• ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগ
  • " />

     

    মোহামেডানের সামনে 'ফটোকপি জাতীয় দলের' চ্যালেঞ্জ

    মোহামেডানের সামনে  'ফটোকপি জাতীয় দলের' চ্যালেঞ্জ    

    আবাহনী আর মোহামেডানের লড়াই এখন অনেকটা রূপকথার ‘এক যে ছিল রাজা’ গল্পের মতো হয়ে গেছে। আগের সেই উত্তাপ, রোমাঞ্চ আর উত্তেজনার প্রায় কিছুই এখন আর নেই। ফুটবলে তো বটেই, ক্রিকেটেও যেমন আবাহনী-মোহামেডানের ম্যাচে এখন গ্যালারি ফাঁকা পড়ে থাকে। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে কালকের ম্যাচেও সেটির ব্যতিক্রম হওয়ার সম্ভাবনা কম। এর একটা কারণ হতে পারে, ধারে ভারে আবাহনীর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে অনেক অনেক বেশি এগিয়ে যাওয়া। সেই হিসেবে কালকের ম্যাচটিও হতে পারে একপেশে। তবে মোহামেডান কোচ মনজুরুল ইসলাম আশাবাদী, ‘ফটোকপি’ জাতীয় দলকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়তে পারবেন তারা।

    জাতীয় দলের ফটোকপি কথাটা আসলে বাড়াবাড়ি নয় মোটেই। আবাহনীতে এবারের প্রিমিয়ার লিগে খেলা নামগুলো দেখে নিন- মাশরাফি বিন মুর্তজা, সাব্বির রহমান, সাইফ উদ্দিন, সৌম্য সরকার, মোসাদ্দেক হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, রুবেল হোসেন, মোহাম্মদ মিঠুন, নাজমুল হোসেন শান্ত। গত কিছুদিনে জাতীয় দলে ঘুরেফিরে এই মুখগুলোই দেখা গেছে। সেখানে মোহামেডানের হয়ে জাতীয় দলে খেলা বলতে শুধু শফিউল ইসলাম আর লিটন দাস। লিটন অবশ্য এর মধ্যে মাঠে নামেননি, তবে সবকিছু ঠিক থাকলে কাল নামার কথা তাঁর।

    মোহামেডান কোচ মনজুরুল অবশ্য মনে করছেন, তাদের দলে পরীক্ষিত ক্রিকেটার আছে অনেক, ‘ আমার ন্যাশনাল টিমে ডেব্যু হয়েছিল মোহামেডানের পক্ষে খেলে, মোহামেডানের পক্ষে পারফর্ম করে। আমি এখনো বিশ্বাস করি, আপনি যদি দেখেন বেস্ট প্লেয়ার গুলো আবাহনী মোহামেডানে খেলছে। অন্য টিম গুলোতে খেলছে না তা না, মাশরাফি বিন মুর্তজা, লিটন দাস বলেন, সোহাগ গাজি বলেন, নাদিফ চৌধুরী বলেন, রকিবুল আছে। অপনেন্টে ন্যাশনাল টিমের অনেক গুলো প্লেয়ার আছে। যেই অপরচুনিটি (আবাহনী-মোহামেডান প্রতিদ্বন্দ্বিতা) বলছেন হারিয়ে যাবে, এটা কিন্তু আমাকে, প্লেয়ারদেরকেই ফিরিয়ে আনতে হবে। আমি মনে করি এটা কখনই হারাবে না, এটা শুড কন্টিনিউ।’

    আবাহনী অধিনায়ক মোসাদ্দেক অবশ্য বাস্তবতা মেনে নিচ্ছেন, ‘সেই উত্তেজনা আসলে মাঠে পাওয়া যায় না এখন। আগের মতো অনেক বেশি দর্শক থাকে না। আবাহনীর একটা সাইড থাকত, মোহামেডানের একটা সাইড থাকত। পুরো ভরা থাকত গ্যালারী। এখন হয়তো গুটিকয়েক দর্শক থাকে মাঠে, আমরা প্লেয়াররা তাদের মত খেলি। এটাই চলছে আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচে।’ তবে মোসাদ্দেক দর্শক-খরা নিয়ে খুব একটা ভাবতেও চান না, ‘আমরা জাতীয় দলের বাইরে যখন খেলি তখন আমাদের মেইন ফোকাস থাকে ডোমেস্টিক লীগ গুলায়। আমরা যদি দর্শক নিয়ে চিন্তা করি তাহলে নিজের পারফর্মেন্সে ফোকাস করতে পারব না। দর্শক কী করছে সেটা আমাদের মূল টার্গেট না। আমি চাইব না আবাহনী মোহামেডান হোক বা যেই ম্যাচেই হোক, দর্শক যেন থাকে। এটা বাড়তি অনুপ্রেরণা হয়ে দাঁড়ায়। তবে দিন শেষে আমাদেরেই পারফর্ম করতে হবে এটা হচ্ছে সবচেয়ে বড় কথা।’

    কিন্তু কাগজে কলমে তো আবাহনী অনেক এগিয়ে। গত নয় বছরে একবারও লিগ জেতেনি মোহামেডান, এই সময়ের মধ্যে আবাহনীর সঙ্গে সেভাবে লড়াইও করতে পারেনি। জাতীয় দলের ‘ফটোকপি’ দলের সঙ্গে কতটা লড়াই করতে পারবে?  মনজুরুল আশাবাদী, কালকেরটা ফটোকপি ম্যাচ হবে না। এটা একটা বড় ম্যাচ, কারও ফটোকপির সঙ্গে কি না তাতে কিছু যায় আসে না। যদি সামনের দিকে দেখি তাহলে ২০১৯ মোহামেডানের জন্য বড় একটি বছর হতে যাচ্ছে। যদি শেষ তিন-চারটা ম্যাচ দেখা হয়, মোহামেডান হয়তো ভালো করতে পারেনি, প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেনি। মোহামেডানের ঐতিহ্যটা টোটালি প্রফেশনালিজম। যদি ধরে রাখতে পারি তাহলে এটা গত তিন-চার বছর থেকে ভিন্ন হবে। কোচ হিসেবে দলের সদস্য হিসেবে সবার জন্য এটা একটা সুযোগ।'

     

     

    সেই সুযোগ মোহামেডান কাজে লাগাতে পারবে তো?