মোহামেডানের কালবৈশাখীর জবাব টর্নেডোতে দিল শাইনপুকুর
৫৩তম ম্যাচ, মিরপুর
মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ৩২৪ অল-আউট, ৪৯.৩ ওভার
শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব ৩২৫/৮, ৪৯.৪ ওভার
শাইনপুকুর ২ বল বাকি রেখে ২ উইকেটে জয়ী
টানা দ্বিতীয়বারের মতো ৩০০ পেরুলো মোহামেডান। আগের ম্যাচটা প্রতিপক্ষ খেলতে অস্বীকৃতি জানানোয় জিতে গেলেও এবার শাইনপুকুরের সঙ্গে পেরে উঠলো না তারা। আফিফ হোসেনের ৮৬ বলে ৯৭ রানের ইনিংসের পর যথাক্রমে সোহরাওয়ার্দি শুভর ২৩ ও দেলোয়ার হোসেনের ১৯ বলে ৩৪ রানের দুটি টর্নেডো ইনিংসে মোহামেডানের দেওয়া ৩২৫ রানের লক্ষ্য ২ বল ও ২ উইকেট বাকি থাকতে পেরিয়ে গেছে শাইনপুকুর। এ জয় দিয়ে মোহামেডানকে টপকে পয়েন্ট টেবিলের পাঁচে উঠে এসেছে তারা।
মিরপুরে বড় রানতাড়ায় শেষ ১০ ওভারে ৯৩ রান প্রয়োজন ছিল শাইনপুকুরের। আফিফ তার আগেই ৭০ পেরিয়ে গেছেন, তবে ডেথ ওভারের শুরুতেই থিতু ব্যাটসম্যান অমিত হাসানকে ফিরিয়ে মোহামেডানকে ব্রেকথ্রু এনে দেন আলাউদ্দিন বাবু। আফিফ ও অমিত মিলে ৬ষ্ঠ উইকেটে মাত্র ৯৬ বলে তুলেছিলেন ১১৮ রান। এর আগে ১১৭ রানেই ৫ উইকেট হারিয়েছিল শাইনপুকুর, উন্মুক্ত চাঁদ তিনে নেমে করেছিলেন ৫১ বলে ৪৯ রান।
শেষ ৪২ বলে শাইনপুকুরের প্রয়োজন ছিল ৭৭ রান, ৪৩তম ওভারে শাহাদাতকে দুই ছয় মেরেছিলেন আফিফ। তবে আউট হয়েছেন ঠিক পরের বলেই, তার আগে ৪টি চারের সঙ্গে মেরেছেন ৫টি ছয়। শাইনপুকুর তাতে হোঁচট খেয়েছে আরেকবার। তবে আফিফের উইকেট যেন জাগিয়ে তুললো শুভকে, আলাউদ্দিন বাবুকে টানা দুই চারের পর মারলেন ছয়। সে ওভারে এসেছে ১৭ রান। পরের তিন ওভারে অবশ্য ২৩ রানের বেশি তুলতে পারেননি শুভ ও দেলোয়ার, শেষ ২ ওভারে তাই প্রয়োজন ছিল ২৩ রানের।
তবে ম্যাচের মোড়টা শেষবারের মতো ঘুরে গেল ৪৯তম ওভারে। ভারতীয় বোলার রজত ভাটিয়াকে প্রথম চার বলেই তিনটি ছয় মারলেন দেলোয়ার, পঞ্চম বলে আউট হলেও লক্ষ্যটা ততক্ষণে নাগালে চলে এসেছে শাইনপুকুরের। শাহাদাত হোসেনের করা শেষ ওভারে সে লক্ষ্যে পৌঁছাতে তাদের লেগেছে ৪ বল।
এর আগে মোহামেডান ৩০০ পেরিয়ে যাওয়ার ভিত পেয়েছিল টপ অর্ডারের চার ব্যাটসম্যানের চার ফিফটিতে। প্রিমিয়ার লিগে নিজের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নেমে লিটন দাস করেছেন ৮৯ বলে ৮৪, ৯ চারের সঙ্গে মেরেছেন একটি ছয়। ইরফান শুক্কুর ও অভিষেক মিত্র করেছেন যথাক্রমে ৬৬ ও ৫৯ বলে ৫০ করে রান। চার ও পাঁচে নেমে এরপর ঝড় তুলেছিলেন রকিবুল হাসান ও সোহাগ গাজি।
৪০ থেকে ৪৭- এই ৮ ওভারে মোহামেডান তুলেছিল ১০৫ রান। রকিবুল করেছেন ৪৮ বলে ১১ চার ও ১ ছয়ে ৭৪, ৩টি করে চার ও ছয়ে ২২ বলে ৪৫ করেছিলেন সোহাগ গাজি। তবে ১২ বলের এক ঝড়ে যেন হুট করে এলোমেলো হয়ে গেছে মোহামেদান। ৪৮তম ওভারের চতুর্থ বল থেকে শেষ ওভারের তৃতীয় বল পর্যন্ত তারা তুলেছে মাত্র ৯ রান, হারিয়েছে ৬ উইকেট! ৩ বল বাকি থাকতেই অল-আউট হয়ে গেছে তারা।
শেষ পর্যন্ত সেই অব্যবহৃত ৩ বল বা শেষদিকের এলোমেলো অবস্থারই চড়া মাশুল তাদের কাছ থেকে আদায় করেছে শাইনপুকুর।