ব্যাটিং করে অন্যদিকে রূপগঞ্জ তুলেছিল ৩২৭ রান, আবাহনীর জয়টা হয়ে পড়েছিল তাই প্রায় আবশ্যিক। আবাহনী কারও ওপর নির্ভর করলো না, বিকেএসপিতে সৌম্য সরকারের রেকর্ড অপরাজিত ২০৮ ও জহুরুল ইসলামের সেঞ্চুরিতে শেখ জামালের ৩১৭ রানের লক্ষ্য ১৭ বল বাকি থাকতেই পেরিয়ে গিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা জিতে গেছে তারা। এ নিয়ে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ২০ বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হলো আবাহনী।

    লিগে শুরুটা দুর্দান্ত হয়েছিল আবাহনীর, টানা চার ম্যাচ জেতার পর তারা হেরেছিল প্রাইম ব্যাংকের কাছে। এরপর আবার টানা চার জয়ের তারা থমকে গিয়েছিল রূপগঞ্জের কাছে। লিগপর্বে শেখ জামালের কাছেও হেরেছিল তারা, অন্যদিকে শুধু এক হারে সুপার লিগের আগে বেশ এগিয়ে ছিল রূপগঞ্জ। সুপার লিগে আবাহনী দেখালো অন্যরূপ, জিতল সবকটি ম্যাচই। আর শেখ জামালের কাছে হারের পর আবাহনীর সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচও হেরে শিরোপাদৌড় থেকে পিছিয়ে পড়েছিল রূপগঞ্জ। 

    বিকেএসপিতে এদিন লিগের মতোই ম্যাচেও শুরুটা দারুণ হয়েছিল আবাহনীর। মাশরাফি বিন মুর্তজার তোপে ৮৫ রানেই শেখ জামাল হারিয়েছিল ৫ উইকেট। এরপরই প্রত্যাবর্তনের দারুণ গল্প লেখা শুরু শেখ জামালের, যার মূল নায়ক তানভীর হায়দার। ৬ষ্ঠ উইকেটে ইলিয়াস সানিকে নিয়ে ৯১ ও ৭ম উইকেটে মেহরাব হোসেনের সঙ্গে তার জুটি ৯৮ রানের। তানভীর করেছেন তার ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি, ৯৯ বলে পূর্ণ করেছেন সেটা। ৫৫ বলে ফিফটি করেছিলেন তিনি। শেষ ৩২ রান করেছেন মাত্র ১৬ বলে, শেখ জামালের শেষ ৩৫ রানের ৩২ রান একাই করেছেন তানভীর। ৩১৭ রানে থেমেছিল শেখ জামাল, মাশরাফি ৫৬ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট। একটি করে নিয়েছেন মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন, মেহেদি হাসান মিরাজ, মোসাদ্দেক হোসেন ও সৌম্য সরকার। 

    প্রিমিয়ার লিগের এ মৌসুমে ৩০০ বা এর ওপর রান তাড়া করে এর আগে জিতেছিল শুধু শাইনপুকুর, শেখ জামাল হয়তো ছিল স্বস্তিতেই। অন্য ম্যাচে প্রথমে ব্যাটিং করে প্রাইম ব্যাংকের বিপক্ষে বড় স্কোর গড়া রূপগঞ্জও হয়তো ছিল দারুণ আশাতেই। তবে সব এলোমেলো করে দিলেন সৌম্য। সঙ্গে জহুরুল। 

    ৫৫ বলে ফিফটি করেছিলেন জহুরুল, ৫২ বলে সৌম্য। ১৭তম ওভারে ১০০ ছুঁয়েছিল আবাহনী। এরপর শুরু হয়েছে ঝড়, তারা ২০০ ছুঁয়েছে ২৮.৩ ওভারে। ৫১ থেকে ১০০-তে যেতে সৌম্য খেলেছেন ২৭ বল, পরের ফিফটি ছুঁয়েছেন ২৬ বলে। লিস্ট ‘এ’-তে প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে ডাবল সেঞ্চুরি ছুঁয়েছেন ১৪৯ বলে। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ১৫৩ বলে ২০৮ রান করে, ১৪ চারের সঙ্গে মেরেছেন রেকর্ড ১৫টি ছয়। 

    জয় থেকে ৬ রান দূরে থাকতে ইমতিয়াজ হাসানের বলে ক্যাচ দিয়েছেন জহুরুল, তবে তার আগেই ওপেনিং জুটিতে উঠে গেছে রেকর্ড ৩১২ রান। ১২৮ বলে ১০০ করেছেন জহুরুল, ৩ ছয়ের সঙ্গে মেরেছেন ৭ চার। তাইজুল ইসলামকে ছয় মেরে ম্যাচ শেষ করেছেন সৌম্য, নিশ্চিত করেছেন আবাহনীর শিরোপাও। 

    অন্যদিকে মোহাম্মদ নাইমের ১৩০ বলে ১৩৬ রানের সঙ্গে মুমিনুল হক ও মেহেদি মারুফের ফিফটিতে ৩২৭ রান তোলা রূপগঞ্জ ৮৮ রানে হারিয়েছে প্রাইম ব্যাংককে। নাহিদুল ইসলামের ৭৪ রান যথেষ্ট হয়নি প্রাইম ব্যাংকের। আরেক ম্যাচে শেষ ওভারে গিয়ে মোহামেডানকে হারিয়েছে প্রাইম দোলেশ্বর। ফরহাদ হোসেনের ৮৯ রানের সঙ্গে সৈকত আলি ও সাইফ হাসানের ফিফটিতে ২৭৪ রান তুলেছিল দোলেশ্বর, জবাবে মোহাম্মদ আশরাফুলের ৯৭ বলে ৭৬ রানের পরও আটকে গেছে মোহামেডান।