নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ যুক্তরাষ্ট্রের মেয়েদের
৭৯ মিনিটে দর্শকদের তুমুল হর্ষধ্বনি এবং অভিবাদনের মাঝে উঠে গেলেন তিনি। দ্বিতীয়ার্ধে উৎসবের শুরুটা করেই রেখেছিলেন ৩৪ বছর বয়সী যুক্তরাষ্ট্র অধিনায়ক মেগান রাপিনো। ম্যাচের মিনিট তিনেক বাকি থাকতে নামলেন ৩৬ বছর বয়সী কার্লি লয়েড, চার বছর আগে যিনি তার হ্যাটট্রিকেই তৃতীয়বারের মত বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। রাপিনো বা লয়েড- মেয়েদের ২০২৩ বিশ্বকাপে হয়তো থাকবেন না কেউই। ফ্রান্সেই হয়তো শেষ বিশ্বকাপটা খেলে ফেললেন দুজনই, শেষটাও করে রাখলেন স্মরণীয়। নেদারল্যান্ডসকে ২-০ গোলে হারিয়ে চতুর্থবারের মত বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হল যুক্তরাষ্ট্র।
এবারের বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি বয়সী দল ছিলেন রাপিনো-মরগানরাই। মেয়েদের ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসরে প্রমাণ মিলেছে সেই অভিজ্ঞতার। তরুণ ডাচদের বিপক্ষে গতি বা স্ট্যামিনায় কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও ট্যাকটিক্স এবং স্নায়ুযুদ্ধে ঠিকই জিতেছে যুক্তরাষ্ট্রের মেয়েরা। আক্রমণ, পাল্টা আক্রমণে ঠাসা প্রথমার্ধে গোলের চেষ্টা করে গেছে দু'দলই, কিন্তু লিডটাই আর নেওয়া হয়নি। দু'দলের রক্ষণভাগও ছিল দারুণ ফর্মে। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে সেই রক্ষণের ভুলেই পিছিয়ে পড়ে ডাচরা।
৬০ মিনিটে ডিবক্সে বল ক্লিয়ার করতে যেয়ে অ্যালেক্স মরগানের মুখে লাথি মেরে বসেন ডাচ ডিফেন্ডার ভান ডে গ্রাট। প্রথমে যুক্তরাষ্ট্রের আবেদনে সাড়া না দিলেও 'ভিএআর'-এর সাহায্যে পেনাল্টির বাঁশি দেন রেফারি। ১২ গজ থেকে দলকে লিড এনে দিতে ভুল করেননি অধিনায়ক রাপিনো। এবারের বিশ্বকাপে গোল্ডেন বুটের দৌড়ে মরগানের সমান ৬ গোল এখন রাপিনোর। পুরো ম্যাচ দারুণ খেলা যুক্তরাষ্ট্র লিড নিয়েই ম্যাচের দখল নিজেদের করে নেয়। ৮ মিনিট পরই ডাচদের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে হ্যাটট্রিক শিরোপা নিশ্চিত করেন রোজ লাভেল।
৬৯ মিনিটে মেউইসের পাস থেকে দুর্দান্ত একক প্রচেষ্টায় ডাচ গোলরক্ষক সারি ভ্যান ভিনিনদালকে পরাস্ত করেন লাভেল। মাঠে একপাশে লেকি মার্টিনসদের শূন্য দৃষ্টি, অন্যদিকে রাপিনোদের বুনো উল্লাস- পুরো ম্যাচের গল্প বলতে যেন এই এক খণ্ডচিত্রই যথেষ্ট। শেষদিকে নেদারল্যান্ডস আক্রমণে গেলে প্রতি-আক্রমণে বেশকিছু সুযোগ পেয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র, কিন্তু লিডটা আর বাড়ানো হয়নি তাদের। কিন্তু সেজন্য ভুগতেও হয়নি তাদের। দ্বিতীয়ার্ধের অতিরিক্ত পাঁচ মিনিটের খেলা শেষে রেফারির বাঁশিতে নিশ্চিত হয় যুক্তরাষ্ট্রের চতুর্থ বিশ্বকাপ শিরোপা। মরগানের সমান ৬ গোল হলেও কম ম্যাচ খেলায় গোল্ডেন বল জিতে নেন রাপিনো, সিলভার বল জেতেন মরগান। ফাইনালে গোল করা লাভেলের ঝুলিতে গিয়েছে ব্রোঞ্জ বল। রানার্স আপ হওয়া ডাচদের গোলরক্ষক ভিনিনদাল জিতেছেন গোল্ডেন গ্লাভস। একমাত্র কোচ হিসেবে মেয়েদের ফুটবলে দু'বার বিশ্বকাপ জিতলেন জিল এলিস।