কান্নাভেজা চোখেই তাসকিন বললেন, নিজের কাজটা করে যাবেন
এমনিতে হাসিটা তার মুখে লেগেই থাকে। পরিচিতমহলে আলাপী ও মিশুক হিসেবে পরিচিত। তবে আজ যেভাবে ভেঙে পড়লেন, তাতে বোঝা গেল আঘাতটা কত বড় হয়ে এসেছে তাঁর জন্য। দুই ফোঁটা অশ্রু আর মিনিটখানেকের কথায়ও তেমন কিছু না বলেও বলে দিলেন অনেক কিছু।
আরও পড়ুন... ফিটনেসের জন্যই সুযোগ হলো না তাসকিনের
বিশ্বকাপ দলের স্বপ্নটা তাঁর কাছে কতটা বড়, বলছিলেন সেদিনই। চোট থেকে ফিরেই তাই খেলেছেন প্রিমিয়ার লিগে। বিপিএলে ফর্মেই যেহেতু ছিলেন, এবারও মনের কোথাও হয়তো উঁকি দিচ্ছিল বিশ্বকাপের স্বপ্ন। কিন্তু আলোচনায় থেকেও শেষ পর্যন্ত দলে আর সুযোগ পেলেন না, নিয়তি তাঁকে ছিটকে দিল বিশ্বকাপ থেকে।
আজ মিরপুর অ্যাকাডেমির সামনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের সামনে তাই ভেঙেই পড়লেন তাসকিন। ধরা গলায় কোনোমতে শুধু বলতে পারলেন, ‘না, আসলে... (গলা ধরে এলো)। ঠিক আছে, চেষ্টা করব। বলার কিছু নাই। আমি ফিট হব। আমার কাজ করে যাব।’
অথচ গত বিশ্বকাপেও তিনি বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি উইকেট নিয়েছিলেন। সেদিক দিয়ে তাঁর কি নিজেকে কিছুটা দুর্ভাগা মনে হয় না? তাসকিনের বাষ্পরুদ্ধ কন্ঠে দুই লাইনই বলে দিল, স্বপ্নটা কীভাবে দুমড়ে মুচড়ে গেছে তাঁর, ‘না, ঠিক আছে, যেটা ভালো হয়। সবাই তো ভালোই চায়, খারাপ চায় না কেউ। সামনে তো সুযোগ আছে, চেষ্টা করে যাব। সুপার লিগ খেলব, ওখানে ভালো করার চেষ্টা করব। সবাই যেটা ভালো মনে করেছে ওটাই করেছে।’
তাসকিনের আজকের কান্না মনে করিয়ে দিল আট বছর আগের এক দিন। মিরপুর একাডেমিতে সেদিন আজকের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার কান্না সংক্রমিত হয়েছিল সবার মাঝে। সেই মাশরাফির বয়স ছিল তখন ২৭, বাদ পড়ার খবর শুনেও সবার সঙ্গে খুনসুটি করছিলেন শুরুতে। কিন্তু সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নিজের আবেগটা সামলাতে পারলেন না আর। কান্নাভেজা গলাতেই বলেছিলেন, ক্রিকেট ক্যারিয়ারে এমন খারাপ দিন কখনো আসেনি তাঁর। স্বীকার করেছিলেন, বাদ পড়বেন ককনো ভাবেননি।
এরপর আট বছর চলে গেছে। সেই প্রসঙ্গ অনেক বার এলেই মাশরাফি বলেছেন, সেই দুঃস্মৃতি ভুলতে পারেননি এখনো। তবে শোককে শক্তিতে পরিণত করে ঠিকই খেলছেন এখনো, ৩৫ বছর বয়সে এবার খেলবেন নিশ্চিতভাবেই শেষ বিশ্বকাপ। তাসকিনের বয়স ২৪, হিসেবে এখনো পড়ে আছে বেশ কিছুটা সময়। তবে বিশ্বকাপে থাকতে না পারার ক্ষতে সেটা কি আর সান্ত্বনার প্রলেপ হতে পারে?
ছবি: তাসকিনের ফেসবুক পেজ।