• পাকিস্তান-অস্ট্রেলিয়া সিরিজ
  • " />

     

    সোহেলের আরেকটি বৃথা সেঞ্চুরি, অস্ট্রেলিয়ার ৫-০

    সোহেলের আরেকটি বৃথা সেঞ্চুরি, অস্ট্রেলিয়ার ৫-০    

    ৫ম ওয়ানডে 
    অস্ট্রেলিয়া ৩২৭/৭, ৫০ ওভার 
    পাকিস্তান ৩০৭/৭, ২০ ওভার 
    অস্ট্রেলিয়া ২০ রানে জয়ী ও সিরিজে ৫-০তে জয়ী 


    এই সিরিজে এক ম্যাচের সঙ্গে আরেক ম্যাচের দারুণ মিল। চতুর্থটির সঙ্গেও মিললো পঞ্চমটি। প্রথমে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং, একটা ৯৮ রানের ইনিংসকে দারুণভাবে সহায়তা করলো বাকি তিনটি ইনিংস, ঝড় তুললেন ম্যাক্সওয়েল, এরপর এলো চ্যালেঞ্জিং স্কোর। সেটি অবশ্য সিরিজে সর্বোচ্চ, প্রথমবারের মতো ৩০০ পেরিয়ে গেল কোনও দল। পাকিস্তানের ইনিংসে এদিনও সেঞ্চুরি হলো, এক সময় রানতাড়ায় বেশ দারুণভাবে থাকলেও খেই হারালো তারা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উইকেট হারিয়ে। সিরিজজুড়ে তাই ফলটা থাকলো একই রকম। অস্ট্রেলিয়া ৫, পাকিস্তান ০। 

    এ নিয়ে এশিয়ার মাটিতে টানা দুইটি সিরিজ জিতল অস্ট্রেলিয়া, টানা ৮ ম্যাচ অপরাজিত তারা। ম্যাচশেষে অস্ট্রেলিয়ার কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গার একটু ঘুরিয়ে বললেন সবার ধারণাটাই, বিশ্বকাপের আগে বেশ একটা আত্মবিশ্বাস নিয়েই যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। আত্মবিশ্বাসী অস্ট্রেলিয়া কী করতে পারে, সেটা নাহয় সে টুর্নামেন্টেই দেখা যাবে (আরেকবার?)! 

    দুবাইয়ে শেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার জয়ের সুতোটা ধরিয়ে দিয়েছিলেন টপ অর্ডারের চারজন ব্যাটসম্যান- অ্যারন ফিঞ্চ, শন মার্শ ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ফিফটির সঙ্গে ২ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করা উসমান খাওয়াজা। মাত্র চতুর্থবার অস্ট্রেলিয়ার প্রথম চারজন ব্যাটসম্যানই করলেন ফিফটি বা এর বেশি। ফিঞ্চ-খাওয়াজার ১৩৪, খাওয়াজা-মার্শের ৮০, মার্শ-ম্যাক্সওয়েলের ৬০ রানের জুটিই অস্ট্রেলিয়াকে এনে দিয়েছে বড় স্কোরের ভিত। ম্যাক্সওয়েল এদিন ছিলেন আরও খুনে, ৭০ রান তিনি করেছেন মাত্র ৩৩ বলে, ১০ চার ও ৩ ছয়ে।

     

     

    ফিঞ্চ-খাওয়াজা শুরুটা করেছিলেন দাপুটে, পাওয়ারপ্লেতে প্রায় সমান বলে উঠেছিল ৫৭ রান। ১৮ ওভারের আগেই ১০০ ছুঁয়ে ফেলেছিল অস্ট্রেলিয়া, ৪৮ বলেই ফিফটি করেছিলেন খাওয়াজা। ২৪তম ওভারে প্রথম ব্রেকথ্রু পেয়েছিল পাকিস্তান, উসমান শিনওয়ারির বলে বোল্ড হওয়ার আগে ফিঞ্চ করেছেন ৬৯ বলে ৫৩, সিরিজে তার ব্যাটিং গড় গিয়ে দাঁড়িয়েছে ১১২.৭৫-এ! খাওয়াজার সঙ্গে এরপর যোগ দিয়েছেন মার্শ, প্রথমভাগে একটু ধীরগতির থাকলেও পরে মানিয়ে নিয়েছেন দারুণভাবে। তার ফিফটির পরপরই ফিরেছেন খাওয়াজা, যিনি ইনিংসের পরের ধাপে ছিলেন একটু ধীরগতির। শিনওয়ারির বলে মিডউইকেটে ক্যাচ দিয়ে ৯৮ রানে আউট হয়েছেন খাওয়াজা, ১১১ বল খেলে মেরেছেন ১০টি চার। 

