• " />

     

    স্বস্তির সিরিজ জয় বাংলাদেশের

    স্বস্তির সিরিজ জয় বাংলাদেশের    

    সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ বাংলাদেশ ২৪১/৯ (ইমরুল কায়েস ৭৬, নাসির হোসেন ৪১; পানিয়াঙ্গারা ৩/৪১); জিম্বাবুয়ে ১৮৩/১০, ৪৩.২ ওভার (এল্টন চিগুম্বুরা ৪৭, সিকান্দার রাজা ৩৩; মুস্তাফিজ ৩/৩৩, আল-আমিন ২/২২, নাসির ২/৩৬)

     

    ফলঃ বাংলাদেশ ৫৮ রানে জয়ী।

     

    ম্যাচসেরাঃ ইমরুল কায়েস (বাংলাদেশ)

     

    দু’জনের কেউই দলে নিয়মিত নন, প্রথম একাদশ এমনকি স্কোয়াডেই জায়গা ফিরে পেয়েছেন বদলি হিসেবে। সেই ‘বদলি’ দু’জনই আজ বাংলাদেশের কুড়িতম একদিনের আন্তর্জাতিক সিরিজ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখলেন; ব্যাট হাতে ইমরুল কায়েস, বল হাতে আল-আমিন হোসেন। প্রথম সারির ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার দিনে বাংলাদেশের সংগ্রহটা ভদ্রস্থ হয়েছিল কায়েসের ব্যাট থেকে আসা ৭৬ রানে। ফিল্ডিংয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুটো ক্যাচও নিয়ে ম্যাচসেরা তিনিই। আর ২৪২ রানের জয়ের লক্ষ্যটা এক পর্যায়ে প্রায় ‘সম্ভব’ বানিয়ে ফেলা সেই চিগুম্বুরা-রাজা জুটির ক্যাচ দুটো বানিয়ে দিয়ে ঘরের মাঠে টাইগারদের টানা পঞ্চম ওয়ানডে সিরিজ জয়টা কার্যত নিশ্চিত করেন আল-আমিনই।

     

     

    নবজাতক কন্যার মুখদর্শনে গতকালই উড়াল দিয়েছেন আগের ম্যাচের নায়ক সাকিব আল হাসান। তাঁর বদলি হিসেবে বিশ্বকাপের পর প্রথমবারের মতো লাল-সবুজ জার্সি গায়ে তোলার সুযোগ পান ইমরুল কায়েস। অলরাউন্ডারের বদলি ওপেনিং ব্যাটসম্যান? ভুরু কুঁচকেছিলেন অনেকেই। কিন্তু সাকিবের মতো বলের হাত না থাকলেও ব্যাটিং দিয়েই পুষিয়ে দিয়েছেন ইমরুল। অপর প্রান্তে সতীর্থদের আসাযাওয়ার মিছিল দেখতে দেখতেই তুলে নেনে ক্যারিয়ারের একাদশ অর্ধশতক। শন উইলিয়ামসের প্রলোভনে না ভুললে হয়তো পেয়ে যেতেন দ্বিতীয় ওডিআই শতকটাও। ৩২তম ওভারের প্রথম বলে উইলিয়ামসে লং অন দিয়ে উড়িয়ে সীমানা ছাড়া করেছিলেন। পরের ফুল টস ডেলিভারিটাও ভাসিয়ে দিলেন। কিন্তু এ যাত্রায় লং অফে ক্রেমারের তালুবন্দী হয়ে প্যাভিলিয়নের পথে হাঁটতে হল। ৮৯ বল মোকাবেলায় ৭৬ রানের ইনিংসটি সাজিয়েছিলেন ৪টি ছয় ও ৬টি চারে।

     

     

    তিন নম্বরে বরাবরের মতোই ব্যর্থ লিটন। আগের ছয় ম্যাচ থেকে করেছিলেন ১০০ রান, আজ পানিয়াঙ্গারার লেগ সাইডের বাইরের বল ব্যাতের কানা ছুঁইয়ে কিপারের গ্লাভসবন্দী করার আগে করলেন মোটে ৭ রান। ব্যাট হাতে অবশ্য ব্যর্থ ছিলেন তামিম, মাহমুদুল্লাহ, মুশফিকরাও। সফলতম ইমরুল যখন ফিরে যান স্কোরবোর্ডে রান ৫ উইকেটে ১৫৫। শেষবেলায় অবশ্য নাসিরের ৪১ আর সাব্বিরের ৩৩ রানের সুবাদে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে স্কোরবোর্ডে ২৪১ রান তুলতে সক্ষম হয় মাশরাফি বাহিনী।

     

    ‘চ্যালেঞ্জিং’ পুঁজিতে জিম্বাবুয়েকে আটকে রাখার অভিযানে শুর থেকেই সাফল্যের পরিচয় দিতে থাকেন বাংলাদেশের বোলাররা। পঞ্চম ওভারে সানিকে আক্রমণে এনে ঘূর্ণি বলেই উইকেট পতনের সূচনা করান মাশরাফি। পরের ওভারে নিজেই ফেরান আরেক ওপেনার চামু চিবাবাকে। মুস্তাফিজের অফ কাটারে নাসিরের দক্ষ হাতে উইলিয়ামস আর লিটনের নজরকাড়া থ্রোতে আরভিন সাজঘরের পথে হাঁটলে ৭৮ রানেই চতুর্থ উইকেট খোয়ায় সফরকারীরা।

     

    অবশ্য অধিনায়ক এল্টন চিগুম্বুরা ও সিকান্দার রাজার গাঁটছড়ায় পঞ্চম উইকেট জুটিতে ভালোই জবাব দিতে শুরু করে জিম্বাবুয়ে। ৯৭ বলে ৯১ রানের একটি কার্যত সহজ সমীকরণও এক পর্যায়ে দাঁড়িয়ে যায়।

     

     

    দিনের দ্বিতীয় নায়ক আল-আমিনের আবির্ভাব ওখানেই। পরপর দু’ ওভারে ফিরিয়ে দেন রাজা (৩৩) ও চিগুম্বুরাকে (৪৭)। যথাক্রমে মিড অন আর থার্ড ম্যনে দু'জনকে তালুবন্দী করেন ইমরুল কায়েস। বাকি চারটি উইকেট নাসির-মুস্তাফিজরা ভাগাভাগি করে নেন ৫৮ রানের ব্যবধান ধরে রেখে।

     

    সাকিবের কন্যালাভের খবরটা চাউর হয়ে গেছে সাত সকালেই। কুড়িতম একদিনের সিরিজ জয়ে দিনের শেষটাও রঙিন হয়ে থাকলো বাংলাদেশের জন্য।