সৌম্য-সাইফ উদ্দিনকে ছাপিয়ে আবাহনীর ভরসা জহুরুলই
দোলেশ্বর ৫০ ওভারে ২২৪/৯
আবাহনী ৪৮.৫ ওভারে ২২৭/৬
ফলঃ আবাহনী ৪ উইকেটে জয়ী
মাশরাফি বিন মুর্তজা আছেন, সাব্বির রহমান, সাইফ উদ্দিন, মেহেদী হাসান মিরাজ, মোহাম্মদ মিঠুন, সৌম্য সরকারদের নিয়ে আবাহনী এক টুকরো জাতীয় দলই। তবে এঁদের সবাইকে ছাপিয়ে যাচ্ছেন ছয় বছর জাতীয় দলের বাইরে থাকা একজন। জহুরুল ইসলাম অমির ব্যাটে আজ আরও একবার সওয়ার আবাহনী, প্রাইম দোলেশ্বরের বিপক্ষে আরও একবার জহুরুলই পথ দেখালেন আবাহনীকে। দোলেশ্বরের ২২৫ রানের লক্ষ্যটা হোঁচট খেতে লহেতেও শেষ পর্যন্ত ৪ উইকেট হাতে রেখে টপকে গেছে আবাহনী।
গত বারও লিগে আবাহনীকে কঠিন পরীক্ষায় ফেলেছিল দোলেশ্বর। এবার যে ফেলবে, শুরুতে অবশ্য সেরকম মনে হচ্ছিল না। মিরপুরের উইকেটে গত কয়েক ম্যাচে রান হয়েছে বেশ, তবে আজ আবার যেন সেই পুরনো মিরপুরই। বল একটু ধীরেই ব্যাটে আসছি, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দোলেশ্বরের ব্যাটসম্যানরা হয়ে গেলেন আরও ধীর। প্রথম ১০ ওভারে উঠল মাত্র ৩৭ রান, এর মধ্যে ফিরে গেছেন দুই ওপেনার সাইফ হাসান ও ইকরান উজ্জামান। ফরহাদ হোসেন ও সৈকত আলী এরপর একটু মেরামতের চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু সেটাও ৪৭ রানের বেশি টেকেনি। ৮৪ থেকে ৮৬- এই ২ রানের মধ্যেই দোলেশ্বর হারিয়ে ফেলে ফরহাদ ও সৈকতকে।
মার্শাল আইয়ুব ও সাদ নাসিম ৫৩ রান যোগ করে হাল ধরলেন আরেকবার। নাসিম ৪৮ বলে ৩৪ রান করে আউট হলেন। তবে মার্শাল ও তৈয়বুর রহমান এরপর রানের চাকা আরেকটু ঘোরানোর চেষ্টা করলেন। কিন্তু বড় জুটি হলো না এবারও, দুজন যোগ করতে পারলেন ৪৪ রান। মার্শালকে ফিরিয়ে সোউম্য পেয়েছেন নিজের দ্বিতীয় উইকেট, তবে বোলার সৌম্যের জন্য বাকি ছিল আরও কিছু। মানিক ও তৈয়বুরকে শেষ ওভারে ফিরিয়ে পেয়েছেন চার উইকেট, লিস্ট এ ক্যারিয়ারে প্রথম বারের মতো। শেষ দিকে নিয়মিত উইকেট হারানোয় দোলেশ্বরের রান ২২৪ এর বেশি হয়নি।
এই রান তাড়া করতে যে শুরু দরকার ছিল আবাহনীর, হলো তার ঠিক উল্টো। ভালো খেলতে খেলতেই সৌম্য আবু জায়েদ রাহীর বলটা মিস্টাইম করে ক্যাচ তুলে দিলেন মিড অনে, মাত্র ১০ রান করেই। সেই ওভারেই আবারও রাহীর উদযাপন, এবার দ্বিতীয় বলেই এলবিডব্লু শান্ত। ষষ্ঠ ওভারে গিয়ে যখন ভারতের প্রিয়াঙ্কিত পাঞ্চালকেও এলবিডব্লু করলেন ফরহাদ রেজা, ২৩ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বেশ বিপদে আবাহনী।
জহুরুল অবশ্য মনযোগ হারালেন না। দেখেশুনেই খেলছিলেন বেশ, অন্য পাশে মোহাম্মদ মিঠুনব বরং ছিলেন বেশ আগ্রাসী। কিন্তু ৪৮ বলে ৪০ রান করে মিঠুন আউট হয়ে গেলেন নাসিমের বলে। চার-ছয় মেরে শুরুটা ভালোই করেছিলেন সাব্বির, কিন্তু ২০ বলে ২৪ রান করে মানিক খানের বলে ক্যাচ তুলে ফিরলেন দ্রুতই। ১২২ রানে ৫ উইকেট নেই আবাহনীর, মোসাদ্দেকের বিদায়ে যা হয়ে গেল ১৩৫ রানে ৬ উইকেট। ২২৫ রান তখন অনেক দূরের পথ।
জহুরুল অবশ্য খেই হারালেন না। ফিফটি করলেন ৮৭ বলে, রান রেট তখন বাড়তে শুরু করেছে। তবে সাইফ উদ্দইনকে নিয়ে সেটাও বাড়ালেন দ্রুত। সাইফ নিজের ব্যাটিং ক্ষমতার প্রমাণ দিয়ে গেছেন আজও, জহুরুলের সঙ্গে ৯২ রানের জুটিটাই নিশ্চিত করে দিয়েছে জয়। সাইফ অপরাজিত ছিলেন ৫৫ রানে, জহুরুল ৯১ রানে অপরাজিত থেকে একটুর জন্য পাননি সেঞ্চুরি। তবে দলকে জিতিয়েছেন, আবাহনীও আছে শীর্ষে; জহুরুলের তাই আক্ষেপ থাকার কথা নয়।