    এরপর ম্যাক্সওয়েল শুরু করেছেন ঝড়। ইয়াসির শাহর এক ওভারে তিন চারে শুরু, মাঝে ৬১ রান করে মার্শ ফিরলেও ম্যাক্সওয়েল চালিয়ে গেছেন তান্ডব। জুনাইদকে দুই চারে ছুঁয়েছেন ফিফটি, শেষ পর্যন্ত তার বলেই বোল্ড হয়েছেন, তবে তার আগেই অস্ট্রেলিয়া পেরিয়ে গেছে ৩০০, আর তার আগেই যা ক্ষতিটা মোটামুটি হয়ে গেছে পাকিস্তানের। ম্যাক্সওয়েলের উইকেটের পরও শেষ ২ ওভারে ২৩ রান তুলে অস্ট্রেলিয়া গেছে ৩২৭ পর্যন্ত। 

    রানতাড়ায় তৃতীয় বলে জ্যাসন বেহেনড্রফের শিকার আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান আবিদ আলি। আগের চার ম্যাচ মিলিয়ে ৫৯ রান করা শান মাসুদ এরপর করেছেন ফিফটি, হারিস সোহেলের সঙ্গে তার জুটি ১০৮ রানের। হারিস পেয়েছেন সিরিজে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি, রিজওয়ান বেশিক্ষণ তাকে সঙ্গ দিতে না পারলেও উমর আকমলের সঙ্গে আরেকটি সেঞ্চুরি জুটির অংশ ছিলেন সোহেল। তবে সে জুটিটা মোক্ষম সময়ে ভেঙেছে অস্ট্রেলিয়া, ৪৪ বলে ৪৩ রান করে ন্যাথান লায়নকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং-অনে ধরা পড়েছেন আকমল। 

    ৪৬ বলে ফিফটি করেছিলেন সোহেল, বেশ আক্রমণাত্মকই ছিলেন। ৯৪ বলে পূর্ণ করেছেন সেঞ্চুরি। আকমলের সঙ্গে তার জুটি বেশ আশাই জুগিয়েছিল পাকিস্তানকে। তবে আকমলের ফেরার পরের ওভারেই ফিরেছেন তিনিও, কেন রিচার্ডসনকে আপারকাট করতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ধরার পড়ার আগে করেছেন ১২৯ বলে ১৩০ রান, ১১ চার ও ৩ ছয়ে। আরেকটি সেঞ্চুরিও তাই বৃথা গেছে শেষ পর্যন্ত তার। 

    অবশ্য আকমল-সোহেলের আক্রমণাত্মক না হয়ে উপায় ছিল না, শেষ ১০ ওভারে পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল ৮৯ রান। ৩২৮ রান তাড়ায় দুইটি বড় জুটির পরও ঠিক গতিটা ধরতে পারেনি পাকিস্তান। এ দুই উইকেটের পর কাজটা হয়ে পড়েছিল আরও কঠিন, সাদ আলির উইকেট সেটিকে বানিয়েছিল প্রায় অসম্ভব। ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক ইমাদ ওয়াসিম যা চেষ্টা করলেন, তবে তার ৩৪ বলে অপরাজিত ৫০ রানের ইনিংসও যথেষ্ট হয়নি স্বাগতিকদের জন্য। 

     

     

    আর অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপের আগে তাদের আত্মবিশ্বাসটা আরেক দফা বাড়িয়ে নিয়েছে হোয়াইটওয়াশের স্বাদের সঙ্গে।