আবাহনীর বিপক্ষে রূপগঞ্জের প্রেরণা প্রাইম ব্যাংক
৯ ম্যাচে দুই দলই জিতেছে আটটি করে ম্যাচ, দুদলেরই তাই সমান ১৬ পয়েন্ট। রানরেটের হেরফেরে অবশ্য রূপগঞ্জের (০.৪১১) চেয়ে এগিয়ে আবাহনী (০.৯৯২)। দুইটি করে ম্যাচ বাকি, এর মধ্যে একটিতে মুখোমুখি হচ্ছে দুই দল। মিরপুরে ৭ তারিখ প্রিমিয়ার লিগের এ মৌসুমের দুই ‘হেভিওয়েট’-এর লড়াই। অবশ্য সুপার লিগ নিশ্চিত হয়েছে দুই দলেরই, তার আগে লড়াই আত্মবিশ্বাসের।
আবাহনীর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রূপগঞ্জের চলাটার একটা ভাল পরীক্ষায় তাই হতে যাচ্ছে এই ম্যাচ। আবাহনীর সঙ্গে লড়াইয়ের আগে রূপগঞ্জের শাহরিয়ার নাফীস অনুপ্রেরণা পাচ্ছেন প্রাইম ব্যাংকের কাছ থেকে। মৌসুমে আবাহনীকে হারানো একমাত্র দল তারাই। মজার ব্যাপার হচ্ছে, রূপগঞ্জ যে একটি ম্যাচ হেরেছে, সেটিও ওই প্রাইম ব্যাংকের কাছেই। আবাহনীকে হারাতে ‘ডিসিপ্লিনড পারফরম্যান্স’ দরকার বলে জানাচ্ছেন তিনি, “আবাহনী অবশ্যই ভালো দল। তবে এই টুর্নামেন্টে সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে আমাদের দল এখন পর্যন্ত আবাহনীর সাথে সমান তালে এগিয়ে চলছে। আমাদের পয়েন্ট সমান, রান রেটে একটু তফাৎ আছে। ক্রিকেট খেলা তো, দিন শেষে বলা খুব কঠিন।
“মিরপুরে শেষ ম্যাচে দেখেছি, মোহামেডান এত বড় স্কোর (৩২৪) করেও ডিফেন্ড করতে পারেনি (শাইনপুকুরের সঙ্গে)। আবার গাজী গ্রুপ (কম) রান করেও ডিফেন্ড করেছে। আশা করি কালকের ম্যাচে ব্যাটিং বোলিং ও ফিল্ডিংয়ের তিন বিভাগেই ডিসিপ্লিন পারফর্ম করবে তারাই জিতবে।”
অন্যদিকে রূপগঞ্জের সঙ্গে ম্যাচটাকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছেন আবাহনী কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন, “রূপগঞ্জের সাথে আমরা আপাতত শীর্ষে আছি। কালকের ম্যাচটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ আমাদের জন্য। কাল যে জিতবে তারা টেবিলে এগিয়ে যাবে। এরপরেও সুপার লিগে পাঁচ-ছয়টি ম্যাচ থাকবে, তবে কালকের ম্যাচটি আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্যই আমরা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য দল বানিয়েছি।
“কাগজে কলমে আমরা অনেক শক্তিশালী অবশ্যই। তবে রূপগঞ্জ অনেক ভালো ক্রিকেট খেলছে। সুতরাং প্রতিটি খেলাই গুরুত্বপূর্ণ। আমি বিশ্বাস করি যে আমরা অনেক ভালো দল। আমরা ম্যাচ জেতার কথা চিন্তা করতেই পারি। আমরা যদি আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারি এবং সব খেলোয়াড় যদি ঠিক মতো ক্লিক করে তাহলে আবাহনী অনেক শক্তিশালী দল আমি মনে করি।”
এমনিতে ব্রাদার্স ইউনিয়নের সঙ্গে ১৪ রানের ব্যবধান বাদ দিলে আবাহনী শেষ ম্যাচের আগ পর্যন্ত প্রতিটি জিতেছে বেশ বড়সড় ব্যবধানেই। শেষ ম্যাচে অবশ্য প্রাইম দোলেশ্বরের সঙ্গে রানতাড়ায় একটু চাপে পড়ে গিয়েছিল তারা। আবাহনীর পারফরম্যান্সটা এখনও ঠিক মনমতো হয়নি সুজনের, “প্রতিদ্বন্দ্বিতা সব ম্যাচেই হচ্ছে আমার মনে হয়। এক দুটি ম্যাচ ছাড়া আমার মনে হয় গত নয়টি ম্যাচের মধ্যে পাঁচ ছয়টিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে। যদিও শেষের দিকে আমরা ভালোভাবে জিতেছি তবে শেষ ম্যাচে আমরা ২২৪ রান তাড়া করতে গিয়ে কঠিন পরিস্থিতিতে ছিলাম, ১৩৫ রানে ৫ উইকেট পড়ে গিয়েছিলো আমাদের। সেখান থেকে অমি (জহুরুল ইসলাম) আর সাইফুদ্দিন দারুণ ব্যাটিং করে ম্যাচ জেতালো। সুতরাং প্রতি ম্যাচেই প্রতিদ্বন্দ্বীতা হচ্ছে। কঠিন হচ্ছে। এটি আসলে ভালো, চ্যালেঞ্জ নিতে পারছি আমরা, চ্যালেঞ্জটা ভালো আসছে। তবে একসাথে আবাহনীর সকলের যেমন পারফর্ম করার কথা তেমনটি হচ্ছে না।”
সুজনের এই চাওয়াটা পূরণ হলে অবশ্য চ্যালেঞ্জটা বেশ বড়ই হতে যাচ্ছে রূপগঞ্জের জন্য। তবে আবাহনীকে হারাতে প্রাইম ব্যাংকের কাছ থেকেই অনুপ্রেরণা খুঁজছেন নাফীস, “প্রাইম ব্যাংক তো হারিয়েছে। কোনো দলকে হারানোই অসম্ভব না। ক্রিকেট খেলা, দিন শেষে ব্যাটে বলে খেলা হবে। কাগজ কলমে অনেক কিছুই হিসাব করতে পারি। অবশ্যই আবাহনী এমন একটা দল যাকে আপনার অবশ্যই শ্রদ্ধা করে খেলতে হবে। তাদের হিসেবের বাইরে রাখতে পারবেন না। যেটা বললাম, যারা ডিসিপ্লিনড পারফরম্যান্স করবে তারাই জিতবে।”