• " />

     

    জয়ের দেখা পেলো জিম্বাবুয়ে

    জয়ের দেখা পেলো জিম্বাবুয়ে    

    সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ বাংলাদেশ ১৩৫/৯, ২০ ওভার (এনামুল ৪৭, তামিম ২১; পানিয়াঙ্গারা ৩/৩০, ক্রেমার ২/২১, মাদজিভা ২/২৫); জিম্বাবুয়ে ১৩৬/৭, ১৯.৫ ওভার (ওয়ালার ৪০, জংউই ৩৪, মাদজিভা ২৮*; আল-আমিন ৩/২০)

     

    ফলঃ জিম্বাবুয়ে ৩ উইকেটে জয়ী

     

    ম্যাচ সেরাঃ নেভিল মাদজিভা (জিম্বাবুয়ে)

     

    সিরিজ সেরাঃ ম্যালকম ওয়ালার (জিম্বাবুয়ে)

     

    হাতে ২ বল, প্রয়োজন ৬ রান। ব্যাট হাতে তরুণ নেভিল মাদজিভার হাতে কি অসুরের শক্তি ভর করেছিল? যতোটা তেজের সাথে কুড়িতম ওভারে নাসিরের পঞ্চম বলটা বিশাল উচ্চতায় উঠিয়ে সীমানার বাইরে আছড়ে ফেললেন, এরপর ঠিক ততোটাই তেজোদ্দিপ্ত কণ্ঠের হুঙ্কারে যেন থামিয়ে দিতে চাইলেন মিরপুরের গর্জন। রোমাঞ্চকর টিটোয়েন্টি ম্যাচটি তাঁর দল ততক্ষণে জিতে গেছে এক বল আর ৩ উইকেট হাতে রেখে।  বল হাতে দুটো গুরুত্বপূর্ণ উইকেটের পর ব্যাট হাতে অন্তিম মুহূর্তে ২৮টি মূল্যবান রান নিয়ে ম্যাচসেরা ওই মাদজিভা-ই।

     

     

    ১৩৬ রানের আপাত সহজসাধ্য লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমেও শুরুতেই দুই উইকেট খুইয়ে বিপাকে পড়ে সফরকারীরা। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে পরপর দু’ বলে সিকান্দার রাজা আর শম উইলিয়ামসকে ফিরিয়ে দেন দিনের সেরা বাংলাদেশী পারফর্মার আল-আমিন হোসেন। পঞ্চম ওভারে প্রথমবারের মতো আক্রমণে এসে চাকাভাকেও ফিরিয়ে জিম্বাবুয়ের জন্য লক্ষ্যটা কঠিনই করে তোলেন মুস্তাফিজুর রহমান। নিয়মিত বিরতিতে এরভিন-চিগুম্বুরাদের হারিয়ে একসময় জিম্বাবুয়ের স্কোরবোর্ডে রান দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ৩৯।

     

    ম্যাচে প্রায় হারিয়ে বসা নিয়ন্ত্রণ অতিথিরা ফিরে পায় ওয়ালার-জংউই জুটির বায়ে চড়ে। ৪৫ রানের জুটিটা ভাঙেন ওয়ানডের পর টিটয়েন্টি সিরিজজুড়েও দলকে একের পর এক ব্রেক থ্রু দিয়ে যাওয়া আল-আমিন হোসেন।

     

     

    জংউই ব্যক্তিগত ৩৪-এ ফিরে গেলেও ওয়ালার অপরাজিত থেকে রানের চাকা ঘুরিয়ে যান। আগের ম্যাচে জিম্বাবুয়ের হয়ে টিটোয়েন্টিতে দ্রুততম অর্ধশতক হাকানো এই অলরাউন্ডার আজও ৪০ রান করে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন।

     

     

    শেষভাগে ২ ওভারে জিম্বাবুয়ের প্রয়োজন থাকে ২৪ রানের। মুস্তাফিজের প্রথম দুই বলে ওয়ালার ৫ রান তুলে নেয়ার পর শেষ চারটি বলই ডট দেন মাদজিভা। এর মধ্যে একটি বল তাঁর ব্যাটের কানা ছুঁয়ে মুশফিকের গ্লাভসে জমা হলেও ‘স্টেপ নো’-র কারণে সে যাত্রায় বেঁচে যান এই তরুণ। আর সেটাই কাল হয়ে দাঁড়ায় বাংলাদেশের জন্য। ৬ বল, ১৮ রান- এই সমীকরণের সামনে দাঁড়িয়ে শেষ ওভারের প্রথম বলে নাসিরের করা অফসাইডের বেশ বাইরের ডেলিভারি টেনে মারতে গিয়ে লং অনে সাব্বিরের তালুবন্দী হন ওয়ালার।

     

    টেল এন্ডাররা ৫ বলে ১৮ তুলে নিতে পারবেন না- এমন আশ্বাসে যারা সান্তনা খুঁজছিলেন তাঁদের আশায় গুড়ে বালি দিয়ে পরের বলে নাসিরের একই রকম ডেলিভারি কাভারের উপর দিয়ে সীমানাছাড়া করেন মাদজিভা। পরবর্তী বলে দু’ রান নিয়ে চতুর্থ বলে নাসিরের আরও একটি ওয়াইড ডেলিভারি থার্ড ম্যাণের ফাঁকা অঞ্চল দিয়ে চার আদায় করে নেন এই তরুণ। বাকি দুই বলের গল্পটা শুরুতেই করা হল।

     

    এর আগে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে তামিম-ইমরুলের ব্যাটে দুরন্ত সূচনাই করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু দলীয় ৩৪ রানে বাংলাদেশ শিবিরে প্রথম আঘাতটা হানেন দিনের নায়ক ওই মাদজিভাই। ২১ রান করে তামিম ফিরে যান লং অনে চিগুম্বুরার হাতে সহজ ক্যাচ দিয়ে। পরের ওভারে চিশোরোর বলে ইমরুলের স্কয়ার ড্রাইভ দুর্দান্ত এক ক্যাচে তালুবন্দী করেন উইলিয়ামস। এরপর একপ্রান্ত আগলে এনামুল হক খেলে গেলেও অপর প্রান্তে ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়ার মিছিল অব্যাহত থাকে। ইনিংসের দু’ বল বাকি থাকতে রান আউট হয়ে এনামুল ফেরেন ব্যক্তিগত ৪৭ রান নিয়ে।

     

     

    মাঝে কেবল সাব্বির রহমান ১৭ রান নিয়ে এনামুলের সাথে ৩৯ রানের জুটি গড়লেও বাকিরা কেউই রানের খাতায় দু’ অংক ছুঁতে পারেন নি। কাভারে মাহমুদুল্লাকে অসাধারণ ক্যাচে ফেরান জংউই। আর দারুণ এক ডেলিভারিতে মাশরাফির অফ স্ট্যাম্প উড়িয়ে দিন মাদজিভা। ‘গোল্ডেন ডাক' নিয়ে সাজঘরে ফেরেন বাংলাদেশ ক্যাপ্টেন। অবশ্য 'গোল্ডেন' না হলেও প্রতিপক্ষ অধিনায়ক চিগুম্বুরাও আজ ফিরে গেছেন 'ডাক' নিয়ে, মাশরাফির চেয়ে মাত্র এক বল বেশী খেলে।